যে তিন জনের সহযোগীতায় বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতা হত্যার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন

Date:

Share post:

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ হমানকে পরিবার পরিজনসহ নৃশংসভাবে হত্যার পারও খুনিদের রক্তের পিপাসা মিটেনি। ্ণেল ফারুক এবং কর্নেল রশিদকে নিয়ে জেলখানার ভিতরে বন্দি অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন খন্দকার মোশতাক আহমেদ। এই হত্যাকান্ডের মাষ্টারমাইন্ডও ছিলেন এই তিনজন। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের শীর্ষ সংগঠক জাতীয় চারনেতার জেলখানায় হত্যাকান্ডে অংশ নেয় মুসলেমউদ্দীন। তিনি সেই ঘাতক খুনী যে পঁচাত্তরের পনের আগষ্টের কালো রাতে বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে পাইকারি হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তার পরিবারের সদস্যদের উপর। আর নেতৃত্বে ছিলেন াপ্টেন আবদুল মাজেদ। মোশতাক ঠিক করেছিলেন যে, কোন পাল্টা অভ্যুত্থান ঘটলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আটক তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন মনর আলী এবং এইচ এম কামরুজ্জামানকে হত্যা করা হবে। বিশিষ্ট লেখক গোলাম মুরশিদ তার ‘মুক্তিযুদ্ধ ও তারপর’ গ্রন্থে এ সংক্রান্ত বিবরণ দেন।

তিনি বলেন, খালেদ মোশাররফ (শাফায়াত জামিলের সহায়তায়) ২ নভেম্বর ভোর রাতে অর্থাৎ ৩ নভেম্বর খুব ভোরে অভ্যুত্থান ঘটান। এই অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল রাত দু’টায়। এটা টের পেয়েই ফারুক আর রশিদ একটি ঘাতক দল পাঠায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় কারাগারে। এর নেতৃত্বে দেয় মুসলেমউদ্দীন। এই ঘাতক দলের একমাত্র মিশন ছিল তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ চার নেতাকে হত্যা করা। সেখানে ঢোকার পর জেল কর্তৃপক্ষ তাদের বাধা দেয়। এ নিয়ে সেখানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের বচসা হয়। পরে ঘাতক বাহিনী তাদের নির্দেশদাতাদের সঙ্গে বঙ্গভবনে টেলিফোনে যোগাযোগ করে। এরপর তাদের ঢুকতে দেয়ার নির্দেশ আসে সর্বোচ্চ মহল থেকে। জেলের এক কক্ষে থাকতেন তাজউদ্দিন আর নজরুল ইসলাম। পাশের কক্ষে মনসুর আলী আর কামরুজ্জামান। ঘাতকরা তাদের সবাইকে তাজউদ্দিনের কক্ষে একত্রিত করেন। তারপর সেখানেই তাদের লি করে এবং বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হয়। তাজউদ্দিন কিছুক্ষণ বেঁচে ছিলেন। কিন্তু অন্য তিনজন মারা যান প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। রাত চারটায় টেলিফোনে তৎকালীন জিআইজি মোশতাককে এই হত্যাকা-ের কথা অবহিত করেন।
৩ নভেম্বর অভ্যুত্থানের অন্যতম শাফায়াত জামিল জাতীয় চার নেতাকে হত্যার খবর পান পরের দিন সকাল বেলায়। এ ব্যাপারে তিনি লিখেছেন ‘জানলে তিনি কিছুতেই খুনীদের ছেড়ে দিতেন না” দেশের বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টেও জেল হত্যার ঘটনাটি পরদিন সকালে পৌছে। কর্ণেল (অব) দিদারুল বীর প্রতীক- জেল হত্যার দিন যশোর ক্যন্টনমেন্টে আর্টিলারি ইউনিটে সেকেন্ড ইন কমান্ডের দায়িত্ব পালন করছিলেন, তিনি বাসস কে বলেন ৪ তারিখ সকালে যশোর ক্যন্টনমেন্টে শোকাবহ এই সংবাদটি এসে পৌছে। তিনি বলেন, এঘটনা শুনার সাথে সাথে পুরো ক্যন্টনমেন্টে এক ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। মানবিক দৃষ্টি কোন থেকে বিশেষ করে জেলখানায় বন্দিদের এভাবে হত্যার ঘটনায় ভেতরে ভেতরে সেনাসদস্যদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তবে সেই সময়ের রাজনৈতিক দোলাচলের কারণে এই ক্ষেভের বহি:প্রকাশ ঘটতে দেখা যায়নি।
তার পরেও তারা সঠিক নির্দেশের অপেক্ষায় ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই সময়ের সেনা নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে কোন ভ’মিকা রাখা সম্ভব হয়নি। বলেন “ হুকুম পেলেই আমরা মার্চ করতে পারতাম”। জেল খানায় এই জঘন্য হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ড হিসাবে তিনি খন্দকার মোশতাক ,ফারুক এবং রশিদের নাম উল্লেখ করেন। তবে সেই সময়ে সেনা নেতৃত্ব কার হাতে সে সর্ম্পকে তাদের কোন ক্লিয়ার ধারনা ছিলনা বলেও জানান তিনি। বাংলাদেশের প্রথম প্রধান্রী শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদের সিমিন হোসেন রিমি এমপিও বলেন তার পরিবার জেলহত্যার ৩৬ ঘন্টা পর তার পিতার মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরেছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

যাত্রাবাড়ীতে ১৫১ বোতল বিদেশি মদ ও ট্রাকসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি-রমনা

স্থানীয় প্রতিনিধি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে ১৫১ বোতল বিদেশি মদ ও মদ পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকসহ এক মাদক কারবারিকে গ্রেফতার...

ডিসি হিলে ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিকালে হামলা এবং ভাঙচুর,নববর্ষের অনুষ্ঠান বাতিল

স্থানীয় প্রতিনিধি চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানার ডিসি হিলে ঐতিহ্যবাহী নববর্ষের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতিকালে হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় আগামীকালকের নববর্ষের অনুষ্ঠান...

অভিনেত্রী মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত

সময় ডেস্ক  মিস আর্থ বাংলাদেশ ২০২০-এর বিজয়ী অভিনেত্রী মেঘনা আলমকে ডিটেনশন আইনে ৩০ দিনের জন্য কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার...

কে এই আশিক চৌধুরী

সময় ডেস্ক  পাইলট পরিবারের সন্তান আশিক চৌধুরী। পেশায় ব্যাংকার হলেও রপ্ত করেছেন বিমান চালানো। অন্তত অর্ধশত বার ঝাঁপ দেন...