ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসন সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত ৪৩৩ শিক্ষার্থী ভর্তির পরও আবারও তিন ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি স্বীকার করে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ভর্তি করা হয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষের আগের দিন ২ মে দ্বিতীয় ও সপ্তম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। এরপর আগস্ট মাসে অষ্টম শ্রেণিতে একজন ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে।
এই ভর্তির বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসী বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জানুয়ারি মাসে আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ভর্তি করাননি। পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নির্দেশে তাদের (দুই জন) মে মাসে ভর্তি করা হয়েছে। আগের পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দিন ২ মে সভাপতি আশরাফ তালুকতাদের নির্দেশে ভর্তি করা হয়।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই তিন জনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ভর্তির অনুরোধ জানানো হলেও তা মন্ত্রণালয়ের জন্য বরাদ্দ ২ শতাংশ কোটার বাইরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘ভর্তিগুলো বার বার করে ফিরিয়ে দিয়েছি। তবে মন্ত্রণালয় বললে সেটা আদেশ হিসেবে গণ্য করতে হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশেই ভর্তি করা হয়েছে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখার প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ৪৪৩ জন অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তি করা হয়। অতিরিক্ত ভর্তির ঘটনায় এ বছরের শেষভাগে এসে আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কলেজ উইং। এরপর আরও তিন জনের ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়।
৪৪৩ জন অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তির অভিযোগের বিষয়ে আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম বলেন, ‘অতিরিক্ত ভর্তির সঙ্গে আমি জড়িত নই। পরিচালনা পর্ষদ ভর্তি করিয়েছে। ভর্তি ফরমে আমার কোনও স্বাক্ষর নেই। ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের কারও বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ না থাকলেও আমাকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ভর্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত বেসরকারি লোকজনের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ের আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ কম। যারা সরকারি সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। তবে ২০১৯ সালের অতিরিক্ত ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষক প্রতিনিধিরা জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গত নির্বাচিত কমিটির বিদায়ের পর অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খানকে দিয়ে অ্যাডহক কমিটি গঠন করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করা হচ্ছে।