ডেস্ক নিউজ: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া দেশের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক।
প্রতি সপ্তাহে কমিটির বৈঠক হলেও করোনার কারণে তা অনিয়মিত হয়ে যায়। সর্বশেষ একনেক সভা হয় ১৬ মার্চ। দীর্ঘ বিরতির পর আজ মঙ্গলবার আবার বসছে একনেক বৈঠক।
এতে ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প উপস্থাপন করা হবে।
সেগুলো হল-
১. ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ/ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক স্থাপন (১ম পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ১২ লাখ টাকা। অনুমোদনের পর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৩ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।
২. সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘সাইনবোর্ড-মোড়েলগঞ্জ-রায়েন্দা-শরণখোলা-বগী সড়কের (আর-৭৭৩) ১৭তম কিলোমিটারে পানগুচি নদীর ওপর পানগুচি সেতু নির্মাণ’ প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। একনেকে অনুমোদনের পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন ২০২৫ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। এ প্রকল্পটিতে বৈদেশিক ঋণ পাওয়া যাবে ৩৯৯ কোটি ৮২ লাখ টাকা।
৩. যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম নির্মাণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্পটি একনেকে উঠছে। অনুমোদন পেলে প্রকল্পটি জুলাই ২০২০ থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৪৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
৪. সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘গণগ্রন্থাগার অধিদফতরের বহুতল ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পটির জন্য মোট ব্যয় হবে ৫২৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। অনুমোদনের পর এটি জুলাই ২০২০ হতে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে গণগ্রন্থাগার অধিদফতর ও গণপূর্ত অধিদফতর।
৫. স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) এর অধীনে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল স্থাপন (১ম সংশোধিত) প্রকল্পটি ব্যয় বৃদ্ধি ব্যতিরেকে মেয়াদ বৃদ্ধিতে সংশোধনের জন্য একনেক সভায় তোলা হবে। সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পটি দুই বছর মেয়াদ বাড়ানো হবে। সংশোধিত মেয়াদ বাড়িয়ে ডিসেম্বর ২০২২ সাল পর্যন্ত করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বিএসএমএমইউ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হচ্ছে ১ হাজার ৫৬১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এ প্রকল্প ইডিসিএফ ও কোরিয়া ১ হাজার ৪৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ঋণ দিচ্ছে এবং বিএসএমএমইউ এর নিজস্ব তহবিল থেকে ১৭৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
৬. স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘রাঙামাটি জেলার কারিগর পাড়া হতে বিলাইছড়ি পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন ও ব্রিজ/কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্প উঠছে একনেকে। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন ২০২৪ সালে এটি বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি)। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৩৩৮ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
৭. স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ও চাঁদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি একনেকে তোলা হচ্ছে। অনুমোদনের পর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জানুয়ারি ২০২১ হতে জুন ২০২৫ সাল মেয়াদে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
৮. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ’ প্রকল্প বৈঠকে তোলা হচ্ছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এটি চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
৯. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরও একটি ‘তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপন করা হবে। এক হাজার ৪৫২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছর থেকে জুন ২০২৪ সালে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)।
১০. বিদ্যুৎ বিভাগের ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে একনেকে। তিন হাজার ৭৬ কোটি ২২ লাখ টাকার প্রকল্পটি চলতি বছরের জুলাই থেকে জুন ২০২৫ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)। এ প্রকল্পটিতে সংস্থার তহবিল থেকে ৮০৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, এডিবি থেকে ঋণ হিসেবে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং বাকি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ব্যয় করা হবে।