গত এক বছর দেশের যেসকল নাগরিক সরকারি সেবা গ্রহণ করতে বিভিন্ন দপ্তরে গিয়েছেন তাদের মধ্যে ৩২ শতাংশ ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন বলে সরকারেরই জরিপে উঠে এসেছে। ঘুষ ও দুর্নীতি সবচেয়ে বেশি হয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআরটিএতে সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে। জরিপে অংশ নেওয়া ৬৩ দশমিক ২৯ শতাংশ নারী-পুরুষ বলেছেন, তারা এ সংস্থায় গিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির কবলে পড়েন।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ‘সিটিজেন পারসেপশন সার্ভেতে (সিপিএস) এ চিত্র উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার সংস্থার মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে তথ্য তুলে ধরেন এ প্রকল্পের পরিচালক রাশেদ-ই-মাসতাহাব।
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ৬৪ জেলার ১ হাজার ৯২০টি প্রাথমিক নমুনা ইউনিট থেকে ৪৫ হাজার ৮৮৮টি খানার ১৮ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট ৮৪ হাজার ৮০৭ জন নারী-পুরুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে এই জরিপ চালানো হয়। জরিপে নাগরিকদের দৃষ্টিভঙ্গি ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা, সুশাসন, সরকারি সেবার মান, দুর্নীতি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার এবং বৈষম্য বিষয়ক এসডিজি ১৬ এর ছয়টি সূচকের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা হয়েছে। জরিপের প্রশ্নপত্র জাতিসংঘ নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান ও পদ্ধতি অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে বলে অনুষ্ঠানো বলা হয়েছে।
জরিপের প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে ৩৮ দশমিক ৬২ শতাংশ পুরুষ এবং ২২ দশমিক ৭১ শতাংশ নারী উত্তরদাতা ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হওয়ার তথ্য দিয়েছেন। গড়ে ৩১ দশমিক ৬৭ শতাংশ উত্তরদাতা ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। ঘুষ ও দুর্নীতির ক্ষেত্রে বিআরটিএ এর পরেই আছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ৬১ দশমিক ৯৪ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, তারা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সেবা নিতে গিয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির কবলে পড়েছেন। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে ৫৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ, ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে ৫৪ দশমিক ৯২ শতাংশ উত্তরদাতা ঘুষ দিয়ে ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে সেবা গ্রহণের কথা বলেছেন।