ইরানের মেয়েরা প্রকাশ্যে বিশেষ করে পুরুষের উপস্থিতিতে সাঁতার কাটা বা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার অনুমতি পাননা। ক্যানাডার টরেন্টোতে একটি নাটক প্রদর্শিত হচ্ছে যার নাম-সুইম টীম। এ নাটকের চরিত্রগুলো তাদের কল্পনাকে ব্যবহার করেছেন সীমাবদ্ধতার দেয়াল ভাঙ্গার প্রয়াস হিসেবে।
একটি মঞ্চ নাটক। যার উপজীব্য বিষয় ইরানী নারীদের সাঁতার। ঠিক সাঁতার বলা ঠিক হবেনা। সাঁতারের স্বপ্ন বলা যায়।
কারণ টরেন্টোতে এই নাটকে তুলে ধরা হচ্ছে বা হবে ইরানি মেয়েরা কিভাবে স্বাধীনতার জন্য স্বপ্ন দেখে।
কিন্তু এই স্বপ্ন দেখা যে কতটা কঠিন সেটিই উঠে এসেছে নাটকটির একজন অভিনেত্রী বানাফশে তাহেরিয়ান এর কথায়।
তিনি বলছেন, “আমরা ইরানের মেয়েরা সবসময় লড়াই করছি। এমনকি আমাদের কল্পনাতেও। এমনকি যখন আমরা কিছু কল্পনা করতে চাই তখনও সাফল্য অর্জন করতে কিংবা যা স্বপ্ন দেখি সেটির জন্য চেষ্টা করতেও। অনেক সময়ই আমাদের লড়াই করতে হয়”।
নাটকটির মঞ্চায়ন চলছিলো যেখানে তিন অভিনেত্রীকে পরিচালক নানা নির্দেশনা দিচ্ছিলেন।
সুইম টিম নামের এ নাটকটিতে একদল ইরানি নারী অভিনয় করেছেন যেখানে তারা সাঁতার শিখতে চান।
রয়া এর প্রধান চরিত্র। কল্পনায় তিনি একটি সুইমিং পুল বানাচ্ছেন যেখানে তার দলকে সাঁতার শেখাবেন। নাটকটির আরেকজন অভিনেত্রী পারিয়া তাহসিনি।
“তারা একটি নদী উপত্যকায় বাস করেন কিন্তু সেখানে কোনো পানি নেই। সুতরাং তারা সবকিছুই কল্পনা করে নেন। তারা পানি কল্পনা করেন। কল্পনা করেন যে সেখানে একটি পুল আছে। এরপর তারা সাঁতার শুরু করেন এবং শেখেন সেখানেই”।
তিনি বলেন এক পর্যায়ে তারা অনুধাবন করেন যে তারা আসলে তাদের দেশের জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য একটি সাঁতার দল তৈরি করতে চান। কিন্তু এই কল্পনাতেও চলে আসে বাধা। কারণ তাদের তো আসলে হিজাব পড়তে হবে।
নাচের মতো ইরানের নারীরা প্রকাশ্যে সাঁতারেও অংশ নিতে পারেননা, বিশেষ করে পুরুষের উপস্থিতি থাকলে সেটি একেবারেই অসম্ভব। ইরানের একটি নারী সাঁতার দল আছে কিন্তু তারা বিদেশে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি পাননা।
পারিয়া তাহসিনি বলছেন তার চরিত্র হলো কল্পনা করা ও বিশ্বাস করা যে সেখানে পানি আছে যে আসলে শেষ পর্যন্ত সেখানে ডুবতে হবে”।
নাটকটির পরিচালক আইডা কেইখাই বলছেন ইরানি মেয়েদের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করা কেন তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
“এই নাটকটি পরিচালনা করা আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা ইরানের নারীদের জন্য, তাদের সীমাবদ্ধতা ও স্বাধীনতা নিয়ে এবং ইরানে এখন মেয়েদের যে আন্দোলন সেখানেও এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ”।