অবৈধ দেহ ব্যবসার অভিযোগে রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামীর ইসলামী ছাত্রীসংস্থার’ ২৩ সদস্যকে গ্রেফতার

Date:

Share post:

রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রী সংগঠন ‘ইসলামী ছাত্রীসংস্থার’ ২৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কদমতলী থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। অভিযানে ৭৫ প্যাকেট কনডম, ২০০টি ইয়াবা, ১৫টি ফেন্সিডিল, যৌন উত্তেজক পানীয়, পর্নো ম্যাগাজিন ও সিডি, জঙ্গিবাদী বই ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়েছে।

জানা গেছে, নাঈমা, ফারজানা ও তানজিনা সহ ছাত্রী সংস্থার প্রায় অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী দেহব্যবসা, ইয়াবা বিক্রি সহ নানা ধরণের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। কদমতলী, গোরান, খিলগাঁও সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে এ চক্রটি অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে এই চক্রটি।

এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ীর কদমতলী এলাকার একটি বাড়িতে প্রতিদিন বহুসংখ্যক নারী-পুরুষের আনাগোনা দেখে এলাকাবাসীর মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক জামায়াত নেতা মোয়াজ্জেম হোসেনকে কয়েকবার অভিযোগ জানানোর পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে স্থানীয় শিবির ক্যাডারদের মাধ্যমে অভিযোগকারীদের হেনস্তা করে। এলাকার পরিবেশ ও সন্তানদের কথা বিবেচনা করে উক্ত এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ওয়ারী বিভাগ) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিনের কাছে অভিযোগ জানায়।

গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে যাত্রাবাড়ীর দনিয়া এলাকার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃত সকলেই ছাত্রী সংস্থার নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তি, মাদক ব্যবসাসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। আটককৃতদের পাঁচজন বেড়াতে এসেছেন বলে দাবি করেছেন।

মামলার এক তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, এ চক্রের সদস্য সংখ্যা দুই শতাধিক। দুই বছর আগে দক্ষিণ গোড়ানের ৬ নম্বর রোডে ‘স্কাইভিউ’ ৩১৬/৪ ভবনের ফ্ল্যাট এ-১ থেকে এ চক্রের ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে গোয়েন্দা বিভাগের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, শাহনাজ ও নাঈমা নামে দুই নারী নেত্রী প্রাথমিকভাবে আর্থিক সহায়তা এবং দামি পোশাক ও রূপচর্চা সামগ্রী উপহার হিসেবে প্রদান করে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ছাত্রী সংস্থার কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করেন। পরবর্তিতে বিলাসবহুল জীবনের লোভে অনেকেই জড়িয়ে পড়ে শাহনাজ-নাঈমার পরিচালিত অপরাধ জগতে।

যাত্রাবাড়ির কদমতলীতে জামায়াত নেতা মোয়াজ্জেমের বাড়ির পাঁচ তলা ফ্ল্যাটটি ১২ জন থাকার উপযোগী হলেও প্রতিদিন রাত অবধি ২৫ থেকে ৩০ জন তরুণী নিয়মিত অবস্থান করে। ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্ত ছাড়াও সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা ও জামায়াত শিবিরের নেতাদের মনোরঞ্জন করা হয়। এছাড়া ১০ থেকে ১৫ জন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা ও ফেন্সডিল সরবরাহ করায় নিয়োজিত রয়েছে। নারী বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখও ফাঁকি দিতে পারে সহজেই।

পতিতাবৃত্তি ও মাদক ব্যবসা ছাড়াও উক্ত ফ্ল্যাট থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারবিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হয়।

কদমতলীর থানার ওসি এম এ জলিল বলেন, “ধনিয়ার নূরপুরে মোয়াজ্জেম হোসেন নামে প্রয়াত এক জামায়াত নেতার পাঁচতলা ভবনের দোতলার একটি ফ্লাটে তারা সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড চালনার বিষয়ে বৈঠক করছিল।”

এ চক্রের সদস্যরা জঙ্গিদের কাছে বোমা ও অব্যধ অস্ত্র সরবরাহে লিপ্ত থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...

চিত্র নায়িকা নিপুণ চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। জানা গেছে,...