হাবিবার বিয়ে আজ।

Date:

Share post:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি শিশু পরিবারের অনাথ হাবিবা আজ বসতে যাচ্ছেন বিয়ের পিঁড়িতে। কসবা উপজেলার সোনাগাঁ গ্রামের বাসিন্দা পুলিশ কনস্টেবল মো. জাকারিয়া আলমের সঙ্গে দুপুরে হাবিবার বিয়ের আনুষ্ঠিকতা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এই বিয়ের আয়োজনে হাবিবার বাবা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান মেয়ের বিয়েতে কোনও ঘাটতি রাখছেন না।

এর আগে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনে বৃহস্পতিবার রাতে তার গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান শেষ হয়। গায়েহলুদ ও বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য সরকারি শিশু পরিবারের মাঠে বিশাল প্যান্ডেল সাজানো হয়েছে। প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয়েছে বিয়ের তোরণ। জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা এসব তদারকি করছেন।

শুক্রবার বিয়েতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন অনেক গণ্যমান্য ব্যহিক্তি। দুপুরে মহা ধুমধামের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে অনাথ শিশু হাবিবার। দুপুরে বিয়ের অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ আরও অনেকের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

হাবিবার বিয়ে উপলক্ষে কনের গলার হার, কানের দুল ও হাতের চুড়ি দেবেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। বর-কনের আবাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদরের সাংসদ র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বরের জামাকাপড়, কনের সোনার চেইন ও টেলিভিশন দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক। পুলিশে কনস্টেবল পদে বরের চাকরির ব্যবস্থা, বিয়ের সাজসজ্জা ও অতিথিদের খাবারের আয়োজন করেছেন পুলিশ সুপার। আর কনে সাজানোর দায়িত্ব পুলিশ সুপারের স্ত্রীর।

গত ১০ বছর আগে ‘অনাথ শিশু’ হিসেবে হাবিবার ঠাই হয় সরকারি শিশু পরিবারে। হাবিবার বতর্মান বয়স ১৮ বছর। জন্মের আগেই হাবিবার বাবা নুরু মিয়া মারা যান। চার বছর বয়সে মা খোদেজা বেগমও চলে যান না-ফেরার দেশে। ছয় বছর বয়সে মামা মোশারফ হোসেন ও মামি লুৎফা বেগম তাকে সরকারি শিশু পরিবারে রেখে আসেন। সেখানেই দীর্ঘ এক যুগ কাটিয়েছেন হাবিবা।

সরকারি শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক রওশন আরা বলেন, ‘মেয়েটির জন্য কিছু করার আমার এই ছোট ইচ্ছার বিষয়টি পরিপূর্ণতা পাওয়ায় মানসিক তৃপ্তি পাচ্ছি।’

হাবিবা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘আজ মা-বাবার কথা খুব মনে পড়ছে। তারা বেঁচে থাকলে হয়তো কোথাও আমাকে বিয়ে দিতেন। কিন্তু এমনভাবে হতো না। আমি এতিম ছিলাম। বাবার অভাব এভাবে পূরণ হবে ভাবিনি।’ সবার কাছে দোয়া চেয়ে শিশু পরিবারের অন্যদের বেলায়ও সমাজের সবাইকে এভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।

পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, ‘এই জেলার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সুশীল শ্রেণির সবাই বিয়েতে হাবিবার পাশে দাড়িয়েছে। হাবিবা আমাদের জন্য একটি উদাহরণ। আমরা চাইলেই একটি সাধারণ বিষয়কে অসাধারণ রূপ দিতে পারি। শুধু আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার। তাহলেই সবার পাশে আমরা দাড়াতে পারব।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...