বাংলাদেশের সীতাকুণ্ডের যে গ্রামে অজ্ঞাত রোগে ন’টি শিশু মারা গেছে সেখান থেকে নতুন করে আরো শিশু হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকি বলছেন, সব মিলিয়ে ৮৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।
তবে রোগটি ঠিক কি তা এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। কর্তৃপক্ষ বলছে রোগটি শনাক্ত করতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মধ্যম সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দুটি পাড়া থেকেই এসেছেন সব রোগী। যাদের সবারই বয়স এক থেকে ১২ বছরের মধ্যে।
মি. সিদ্দিকি বলছেন, “প্রথমে যে রোগীগুলো ভর্তি হয়েছে, তাদের গায়ে জ্বর থাকতো, র্যাশ থাকতো, বমি করতো, পাতলা পায়খানা হতো, পায়খানার সাথে রক্ত যেতো, কাশি, শ্বাসকষ্ট হতো, কারো খিঁচুনি হতো, গ্ল্যান্ড ফুলে যেতো। এর পর রোগী অজ্ঞান হতো ও মরে যেতো। এই পুরো ব্যাপারটা ঘটতে পাঁচ ছয়দিন লাগতো। তবে এখন যারা ভর্তি হচ্ছে তাদের হালকা জ্বর, সর্দি-কাশি দেখা যাচ্ছে। সামান্য লক্ষণ দেখা দিলেই সাবধানতা হিসেবে তাদের আমরা ভর্তি করে নিচ্ছি।”
গত বুধবার সকাল পর্যন্ত পাঁচ দিনে সীতাকুণ্ডের ওই দুটি পাড়ায় ন’টি শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর আরো অনেক শিশু ভর্তি হতে থাকে হাসপাতালে।
বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন:
পশ্চিমা বিশ্ব ভন্ডামি করেছে: ব্যর্থ অভ্যুত্থানের বার্ষিকীতে অভিযোগ এরদোয়ানের
নিজে মদ্যপায়ী হয়েও যেভাবে পাকিস্তানে মদ নিষিদ্ধ করেছিলেন ভুট্টো
বাংলাদেশে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক মিরযাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলছেন, রোগটি এখনো সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি কারণ এখনো সকল নমুনা সংগ্রহ করে তার ল্যাব টেস্ট শেষ হয়নি।
তিনি বলছেন, “পরীক্ষার জন্য রক্তের নমুনা, লালা সংগ্রহ করা হয়েছে। নাকের ভেতর থেকে সোয়াব করে নমুনা নেয়া হয়েছে। এগুলোর নানা ধরনের পরীক্ষা চলছে। সকল তথ্য কম্পাইল করে আমরা কনক্লুসিভ কোন সিদ্ধান্তে পৌছাই নি”
তাতে কতদিন সময় লাগবে সেটি এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন আইইডিসিআর-এর মহাপরিচালক।
যে দুটি পাড়া থেকে রোগীরা এসেছেন সে দুটি পাড়াই ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতি প্রধান এবং বেশ প্রত্যন্ত অঞ্চলে। আইডিসিআরের মহাপরিচালক আরো বলছেন, তাদের জীবনাচরণের নানা দিকও গবেষণা করা হচ্ছে।
তিনি বলছেন, “তাদের খাবারের ইতিহাস, আশপাশে তারা কোথায় গেছে, এলাকাটা কেমন, সেখানকার পানি কেমন এরকম জীবনাচরণের বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে। আর তারা যেহেতু একটি বিশেষ নৃগোষ্ঠীর মানুষ তাই তাদের জীবনাচরণ, বিশ্বাস, এসব তথ্যও নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও তারা কেনো হাসপাতাল গেলো না। কেন তারা বিষয়টি জানাতে দেরি করলো ইত্যাদি নানা বিষয় বোঝার চেষ্টা চলছে।”
হাসপাতালে ভর্তি অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠলেও রোগটি শনাক্ত না হওয়া পর্যন্ত সকল শিশুকে হাসপাতালে রেখে দিতে বলা হয়েছে।