বাংলাদেশের মানুষ কি অসুখী হয়ে উঠছে?

Date:

Share post:

২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে এ রিপোর্ট করা হয়।

সুখী হতে কে না চায়? এই সুখের খোঁজেই মানুষের জীবন অতিবাহিত হয়।

কিন্তু তারপরেও সবাই সুখী হতে পারে না।

সুখের সংজ্ঞাও একেক জনের কাছে একেক রকম।

জাতিসংঘের উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় পৃথিবীর কোন দেশ কতটা সুখী সেটি দেখানো হয়েছে।

সে প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৫৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশর অবস্থান ১১৫তম।

সবচেয়ে সুখী দেশ ফিনল্যান্ড। এবং সবচেয়ে কম সুখী আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডি।

গতবছর এ তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১০ নম্বরে। কিন্তু এবার সেটি পাঁচ ধাপ নিচে নেমেছে।সুখী হওয়ার পাঁচটি উপায়: অধ্যাপকের পরামর্শ রাগ এবং ঘৃণার প্রকাশ মানুষকে সুখী করে!

জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক এ তালিকা তৈরি করেছে।

সেখানে বেশ কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা হয়। যেমন – মাথাপিছু আয়, সুস্থভাবে বেঁচে থাকার আয়ু, সামাজিক সহায়তা, উদারতা এবং দুর্নীতি।

২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘ এ তালিকা তৈরি করে আসছে।

বাংলাদেশের অবস্থান তখন থেকে গত ছয় বছরে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৮ থেকে ১১০-এর মধ্যেই ছিল।

সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন সুখের নির্দিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই।

সুখ সম্পর্কে একটা ধরনা করা যেতে মাত্র।

তাদের দৃষ্টিতে সুখের দুটি দিক আছে। একটি মানসিক আরেকটি সামাজিক।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ কি আরো অসুখী হয়ে উঠছে?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক শাহ এহসান হাবিব মনে করেন, বাংলাদেশের মানুষের চাওয়া এবং পাওয়ার মধ্যে যে এক ধরনের ফারাক তৈরি হচ্ছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।

প্রযুক্তির বিকাশের কারণেই এ অবস্থা তৈরি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন।

অধ্যাপক হাবিব বলেন, ” প্রযুক্তি বিকাশের কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করতে শিখেছে। ফলে অনেক সময় তাদের মনে এক ধরনের হতাশারও তৈরি হচ্ছে। তাঁরা জানতে পারছে অন্যরা কী পাচ্ছে আর আমরা কী পাচ্ছি?”

বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে যে কোন মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, ” কেমন আছেন?” অধিকাংশ মানুষ উত্তর দেবে, ” ভালো আছি।”

অধ্যাপক হাবিব মনে করেন, ” এ ভালো মানে আসল ভালো নয়। এটা হচ্ছে সামাজিকভাবে কথা বলার একটি ধরণ। মানুষ সাধারণত নিজের নেতিবাচক বিষয়গুলো সবার সাথে শেয়ার করতে চায় না। সে নিজেকে ইতিবাচক-ভাবে তুলে ধরতে চায়। সেজন্য সবাই বলে, ভালো আছি।”

এমনিতেই বাংলাদেশের মানুষের সহ্য শক্তি অনেক বেশি বলে মনে করে এই সমাজবিজ্ঞানী।

অধ্যাপক হাবিব বলেন, কিন্তু আর্থিক মানদণ্ডের চেয়েও তাঁদের কাছে বড় বিষয় হচ্ছে, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, শিক্ষা , চিকিৎসার সুযোগ- এগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ।হকিং দেখিয়েছিলেন অচল শরীর কোন সমস্যা নয়’পরিবার চায়নি একমাত্র সন্তান পাইলট হোক’

সাপ্রতিক সময়ে বাক স্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

যার অর্থনৈতিক ভিত্তি ভালো তাঁর কাছে বাক স্বাধীনতা এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠে।

” উচ্চবিত্তের চাহিদা এক রকম, মধ্যবিত্তের কিংবা নিম্নবিত্তের চাহিদা আরেক রকম। সুতরাং সুখের একটি শ্রেণী চরিত্র আছে,” বলেন অধ্যাপক হাবিব।

সময়ের সাথে সাথে মানুষের সুখের চাহিদায় রকমফের হয়।

১০ বছর আগে যে বিষয়গুলো বাংলাদেশের মানুষকে সুখী করতে পারতো, এখন হয়তো সেগুলো আর পারছে না।

এখন সুখের জন্য আরো নতুন উপকরণ যুক্ত হয়েছে। এমনটাই বলছেন সমাজ বিজ্ঞানীরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...

চিত্র নায়িকা নিপুণ চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। জানা গেছে,...