বিশ্ব দরবারে জামাল খানকে তুলে ধরতে চান কাউন্সিলর শৈবাল

Date:

Share post:

খাস্তগীর স্কুের দেয়ালে টেরাকোটায় ব্িশবিরোধী আ্দোলন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত ইতিহাস, বার্ড জোন, সড়ক বিভাজক ও ডাস্টবিনের জায়গায় সবুজায়ন ইত্যাদি উন্নয়ন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে বিশ্ববাসী ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ড দেখতে আসবেন বলে মন্তব্য করেছেন কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন।

সম্প্রতি শ্রীলংকা-মালদ্বীপ সফর শেষে দেশে ফিরে সময় নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিশ্বমানের শহরের মতো জামালখানকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দেশ সফর করছেন জানিয়ে শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ইতিমধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারত, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশ ভ্রমণ করেছি। গত ৩০ নভেম্বর শ্রীলংকা-মালদ্বীপ যাই। লক্ষ্য ছিল কীভাবে তারা শহরটা সাজিয়েছে দেখার জন্য। তারা প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সবুজের সমারোহ এমনভাবে করছে যা পর্যটকদের আকর্ষণ করছে। বিমানবন্দর থেকে বের হলে অন্তত ২০ মিনিট সবুজের ভেতর পথচলা। সিঙ্গাপুরে তো মাইলের পর মাইল সবুজ। তবে তাদের সঙ্গে আমাদের পরিবেশগত কিছু পার্থক্য আছে। ‍তাদের বালু উড়ে না। আমাদের উড়ে। তাই আমাদের সড়কের গাছপালা বিবর্ণ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে উপলব্ধি হলো আমাদেরকে নিজস্ব পদ্ধতিতে কম খরচে সবুজায়ন করতে হবে।

কাউন্সিলর সুমন বলেন, নির্বাচিত হওয়ার পর জামালখান ওয়ার্ডে বহুমাত্রিক উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। ইতিমধ্যে চেরাগি পাহাড় গোলচত্বর, সড়ক বিভাজক, জামালখান সড়কের বিভাজকে (ডিভাইডার-মিড আইল্যান্ড), সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর সহায়তায় এমএ হাশেম চত্বরে পানির ফোয়ারা স্থাপন করে, গ্রীনল্যাজ ব্যাংক কলোনির ফটক, রামকৃষ্ণ মিশনের ‍সামনে এবং রহমতগঞ্জের জেএম সেন হলের ডাস্টবিনের জায়গায় বাসহ অনেক কিছু বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। বলতে গেলে এক বছর আগের জামালখানের সঙ্গে এখনকার জামালখানের পার্থক্য ে পড়বেই।

তিনি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম দৈনিক ‘আজাদী’র পৃষ্ঠপোষকতায় আমরা জামালখানের খাস্তগীর স্কুলের সীমানা প্রাচীরে টেরাকোটায় ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে বায়ান্ন, ছেষট্টি, ঊনসত্তর ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সবই থাকবে। বর্তমানে দেয়ালটিতে পোস্টার লাগিয়ে সৌন্দর্য নষ্ট করা হচ্ছে। এমনকি সিনেমার পোস্টারও লাগানো হচ্ছে। টেরাকোটা হলে শিশু-কিশোর ও তরুণরা সহজে ইতিহাস জানতে পারবে। তাদের মধ্যে দেশ জাগ্রত হবে।

জামালখান মোড়ে একটি বিশ্বমানের যাত্রীছাউনি করবেন জানিয়ে শৈবাল দাশ সুমন বলেন, ৩০০ ‍ফুট দীর্ঘ গার্ডেনিংয়ের পর ৩৫ ফুটের একটি যাত্রীছাউনি করবো। যেখানে থাকবে একটি ফ্রি বুকস্টল, একটি কফিশপ, ২০ জন যাত্রীর বসার ব্যবস্থা। একটি এলইডি টিভিতে দেশি চ্যানেল ও ভূ-প্রকৃতি বিষয়ক বিদেশি চ্যানেলগুলো প্রদর্শন করা হবে। থাকবে পুরুষ ও নারীর জন্য পৃথক দুটি টয়লেট।

কাউন্সিলর সুমন বলেন, পুরো জামালখানের ফুটপাত পেপ টাইলস করার পরিকল্পনা আছে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী আসকার দীঘিকে চমৎকার একটি ওয়াটার পার্ক হিসেবে গড়ে তোলা যায়। এটি সংস্কার করে এলাকাবাসীর পানি সংকট নিরসন করা যায়। এক্ষেত্রে সিডিএ, সিটি করপোরেশন ও দীঘির মালিকপক্ষ সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ নিতে পারে। নয়তো এটি র প্রজনন ক্ষেত্র ও আবর্জনার ভাগাড়ই থেকে যাবে।

তিনি বলেন, জেএম সেন হল এলাকায় প্রতিদিন শত শত পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। মাস্টারদা ও সহযোদ্ধাদের আবক্ষমূর্তি দেখতে আসেন পর্যটকরা। বড় উৎসব-ে লক্ষাধিক লোকের সমাগম হয়। কিন্তু দুটি ডাস্টবিন ছিল সবার জন্য যন্ত্রণাদায়ক। তাই ডাস্টবিন দুটি ভেঙে ৩০০ ফুট এলাকায় বাগান করার উদ্যোগ নিয়েছি। জামালখানের পিডিবি স্টাফ কোয়ার্টারের সীমানা প্রাচীরসংলগ্ন বড় নালাটি ছিল ছিনতাইকারীদের পালিয়ে যাওয়ার পথ। আমি সেখানে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে স্ল্যাব জমিয়ে পাঁচ ফুট প্রস্থ ও ৩০০ ফুট দীর্ঘ একটি বার্ড জোন করার উদ্যোগ নিয়েছি। এখানে শিশু-কিশোর ও ছাত্রছাত্রীরা দেশি পাখির সঙ্গে িত হতে পারবে। পথচারীরা চলতি পথে নির্মল বিনোদন পাবে। স্মরণিকা কমিউনিটি সেন্টারের মালিককে তাদের ফটকের সামনের চত্বরটি সাজানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শুধু দৃশ্যমান পরিবর্তন নয়, এলাকাবাসী তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে শৃঙ্খলা, বিনোদন ও প্রয়োজন যাতে মেটাতে পারে সে লক্ষ্যে ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছেন জানিয়ে কাউন্সিলর সুমন বলেন, ইতিমধ্যে আটটি হট স্পটকে ওয়াইফাই জোনে পরিণত করেছি। ডিসি হিলে স্থায়ী সাউন্ড সিস্টেম ব্যবস্থা চালু করছি। যেখানে অনুষ্ঠান না থাকলে সকাল ছয়টা থেকে নয়টা ও বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দেশাত্মবোধকসহ বাংলা গান বাজবে। ইতিমধ্যে ৩২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে পুরো ওয়ার্ডকে কঠোর নজরদারির আওতায় নিয়ে এসেছি। বহুতল ভবনের মালিকদের সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে উদ্বুদ্ধ করছি। কুসুম কুমারী স্কুলের ছাত্রীদের আসা-যাওয়ার বিষয়টি দেখভালের জন্য ফিঙ্গারিং পদ্ধতিতে ডিজিটাল হাজিরা চালু করেছি।

তিনি বলেন, এলাকাবাসীর নিত্য অভিযোগ যানজট নিয়ে। এক্ষেত্রে আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বাসা-বাড়িতে স্কুল, কোচিং সেন্টার, বহুতল ভবনের নিচতলায় পার্কিংয়ের জায়গার বাণিজ্যিক ব্যবহার, র ওপর গাড়ি দাঁড় করানো এবং ট্রাফিক পুলিশ না থাকাটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা। এসব বিষয়ে এলাকাবাসীর পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে মেয়র মহোদয়ের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

নকল সরবরাহ করতে গিয়ে ছাত্রদল নেতা আটক

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এইচএসসি পরীক্ষায় নকল সরবরাহের সময় মৃদুল হাসান নামের এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই)...

আমি সৌদিতে দারুণ সময় কাটাচ্ছি, আজীবন সৌদিতেই থাকতে চাই : রোনালদো

বিভিন্ন সময় গুঞ্জন উঠেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ বা লাতিন আমেরিকার কোনো ক্লাবে পাড়ি জমাতে পারেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিন্তু সব...

ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণ, নিহত ৩৪

ভারতে একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয়...

জুলাই আন্দোলন দমাতে ৩ লাখ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়

জুলাই আন্দোলন দমনে সারা দেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী। এর মধ্যে শুধু...