লুনা লায়লার নামের পাশে কোনো বিশেষণের প্রয়োজন পড়ে না। তারপরও ‘নন্দিত’, ‘খ্যাতিমান’, ‘দেশবরণ্যে’, ‘বিশ্বখ্যাত তারকা’-এই শব্দগুলো তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে।কণ্ঠের জাদুতে শ্রোতার কাছে সব সময় তিনি চিরনতুন, চিরতরুণ।এক জীবন ধূপের মতো গন্ধ বিলিয়ে চলেছেন তিনি। গত শতাব্দীর ষাটের দশকে যাত্রা শুরুর পর এই শিল্পী এখনও তুলনারহিত ছড়িয়ে যাচ্ছেন কণ্ঠের মায়াজাল। আন্তর্জাতিক খ্যতিসম্পন্ন এ শিল্পীর জন্মদিন আজ শুক্রবার। ১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এমদাদ আলী ও আমিনা লায়লা দম্পতির আদরের কন্যা রুনা লায়লার ছোটবেলার প্রতিটি জন্মদিনই ছিল স্মরণীয়। ছোটবেলায় মা ও বড় বোন দীনা লায়লার দেওয়া নতুন জামা পরে জন্মদিন কাটত তার। জন্মদিন এলেই এখনও শৈশবের সেই স্মৃতির কথা মনে পড়ে তার।রুনা লায়লা শৈশবে নাচের তালিম নিলেও পরে সঙ্গীতে স্থায়ী হন। গজলে দীক্ষা নেন বিখ্যাত গায়ক মেহেদী হাসানের ভাই গোলাম কাদিরের কাছে। তার অন্য ওস্তাদেরমধ্যে রয়েছেন হাবিবুদ্দিন খান। বোন দীনা লায়লার অসুস্থতাজনিত কারণে একটি কনসার্টে বাধ্য হয়ে মাত্র ৬ বছর বয়সে গান গেয়েছিলেন। সাড়ে ১১ বছর বয়সে পাকিস্তানের ‘জুগনু’ ছবির মাধ্যমে প্লেব্যাক শিল্পীদের খাতায় নাম লেখান তিনি। এর পর আর পেছন ফিরেতাকাতে হয়নি। ৫৪ বছরের সঙ্গীত জীবনে ১০ সহস্রাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। সব ধরনের গানে তিনি সাবলীল।বাংলার পাশাপাশি হিন্দি, উর্দু, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, গুজরাটি, বালুচি, অ্যারাবিক, ফারসি, মালয়, নেপালিজ, জাপানিজ, ইতালিয়ান, স্প্যানিশ, ফ্রেন্স ও ইংরেজি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। শুধু গান নয়; তার সাজসজ্জা, পোশাক, গায়কী ঢং থেকে শুরু করে সবকিছুকে অনুসরণীয় মনে করেন নানা প্রজন্মের অনুসারীরা।চলচ্চিত্রের গান গেয়ে তিনি এখন পর্যন্ত ছয়বার জাতীয়চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৭৭ সালে আবদুললতিফ বাচ্চু পরিচালিত ‘যাদুর বাঁশী’ চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করার জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন।দেবু ভট্টাচার্য্যের সুরে করাচি রেডিওতে একটি বিশেষঅনুষ্ঠানে প্রথম রুনা লায়লার কণ্ঠে বাংলা গান শোনা যায়- ‘নোটন নোটন পায়রাগুলো’, ‘আমি নদীর মতো কতো পথ পেরিয়ে’ ইত্যাদি। তবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে রুনা লায়লা প্রথম প্লেব্যাক করেন ১৯৭০ সালে ‘স্বরলিপি’ চলচ্চিত্রে সুবল দাসের সুর-সঙ্গীতে ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে বলো কী হবে’ গানের মাধ্যমে।পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আসার পর ১৯৭৬-এ প্রথম প্লেব্যাক করেন নূরুল হক বাচ্চুর ‘জীবন সাথী’ চলচ্চিত্রে। এর সুর-সঙ্গীত করেছিলেন সত্য সাহা। রুনা লায়লার সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গেয়েছিলেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। এখন পর্যন্ত ১০ সহস্রাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। ১৮টি ভাষায় গান গাইতে পারেন রুনা লায়লা, যা বিশ্বসঙ্গীতে বিরল।
Related articles
ফিচার
নির্বাচনসহ তিন ইস্যুতে রোডম্যাপের আহ্বান এনসিপির
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জুলাই ঘোষণাপত্রের পাশাপাশি বিচার, সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক...
ফিচার
সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলল যুক্তরাষ্ট্র
সিরিয়ায় দীর্ঘ ১৪ বছর পর নতুন সরকার গঠনের পর দেশটির ওপর থেকে সব ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে...
ফিচার
সন্ধ্যায় বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে বসবেন প্রধান উপদেষ্টা
উদ্বেগ-উৎকন্ঠা-গুঞ্জনের মধ্যে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যা...
ফিচার
হিন্দু যুগলের বিয়ের অনুষ্ঠানে পাশে দাঁড়াল মুসলিম পরিবার
ধর্মীয় বিভাজনের সময়ে ভারতে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এক হৃদয়স্পর্শী ঘটনার ছবি ও ভিডিও। এতে সম্প্রীতির এক...