মঙ্গলগ্রহে কি সভ্যতা ছিল কোনোকালে?

Date:

Share post:

বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ

দক্ষিণ আফ্রিকায় এমন একটি রেডিও টেলিস্কোপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে যা পৃথিবীতে এখন যত টেলিস্কোপ আছে তার সবগুলোর চেয়ে অনেকগুণ বেশি শক্তিশালী।

ডিপ স্পেসের যে আওয়াজ, তা থেকেই এক্সট্রা টেরেসট্রিয়াল বা মহাজাগতিক কর্মকান্ডের খবর দেবে এই টেলিস্কোপ – যার অনুসন্ধানের পরিধি বিস্তৃত হবে নশো কোটি আলোকবর্ষ দূরেও।

দক্ষিণ আফ্রিকার এক নির্জন প্রত্যন্ত প্রান্তরে বসানো হচ্ছে এই টেলিস্কোপ, যার সাফল্য নিয়ে খুবই আশাবাদী সে দেশের সরকার।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী নালেদি প্যানেডোরের কথায়, “আমাদের বিশ্বাস এর মাধ্যমে আমরা মহাকাশের গভীরতম প্রান্তেও অনুসন্ধান চালাতে পারব। আর আমরা কী খুঁজে পাব সেটা কে-ই বা বলতে পারে? হয়তো পেয়ে যাব এমন আর একটা গ্রহ, যেখানে জীবনের অস্তিত্ত্ব আছে!”

“হয়তো এই টেলিস্কোপটাই হবে সেই উপকরণ, যা আমাদের এনে দেবে বহুদিন ধরে আমরা বিশ্বব্রহ্মান্ড নিয়ে যে গভীর, অন্ধকার প্রশ্নগুলো হাতড়াচ্ছি তার উত্তর!”

আগামী বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে এই টেলিস্কোপের প্রথম পর্যায়ের কাজ – যাতে বসানো হবে মোট ৬৪টি ডিশ।

প্রকল্প যখন শেষ হবে, তখন মোট ৩০০০ ডিশ বসানোর পরিকল্পনা আছে – আর এগুলো এতটাই শক্তিশালী হবে যে বৃহস্পতির বুকে একটা মোবাইল ফোন সিগনালও তা শনাক্ত করতে পারবে খুব সহজেই।

পৃথিবীর বাইরে প্রাণের সন্ধানে এত ক্ষমতাশালী টেলিস্কোপ আগে কখনওই তৈরি হয়নি।

ছবির কপিরাইট MUJAHID SAFODIEN
Image caption দক্ষিণ আফ্রিকার এক নির্জন প্রান্তরে স্থাপিত হচ্ছে এই মিয়ারক্যাট টেলিস্কোপ

স্কোয়ারের চিফ সায়েন্টিস্ট ফার্নান্দো ক্যামিলো বলছিলেন, “ইতিহাসে বারবার দেখা গেছে যখনই আপনি এ ধরনের কোনও বিশ্বমানের একটা বৈজ্ঞানিক ইনস্ট্রুমেন্ট বানান – তখন তা থেকেই কিন্তু এমন সব সাঙ্ঘাতিক আবিষ্কার পাওয়া যায়, যা আগে কোনওভাবে কেউ আঁচই করতে পারেনি।”

“ফলে আজ থেকে দশ বছর বাদে মিয়ারক্যাট হয়তো এমন কিছু আবিষ্কার করে ফেলবে যেগুলো আমি আজ কল্পনাই করতে পারছি না”, বলছেন তিনি।

মঙ্গুজ গোত্রের প্রাণী মিয়ারক্যাট পাওয়া যায় আফ্রিকার দক্ষিণভাগে – আর তাদের নামেই নাম রাখা হয়েছে এই টেলিস্কাপ প্রকল্পের।

আর যেহেতু এখনকার যে কোনও টেলিস্কোপের চেয়ে অন্তত দশ হাজার গুণ বেশি সেনসিটিভিটি হবে এটির, তাই মিয়ারক্যাট বিশ্বব্রহ্মান্ড নিয়ে কোন নতুন অজানা তথ্য বের করে আনে – সেদিকেই এখন প্রবল উৎকন্ঠা নিয়ে তাকিয়ে আছেন বিজ্ঞানীরা।

এলিফ্যান্ট সিলের বিচিত্র সব স্বভাব

প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলীয় এলাকায় যে এলিফ্যান্ট সিল দেখা যায় – স্তন্যপায়ীদের মধ্যে তাদের মতো বিচিত্র প্রাণী খুব কমই আছে।

সম্প্রতি মার্কিন বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, পুরুষ এলিফ্যান্ট সিলের ডাকের ছন্দ থেকে তারা প্রত্যেককে আলাদা করে চিনতেও পারে – যে ক্ষমতা মানুষ ছাড়া কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীর নেই।

অর্থাৎ আমরা যেমন একটা গানের নিজস্ব তাল বা ছন্দ থেকে সেটাকে অন্য গানের চেয়ে আলাদা করে চিনতে পারি – পুরুষ এলিফ্যান্ট সিলরাও তাদের প্রত্যেকের ডাকের নিজস্ব ছন্দ দিয়ে একজনকে অন্যজনের চেয়ে আলাদা করতে পারে।

ছবির কপিরাইট JOHN SELKIRK
Image caption এলিফ্যান্ট সিলের নানা অদ্ভুত স্বভাব আর ক্ষমতা বিজ্ঞানীদেরও তাক লাগিয়ে দেয়

‘কারেন্ট বায়োলজি’ সাময়িকী-তে প্রকাশিত এই গবেষণায় এলিফ্যান্ট সিলের এই বিশেষ ক্ষমতাকে তুলনা করা হচ্ছে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের সঙ্গেও।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে জুওলজির অধ্যাপক ও বিশিষ্ট প্রাণীবিদ ড: অরিন্দম ভট্টাচার্য বলছিলেন, এলিফ্যান্ট সিলের অনেক বৈশিষ্ট্য ঠিক কেমন মানুষের মতোই!

অধ্যাপক অরিন্দম ভট্টাচার্যর পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে পাবেন এ সপ্তাহের বিজ্ঞানের আসরে।

মঙ্গলে ই টি-দের সভ্যতা কি ছিল?

মঙ্গলগ্রহ নিয়ে মানুষের কল্পনার শেষ নেই। সৌরজগতে পৃথিবীর এই প্রতিবেশী লাল গ্রহটিতে প্রাণের অস্তিত্ত্ব থাকতে পারে – এই ধারণার ওপর ভিত্তি করে কত যে কল্পবিজ্ঞানের কাহিনী বা চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে তার কোনও ইয়ত্তা নেই।

তবে শুধু যে আমজনতাই এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চায় তা নয় – মার্কিন কংগ্রেসের ডাকসাইটে সদস্য ও রিপাবলিকান রাজনীতিক ডানা রোহরাব্যাখারও সম্প্রতি মার্স রোভার প্রোগ্রাম নিয়ে এক শুনানিতে নাসা-র বিজ্ঞানীদের কাছে এই প্রশ্নটা না-করে পারেননি।

তিনি একটু কিন্তু-কিন্তু করে জিজ্ঞেস করেই ফেলেন, “আপনারা বলছেন হাজার হাজার বছর আগে মঙ্গলগ্রহের অবস্থা সম্পূর্ণ অন্য রকম ছিল। তাই যদি হয়, তাহলে কি এটা সম্ভব যে তখন সেখানে এলিয়েন বা মহাজাগতিক জীবদের একটা সভ্যতাও ছিল?”

ছবির কপিরাইট SAUL LOEB
Image caption রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ডানা রোহরাব্যাখার

জবাবে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির জিওকেমিস্ট্রির অধ্যাপক কেনেথ ফার্লি বলেন, “মঙ্গলগ্রহের অবস্থা অন্য রকম ছিল হাজার হাজার বছর নয় – শত শত কোটি বছর আগে।”

“আর সত্যি বলতে আমরা সেখানে কোনও সভ্যতা ছিল বলে কোনও প্রমাণ পাইনি – আমি বরং বলব সেখানে কোনওদিন ওরকম কিছু ছিল সেই সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।”

মঙ্গলগ্রহে পৃথিবীর বাইরের প্রাণীরাও একদিন মানুষের মতোই একটা সভ্যতা গড়ে তুলেছিল – সেই কল্পনার বেলুনকে নাসা এভাবেই এক কথায় চুপসে দিয়েছে।

তাতে হয়তো আমাদের আবেগ ধাক্কা খেল – কিন্তু মঙ্গলে ভিনগ্রহের প্রাণীদের সভ্যতা নিয়ে একটা বৈজ্ঞানিক উত্তর তো অন্তত মিলল!

এ সপ্তাহের বিজ্ঞানের আসর পরিবেশন করেছেন শুভজ্যোতি ঘোষ

Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-40708110

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...