মা কুমকুম চৌধুরী নয় মাস যাবৎ স্ট্রোক করে প্যারালাইজ রোগে আক্রান্ত।মায়ের সেবা যত্ন সবই নিজ হাতে করতো ছোট ছেলে সুমিত চৌধুরী। পক্ষ ঘাতস্থ মা কে নিয়মিত মন্দিরেও নিয়ে যেত।
সেই ছেলেই শেষ পর্যন্ত মাকে বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যা কর।এরপর নিজেও চেষ্টা করেছে আত্মহত্যার
নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটে শনিবার দুপুর দেড়টায় ।
পরিবারে বাবা- মা আর বড় ভাই সোমনাথ চৌধুরীকে নিয়ে গোসাইলডাঙ্গা বারেক বিল্ডিং মোড়ের আমিন ফিউসার পার্কের পাশ্বে ৯ তলা সরকারী টাওয়ারের তিন তলার ভাড়া বাসায় থাকতো তারা। বাবা এ্যাডভোকেট সুখময় চৌধুরী আয়কর আইনজীবী হিসেবে ঢাকায় কর্মরত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,শনিবার সকালে বড় ভাই সোমনাথ চৌধুরী এইচ এসসি পরীক্ষার খারাপ ফলাফলের জন্য সুমিত চৌধুরীকে বকা-ঝকা করে । ব্যারিষ্টার সুলতান আহমদ ডিগ্রি কলেজ থেকে একবার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে তিন বিষয়ে ফেল করে সে। মান উন্নয়ন পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে না পারায় তাকে বকা দেন।বড় ভাই সোমনাথ সরকারী মহসিন কলেজের বিবিএ প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাদের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার আমিলাইশ ইউনিয়নে।
সরকারী বিল্ডিংয়ের অস্থায়ী দারোয়ান দুলাল মিয়া জানান,আমি তিনদিন যাবৎ বিল্ডিং পাহারা দিচ্ছি। ঘটনা ঘটনার পর পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে । ছেলের বাবা ঢাকায় থাকে , মা কুমকুম চৌধুরী নয় মাস যাবৎ স্ট্রোক করে প্যারালাইজ রোগে আক্রান্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশি মহিলা বলেন, “প্রায় সময় এই ভবনের দিকে দেখতাম ছেলেটা মাকে নিয়ে মন্দিরে পূজা দিতে যেত। কত রকম সেবা যত্ন করতো। কেন জানি মাকে জবাই করে হত্যা করেছে বুঝতে পারছি না।”
মহানগর পুলিশের বন্দর জোনের সহকারী কমিশনার মো.জাহিদুল ইসলাম জানান,সুমিতকে বড় ভাই বকা-ঝড়া করেছিল সকালে কেন সে দুই বার এইচ এসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেনি। ভাইয়ের বকা সহ্য করতে না পেরে পরিবারের ঝামেলা সহ্য করতে না পেরে সে অতিষ্ট হয়ে মাকে বটি দিয়ে হত্যা করেছে পরে সেই নিজেকে শেষ করে দেওয়ার জন্য আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
তিনি আরো জানান, “খবর নিয়ে জানা গেছে সুমিত বছর খানেক ধরে ফেইসবুকে স্ট্রাটাস দিচ্ছে ‘এই জীবন ভালো লাগছে না’ ‘এই জীবন রাখবো না মরে যাবো’ ‘আত্মহত্যা করবো’।
পরিবারের দেখাশুনা মায়ের সেবা যত্নসহ রান্না-বান্না ঘরের কাজ পর্যন্ত সে করতো,জানান তিনি।
জাহিদুল ইসলাম আরো বলেন, মাকে হত্যার ঘটনায় ছোটভাই সুমিত চৌধুরীকে আসামী করে বন্দর থানায় মামলা করেছে বড়ভাই সোমনাথে চৌধুরী, অন্যদিকে একই থানায় সুমিতের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক মাইনুল ইসলাম বাদী হয়ে আরো একটি মামলা হয়েছে।
সুমিতদের বাসায় গিয়ে পরিবারে কোন সদস্য কিংবা আত্মীয় স্বজনকে পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গিয়ে দেখা যায় সুমিত চৌধুরীকে ৪ তলার নাক কান গলা বিভাগে হাত কড়া পড়িয়ে পুলিশী পাহাড়ায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।