আবারো বিতর্কে সেই আলোচিত মহিলা নেত্রী রিজিয়া রেজা নদভী।

    0
    551

    জামায়াত সম্পৃক্ততায় মহিলা আওয়ামী লীগের জেলা শাখা থেকে বাদ পড়ার চার মাস পরই কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেলেন রিজিয়া রেজা চৌধুরী নদভী। তিনি যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত দল জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে। এছাড়া তিনি নিজেও ২০০২-০৪ সাল পর্যন্ত ইসলামী ছাত্রী সংস্থার চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি ছিলেন- বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।

    রিজিয়ার স্বামী চট্টগ্রাম-১৪ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভী। যার বিরুদ্ধেও রয়েছে জামায়াত ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ রয়েছে। একই আসনে ১৯৯১ সালে জামায়াতের মনোনয়নে নির্বাচন করেছিলেন মুমিনুল হক চৌধুরী,পরবর্তীতে তিনি বাঁশখালী আসনেও জামায়াতের পক্ষে নির্বাচন করেন।

    চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান রিজিয়া রেজা। এ নিয়ে ওইদিন সম্মেলনস্থলেই ব্যাপক হট্টগোল হয়।

    ওই সম্মেলনের অতিথি মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি সাফিয়া খাতুন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তো চট্টগ্রামের অনেক কিছুই জানি না। শুধু নাম ঘোষণা করেছি। তবে সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

    এর ২৩ দিন পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমালোচনার মুখে গত ১৩ মার্চ শাখাটির ৭১ সদস্যের পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার সময় রিজিয়াকে বাদ দেওয়া হয়।

    এদিকে গতকাল শনিবার সাফিয়া খাতুনের (বর্তমান সভাপতি) নেতৃত্বাধীন মহিলা আওয়ামী লীগের ১৫১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে স্থান পেয়েছেন রিজিয়া রেজা। যা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ ম্যাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

    এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক তৌফিদুল ইসলাম বুলবুল এ বিষয়ে রোববার ফেসবুকে কয়েকটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা আমির মজলিশ শুরা সদস্য জামায়াতের রোকন (মুমিনুল হক চৌধুরী) মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী মামলার ফাঁসির রায়ে দণ্ডিত, জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামি ও বদর কমান্ডার মুজাহিদির গায়েবেনা জানাজার ইমাম। বাঁশখালী আসন থেকে বার বার দাঁড়িপাল্লা নিয়ে নির্বাচন করা মুমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে রিজিয়া নদভী। যিনি ছাত্রী সংস্থার নেত্রী। তিনি এখন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিঠির সদস্য, রিজিয়া নদভী ,!!!!!’

    এ বিষয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে সাফিয়া খাতুনকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায় নি।

    অন্যদিকে রিজিয়া রেজার বাবার রাজনৈতিক পরিচয়কে গুরুত্ব দিচ্ছেন না মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা বেগম ক্রিক।

    রোববার সময় নিউজকে তিনি বলেন, ‘তার স্বামী তো আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য। স্বামীর সংসারে আসলে তো আর বাবার পরিচয় থাকে না।’

    আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সমালোচনার বিষয়ে মাহমুদা বেগম বলেন, ‘এতবড় কমিটি, ১৫১ জনের। সেখানে কারো পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে। কারো ভাল না লাগলে সে ফেসবুকে লিখতেই। আমি এখনো কিছু শুনিনি, কেউ আমাকে ফোন করে কিছু বলেনি; আপনিই প্রথম ফোন করলেন।’

    তিনি বলেন, ফেসবুকে অনেকে অনেক কিছু লেখে। সবকিছু কি সঠিক? আর সবকিছু গুরুত্ব দিলে হবে? এতবড় সংগঠন, এতকিছু নিয়ে চলা যায়? কিছু তো ভুল-ক্রুটিও হতে পারে।

    মাহমুদা বেগম বলেন, নদভী সাহেব এমপি হলে জামায়াতের বিষয়টি স্পর্শকাতর হয় না, মেয়ে হলেই স্পর্শকাতর হয়ে যায়! উনার স্বামী আমাদের দলের রাজনীতি করেন, তো সংসারের স্ত্রীকে আমরা ফেলে দিতে পারি? আর উনি তো বাপের বাড়ি থাকেন না, থাকেন স্বামীর বাড়ি।

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here