প্রায় ১১ মাস আগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় চট্টগ্রামে নতুন একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ ১৬৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাদী দাবি করেছেন, আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়ার কারণে তিনি গুলিবিদ্ধ ও আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে নগরীর খুলশী থানায় মামলাটি করেন সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ নামে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার একজন শিক্ষার্থী। শুক্রবার (২০ জুন) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফতাব হোসেন।
তিনি বলেন, ১৭ জুন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় ১৬৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব। তবে নিরীহ কাউকে হয়রানি করা হবে না।
সাইফুদ্দীন মুহাম্মদ এমদাদ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কাচিয়াপাড় গ্রামে। এজাহারে তিনি দাবি করেছেন, সরকারের এক প্রজ্ঞাপনের ২০২ নম্বরে তাকে ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বাদী সাইফুদ্দীন এমদাদ এজাহারে উল্লেখ করেন, তিনি গত বছরের ‘জুলাই আন্দোলনের’ সময় একজন আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং সরাসরি আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। তার বাড়ি চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার কাচিয়াপাড় গ্রামে। সরকারি এক প্রজ্ঞাপনের ২০২ নম্বরে নিজেকে ‘জুলাইযোদ্ধা’ হিসেবে উল্লেখ থাকার দাবিও করেছেন তিনি।
এজাহার অনুযায়ী, গত ১৫ জুলাই ঢাকার রাজু ভাস্কর্য এলাকায় তিনি আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হামলার টার্গেটে পরিণত হন। এরপর ২৮ জুলাই পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে ছিলেন এবং পরে চট্টগ্রামে আন্দোলনে অংশ নেন।
৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেওয়ার সময় গুলিবিদ্ধ হন এমদাদ। তার দাবি, সেদিন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে তাকে ‘গুলিবিদ্ধ’ ও ‘কোপজখম‘ করে। এরপর হাসপাতালে না গিয়ে তিনি আন্দোলনে অংশ নেওয়া চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের সহায়তায় একটি নিরাপদ স্থানে চিকিৎসা নেন। তার ডান পায়ে ও বুকে ছররা গুলির আঘাত লাগে, যার কিছু অংশ শরীরে রয়ে গেছে। এমনকি ডান চোখের দৃষ্টিশক্তিও ফিরে আসেনি বলে দাবি করেছেন তিনি।
মামলায় যাদের নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মোতালেব, নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, আনিসুল হক, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আবু রেজা নেজাম উদ্দিন নদভী, কামরুল ইসলাম, ফজলে করিম চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, রেজাউল করিম চৌধুরী, সৈয়দ সামাদুল হক, আব্দুস ছবুর লিটন, মোবারক আলী, ফারাজ করিম চৌধুরী, শৈবাল দাশ সুমন, জহর লাল হাজারী, মো. ইদ্রিস আল ফায়েদ, সাইফুল্লা আনসারি প্রমুখ।