মানুষের মূল্যবোধ আজ কোথায় ঠেকেছে ?

    0
    224

    গত দুই দিন হতে ফেসবুকে একটা নিউজ দেখে নিজের চোখের পানি আটকাতে পাচ্ছিনা, গত বুধবার হাতির ঝিল মহানগর প্রকল্পের বাগিচারটেক ৩৫ / বি জায়গাতে একটা মা কুকুর সহ চৌদ্দটা বাচ্চাকে পিটিয়ে আহত করে জ্যান্ত অবস্থায় মাটি চাপা দেয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

    খবর পেয়ে ঢাকার দুটি প্রাণী কল্যাণ সংস্থা কেয়ার ফর পস(সিএফপি) এবং পিপল ফর এ‍্যনিমাল ওয়েল ফেয়ার ফাউন্ডেশন, পুলিশ এবং ভলান্টিয়ার সহ ঘটনাস্থলে যায়। তাদের সহায়তা করেন রামপুরা থানার ওসি।

    এলাকায় গিয়ে দেখতে পান মাটিরচাপা থেকে একটি কুকুরের পা বের হয়ে আছে। পরে মাটি খুড়ে বের করা হয় মা কুকুর সহ নবজাতক ১৪ টি বাচ্চার লাশ। এদের দোষ এরা কুকুর। আর এ যেখানে মানুষ হত্যার বিচার পাওয়া যায়না, সেখানে আবার পশু হত্যার বিচার?

    যদি হাতি, বাঘ হত এক কথা এরাতো কুকুর। এদের জীবন আছে নাকি? মরলে ও কি আর বাচলে ও কি? ১৯২০ সালের প্রাণী নিষ্ঠুরতা আইন আইন এর ৩ ও ৭ ধারা অনুযায়ী কোনো ধরনের পশু পাখিকে বিনা কারণে হত্যা করা বা নির্যাতন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

    কিছুদিন আগে ফেসবুক মারফত জেনেছিলাম এক রোহিংগা পরিবার তার কুকুরকেও বাংলাদেশে নিয়ে পালিয়ে এসেছে মায়ানমার থেকে। আর আমার দেশের জীবদের জীবিত কবর দেওয়া হচ্ছে। না হয় বিষ দিয়ে মারা হচ্ছে।

    অনেক এলাকায় সিটি করপোরেশন এই জঘন্যতম কাজটি মাইকিং করে করছে আর অনেক এলাকায় এলাকাবাসী করছে। কিন্তু কেন?

    কোথায় বলা আছে মাথা ব্যাথা করলে আপনার চিকিৎসা হল আপনার মাথাটা কেটে ফেলতে হবে? এর জন্য কিছু ছোট পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার ফ্রি তে ভ্যাকসিন দিতে পারেন। উনারা যে সব এনিমেল অর্গানাইজেশন আছেন তাদের এরিয়া ভিত্তিক দায়িত্ত দিতে পারেন? এনজিও দের দায়িত্ব দিতে পারেন।

    বিদেশী এনিমেল সোসাইটি থেকেও ফান্ড কালেকশন করতে পারেন। টিভি, মিডিয়া বিভিন্ন জনসচেতনতা মুলুক অনুষ্ঠান, বিজ্ঞাপন নির্মান করতে পারেন। মানুষের মতো সকল প্রাণীরই বেঁচে থাকার অধিকার এ সমাজে আছে। মা কুকুর এবং ১৪টি ছানার মৃতদেহ গুলোকে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার ফুলবাড়ীয়ার সরকারি পশু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

    বাংলাদেশে এই প্রথম বার কোন প্রাণীর মৃত্যুর জন্য ময়না তদন্ত করা হবে। এই মামলার কারনে পশুদের প্রতি নির্দয় আচরন করা অমানুষ গুলোর চোখ এবার খুলবে। এটা কোন মানুষের কাজ না অমানুষের কাজ। সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের উচিত এই জঘন্য কাজ থেকে বিরত থাকা এবং এদের শাস্তি নিশ্চিত করা।

    আসুন আমরা গন সচেতনতা তৈরি করি। এই নির্বাক অসহায় প্রাণীকুলের প্রতি। আর যেন কেউ এইভাবে কোন প্রানী হিংসা কবলিত না হয়। ভাল থাকুক সকল জীব।

    লেখকঃ আয়েশা সোনিয়া

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here