জেরুজালেমে হারাম আল-শরিফ প্রাঙ্গণে ইসরায়েলিদের নিরাপত্তাজনিত বিতর্কিত কিছু ব্যবস্থাকে ঘিরে সংঘর্ষ ও উত্তেজনার পর তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। মেটাল ডিটেক্টরের পরিবর্তে শিথিল নজরদারি ব্যবস্থা বসানোর ঘোষণা দিয়েছে তারা।
এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার ঘণ্টা কয়েক আগে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত, নিকোলাই ম্লাদেসনভ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন জেরুজালেমের পবিত্র ধর্মীয় স্থান নিয়ে দ্বন্দ্ব শিথিল না হলে তা এই প্রাচীন শহর ছাড়িয়ে আরো ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র এই স্থানটি মুসলিমদের কাছে হারাম আল শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত। সেখানে ঢোকার মুল পথে দুজন পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুকে ঘিরে মেটাল ডিটেক্টরের মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হয়। যা ফিলিস্তিনীদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। এই পটভূমিতে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিলো।
তার কয়েক ঘণ্টা আগে সোমবার এ সঙ্কট নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকের পরই জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত বলেন, বিষয়টির সমাধান না হলে মুসলিম বিশ্বে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
“কারোই ভুল করে ভাবা উচিত হবে না যে, এটি শুধুমাত্র একটি স্থানীয় সমস্যা। যদিও এটি মাত্র কয়েক’শ বর্গমিটারের মধ্যে ঘটছে, তবে এর প্রভাব পড়ছে সারাবিশ্বের কোটি-কোটি মানুষের ওপর। এর সর্বনাশা প্রভাব প্রাচীন শহরের দেয়াল ছাড়িয়ে, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে আরো অনেকদূর যেতে পারে” বলেন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক জাতিসংঘের দূত নিকোলাই ম্লাদেসনভ।
ইসরায়েলি নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে গত ২১শে জুলাই, শুক্রবার পূর্ব জেরুজালেম এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে হাজার-হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নামলে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে তিনজন ফিলিস্তিনী নিহত হয়।
একইদিনে অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি ইহুদি বসতিতে হামলা চালিয়ে তিনজন বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যা এবং অপর একজন আহত করে একজন ফিলিস্তিনীরা।
জেরুজালেমের পুরনো শহরের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণটি মুসলিমদের কাছে তৃতীয় পবিত্রতম স্থান এবং ইহুদি ধর্মের সবচয়ে পবিত্র স্থান হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের পর থেকে পূর্ব জেরুজালেম ইসরায়েলের দখলে রয়েছে।
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-40712972