মোংলায় রুদ্রের মৃত্যুবার্ষিকী পালন 

Date:

Share post:

মোঃ এনামুল হক, মোংলা প্রতিনিধি
’ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের স্রষ্ঠা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ’র ৩১তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রুদ্র স্মৃতি সংসদের আয়োজনে সকাল ৯টায় সংসদ চত্বর থেকে বের হওয়া শোক র‍্যালী মোংলার মিঠাখালী বাজার প্রদক্ষিণ করে। এরপর শোক র‍্যালীটি প্রয়াত কবির কবরস্থলে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে কবির কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি’র নেতৃবৃন্দরা। এ সময় কবির কবরে পাশে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনসহ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মসজিদে কুরআন খতম ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয়েছে। মিলাদ ও দোয়া শেষে সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদ।
পরে শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় শোক ও স্মরণানুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি সুমেল সারাফাত। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মিঠাখালী ইউপি চেয়ারম্যান উৎপল মন্ডল। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক সাংবাদিক মো. নূর আলম শেখ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদস্য সচিব গীতিকার মোল্লা আল মামুন, প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক আফজাল হোসেন, সিপিবি নেতা কমরেড নাজমুল হক, রুদ্র স্মৃতি সংসদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, দি হাঙ্গার প্রোজেক্ট বাংলাদেশ’র মো. মিজানুর রহমান, রুদ্র সংদের লিটন গাজী ও মাহারুফ বিল্লাহ।
উল্লেখ্য, অকালপ্রয়াত এই কবি নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে। সাম্যবাদ, মুক্তিযুদ্ধ, ঐতিহ্যচেতনা ও অসাম্প্রদায়িকবোধে উজ্জ্বল তার কবিতা। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’- এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি উচ্চারণ করেছেন অবিনাশী স্বপ্ন- ‘দিন আসবেই- দিন সমতার’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্র প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।
মাত্র ৩৫ বছরের (১৯৫৬-১৯৯১) স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। ‘উপদ্রুত উপকূল’ ও ‘ফিরে চাই স্বর্নগ্রাম’ কাব্যগ্রন্থ দুটির  জন্য ‘সংস্কৃতি সংসদ’ থেকে পরপর দু’বছর ‘মুনীর চৌধুরী সাহিত্য পুরষ্কার লাভ করেন। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় কবিতা পরিষদ গঠনে তিনি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...