ইলিশের ভরা মৌসুম শুরু হলেও জেলেদের জালে ধরা পরছেনা পর্যাপ্ত ইলিশ। এ কারনে সমূদ্র উপকূলীয় জেলে পরিবারে চরম দুর্দিন চলছে। আবার অসহায় ও গরীব জেলেরা এলাকার প্রভাবশালী মৎস্য ট্রলার মালিকদের কাছ থেকে দাদনে ( সুদে) টাকা নিয়ে সাগরে গেলেও তাদের জালে ধরা পড়ছে না ইলিশ। ফলে তাদের পরিবারে চলছে দুর্দিন।
ইলিশের প্রজনন ও বংশ বিস্তার নানাভাবে বাধাঁগস্থ হবার কারনে সমুদ্র উপকূলীয় নদীতে কমছে এ মাছের পরিমান এমনটিই ধারনা স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের। যা পড়ছে তা দিয়া খরচ টাকাই হচ্ছেনা জেলেদের ।
বরগুনার বাজার গুলোতে দু¯প্রাপ্য হয়ে উঠেছে এ রুপালী ইলিশ। বাজারে ইলিশের অনুপস্থিতি ভাবিয়ে তুলছে সকল স্তরের নাগরিকদের । প্রয়োজনের চেয়ে স্বল্প মাত্রায় সরবরাহের কারনে ইলিশের বাজার চড়া হয়ে উঠেছে।
বুধবার সকালে পাথরঘাটা উপজেলার বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মৎস্য অবতরন কেন্দ্র খালি, নেই কোন মাছ, থাকলেও তা অল্প কিছু আছে। শতাধিক ট্রলার নোঙর করা আছে ঘাটে, জেলেরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
জেলে ফারুক, রাজু ,রিপন ও কালাম মাঝিসহ বেশ কয়েকজনে জানান, বঙ্গপসাগরে মাছ না পড়ায় আমরা খুব চিন্তিত হয়ে পরিছি। মালিকের কাছথেকে দাধন টাকা নিয়েছি, মাছ না পেলে কিভাবে এই টাকা শোধ করব, কি ভাবে আমাদের সংসার চলবে।
সাগর থেকে সম্প্রতি ফিরে আসা এফবি ফরিদ নামে ট্রলারের মালিক মো. খলিলুর রহমান ও এফবি মা গঙ্গা ট্রলারের মালিক জয় বলেন, ভেবে ছিলেন গত বছরের তুলনায় এবার বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে। তাই তিনি ৮৫ হাজার টাকা ব্যয় করে সাগরে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইলিশ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে। যা মাছ পেয়েছেন, তা বিক্রি করেছেন মাত্র সাড়ে সাত হাজার টাকা। এখন যে আবস্থা তাতে নিজের সংসার চলানই দায়।
জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ইলিশ মৌসুম চললেও সাগরে আগের মতো মাছ পড়ছে না। এ কারনে এ পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক জেলে। ইলিশ নির্ভর উপকূলীয় এলাকার মানুষের চোখে মুখে এখন অভাবের ছাপ। ফলে অনেক জেলে এলাকা ছেড়ে শহরমুখী হতে শুরু করেছেন।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড.ওয়াহিদুজ্জামান নয়া দিগন্তকে বলেন, জাটকা নিধন, জলবায়ু পরিবর্তন এবং অনাবৃষ্টির কারণে নদীতে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। ফলে আজ জেলেদের জীবনে দুর্দিন নেমে এসেছে। আষাঢ়ের ঘনবৃষ্টি শুরু হলে উপকূলীয় নদ নদীতে ইলিশের আনাগোনা বৃদ্ধি পেতে পারে।
ভরা মৌসুমেও সাগরে ইলিশ নেই*
Date:
Share post: