রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কারাতের বিকল্প নেই।

Date:

Share post:

বর্তমান ও প্যান্ডামিক সিচুয়েশনে সবাই আতংকিত আছেন, ভয়ে আছেন। কিন্তু আমি বলব আতংকিত নয়, সচেতন হউন। কারণ সচেতনতাই আপনাকে যেকোন বিপদ ও মহামারি হতে রক্ষা করতে পারে।

এই পরিস্থিতিতে আমাদেরকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সেইফ থেকে সবাইকে একসাথে মোকাবেলা করে যেতে হবে। কোনোভাবেই করোনার কাছে হার মানা যাবে না। নিজের মনকে স্ট্রং রাখতে হবে, পজিটিভিটি গ্রো করতে হবে। পজেটিভিটি গ্রো করার মাধ্যমে আপনার ম্যান্টেলিটি স্ট্রং হবে। যার ফলে আপনার ইমিউন্যু সিস্টেম স্ট্রং হবে। আর করোনা প্রতিরোধের প্রথম ধাপই হচ্ছে ইমিউনিটি স্ট্রং রাখা। পাশাপাশি আমাদেরকে নিয়মিত বাসায় বসে ওয়ার্ম আপ বা শারীরিক ব্যায়াম করে যেতে হবে। কারণ শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যেমেও আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম স্ট্রং হয়।

ওযার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন ও দৈনিক মিনিমাম ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করতে বলেছেন। আমি সকলের উদ্দেশে বলব, দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট শারীরিক ব্যায়াম করুন। অভ্যাস না থাকলেও সপ্তাহে মিনিমাম ৪/৫ দিন ব্যায়াম করুন এতে শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক থাকবে, রক্ত জমাট বাধার পোসিবিলিটি থাকবেনা। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এতে ফুসফুস থেকে ব্যাকটেরিয়া দূর হয়, রক্তের শ্বেতকনিকা সুষ্ঠুভাবে প্রবাহিত হয়। ফলে এরা সহজে রোগ চিহ্নিত করে তা প্রতিরোধে কাজ করে।

তাছাড়া ফুসফুসে ঠিক রাখার জন্য কিছু ব্রিদিং এক্সারসাইজ প্রতিদিন সবারি করা উচিত। পাশাপাশি খাবারের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে হবে, সুষম খাবার অবশ্যই বেশি গ্রহণ করতে হবে। ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক শরীরে বেশি প্রয়োজন।

খাবারের তালিকায় অতিরিক্ত যা রাখতে পারেন :

সকালে নাস্তার সাথে দই রাখতে পারেন; কারণ এতে আছে উপকারি ব্যাকটেরিয়া প্রোবায়োটিক যা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল সংক্রমণ প্রতিরোধ করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

রসুন- নিয়মিত রসুন খেলে ইম্যুউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

লেবু, আদা, হলুদ, মধু ও উষ্ণ পানি :

এটা একটা দারুণ টনিক। হালকা উষ্ণ পানি অর্থাৎ গরম পানিতে লেবুর রস, মধু, আদা কুচি করে মধু মিশিয়ে খেলে উপকার হয়। এসব খাবারে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও এন্টিভাইরাল উপাদান এবং ভিটামিন সি রয়েছে। যা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

সর্বদা নিজের পজেটিভ থটস, ব্যায়াম এবং প্রোপার ডায়েটের পাশাপাশি আমরা দৈনিক ৩/৪ বার গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করব এবং গরম পানি, গরম চা, স্যুপ ইত্যাদি খাবার নিজের ডায়েট চার্টে রাখবো। সবকিছুর পাশাপাশি দৈনিক ৫ বার সৃষ্টিকর্তার কাছে নিজের সাক্ষাৎকার দিতেও ভুলবো না। মনে রাখতে হবে, আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে পারে একমাত্র পরম করুণাময় ও অসীম দয়ালু আল্লাহ্ তা’য়ালা।

চলুন রুখে দাঁড়াই করোনার বিরুদ্ধে। একসাথে লড়ে যাই। দেখিয়ে দেই আমরা শুধুই কারাতে ফাইটার নই, রিয়েল লাইফের ফাইটার। জয়ী আমরা হবোই ইনশা আল্লাহ্।

অনলাইনে কারাতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বলতে গেলে বলা যায়, যেহেতু সরকারি নির্দেশনায় স্কুল কলেজ বন্ধ ছেলে-মেয়েদের একাডেমিক কার্য্যক্রম বন্ধ রাখা যাবে না, আমার কারাতে স্কুলটি ও অনুরুপ। কারণ আমার ইনস্টিটিউটে ও বৎসরে ৩টি কারাতে পরীক্ষা হয়ে থাকে। সে পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের গ্রেডিং হয় এবং সাটিফিকেট দেয়া হয়। যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্রে কার্যকরি। তাছাড়া বর্তমান পেক্ষাপটে কারাতে অধিক গুরুত্ব বলে মনে করছি, কারণ এই মুহূর্তে সুস্থ্য থাকাটাই সবার কামনা এবং মূলব্রত।

অভিভাবকদের অভিযোগ ছেলে-মেয়েরা অলস হয়ে যাচ্ছে, ঘরে শারীরিক কোন ব্যায়াম করছে না। তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোসহ সেশনজটের কথা মাথায় রেখে আমি অনলাইন কারাতে প্রশিক্ষণ শুরু করি। অনলাইন কারাতে প্রশিক্ষণ নিতে সমস্যার কথা বলতে গেলে বলব, সরাসরি কথা বলা আর ফোনে কথা বলা যেমন ঠিক তাই। সরাসরি কথা বলে অনেক কিছু সমাধান করা যায়, যা ফোনে সম্ভব নয়। তারপরও বর্তমান সিচুয়েশন যেহেতু আমাদের প্রতিকূলে তাই কামারের দোকানে গিয়ে দা শান দেয়ার পরিবর্তে একটা শীল পাথর দিয়ে যতটুকু শান দেয়া যায়, তাই ভালো। কারণ একেবারে না করে ভুলে যাওয়ার চেয়ে লেগে থেকে অনেকটা শিখা সম্ভব।

অনলাইনে কারাতে প্রশিক্ষণ দিতে গেলে একটু পরিশ্রম বেশি হয় কারণ হাতে কলমে বিদ্যা, সরাসরি করলে ভুল হলে হাতে ধরে একবারেই ঠিক করে দেয়া যায়। অনলাইনে করতে গেলে একবারের পরিবর্তে অনেকবার দেখাতে হয় এবং স্টেপ বাই স্টেপ আস্তে আস্তে একাধিকবার নিজেকেও করতে হয়। তারপরও একেক করে ছেলে-মেয়েদের দৈনিক ব্যায়ামসহ কিছুটা সিলেবাস শেষ করা যায়। এতে একঘেয়েমিও কেটে যায়। কারণ দীর্ঘদিন বাসায় বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দৈনিক এ অনলাইনে কারাতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তারা কিছুটা খুব আনন্দের সময় কাটায়, কারণ ক্লাস সময়ে আনন্দসহ তাদের ব্যাচমেন্টদের সাথে দেখা ও কথোপকথন হয়। তাতে করে তাদের মন ভালো থাকে শরীর স্ট্রং হয়। শরীর যখন সুস্থ থাকে, মনে তখন জোর থাকে। শরীরে শক্তি ও সুস্থতারা ফলে যেকোন কিছু জয় করা সম্ভব হয়।

লেখা:এবি রনি
ফাউন্ডার এন্ড চীফ কোচ, বাংলাদেশ কিক ফাইটার কারাতে স্কুল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...