নক্ষত্রের অস্বাভাবিক রশ্মি নিয়ে ধন্দে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

Date:

Share post:

নাসার জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কিছুটা ধন্দে পড়েছেন। দূর মহাকাশে একটি নিউট্রন নক্ষত্র থেকে বিকিরিত অস্বাভাবিক উজ্জ্বল ইনফ্রারেড বা অবলোহিত রশ্মি তাঁদের নতুন এক ভাবনায় ফেলেছে।

পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপিত নাসার হাবল টেলিস্কোপ থেকে তোলা ছবিতে এই অস্বাভাবিক ঘটনা ধরা পড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের দল মনে করছে, অতি ভারী নিউট্রন নক্ষত্রের পরিণতি কোন দিকে গড়ায়, এ থেকে তার কিছু ধারণা পাওয়া যাবে।

সুপারনোভার মাধ্যমে যখন বিশাল আকৃতির নক্ষত্রগুলোর মৃত্যু ঘটে, তখন সেই নক্ষত্র তার সমস্ত বস্তু নিয়ে নিজের ভেতরেই নিজে আছড়ে পড়ে। এই আছড়ে পড়া কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি তখন অতি উচ্চগতিতে বনবন করে ঘুরতে থাকে আর তা থেকে স্পন্দনের মতো বিকিরণ নির্গত হয়। এ জন্য এগুলোর আরেকটি নাম পালসার।

নিউট্রন নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করা হয় সাধারণত এক্স-রে টেলিস্কোপ ও বেতার তরঙ্গ টেলিস্কোপ ব্যবহার করে। এখন অবলোহিত রশ্মিও যদি এগুলোর মধ্য থেকে নির্গত হয়, সে ক্ষেত্রে এগুলোকে পর্যবেক্ষণের নতুন একটি জানালা খুলে যাবে।
যে নক্ষত্রটি থেকে অবলোহিত রশ্মি পাওয়া গেছে, সেটির কেতাবি নাম আরএক্স জে ০৮০৬.৪-৪১২৩ আর সেটা পালসারের এমন একটি দলের সদস্য, যে দলকে দ্য ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেন বা সাত জাঁদরেল নামে ডাকা হয়। বয়সের অনুযায়ী যতটা উত্তপ্ত থাকার কথা, এগুলো তার চেয়ে অনেক উত্তপ্ত। অর্থাৎ এগুলো অনেক দুরন্ত।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই আছে। কিন্তু ধন্দ লাগছে এটির অস্বাভাবিক উজ্জ্বলতা নিয়ে। গবেষকেরা অনুমান করছেন, এই বাড়তি উজ্জ্বলতার পেছনে বাড়তি কোনো কারণ থাকতেই হবে। না হলে ব্যাখ্যা করা মুশকিল।

এই উজ্জ্বল বিকিরণ শনাক্ত করেছে বিজ্ঞানীদের যে দল, তার নেতৃত্বে আছেন অধ্যাপক বেটিনা পোসেল্ট। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই জ্যোতির্বিজ্ঞানী বলেন, একটা তত্ত্ব হলো, সুপারনোভার পর নক্ষত্রটির চারপাশে বস্তুরাজি এসে জড়ো হয়েছে। সেগুলো একটি চাকতির মতো আকার নিয়ে ঘুরছে। দুটির মধ্যে টানাপোড়েনে পালসার নক্ষত্রটি উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে কমে গেছে এটির ঘূর্ণনের গতি।

এই অনুমান সত্যি হলে নিউট্রন নক্ষত্রের বিকাশ ও পরিণতি সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের পুরোনো ধারণায় পরিবর্তন আসবে।

দ্বিতীয় আরেকটি তত্ত্ব হলো এটির পেছনে ক্রিয়াশীল পালসার ঝড় নীহারিকা। এটিতে বলা হচ্ছে, নক্ষত্র থেকে ছুটে আসতে থাকা চার্জিত কণিকাগুলো মহাকাশে ছড়িয়ে থাকা গ্যাসের সঙ্গে ঘর্ষণ লেগে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং অবলোহিত রশ্মি ছড়াচ্ছে।

সত্যিকারে কী ঘটছে, তা জানতে হলে বিজ্ঞানীদের নতুন আরেকটি টেলিস্কোপ বসানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র: ব্রিটিশ অনলাইন পত্রিকা দ্য ইনডিপেনডেন্ট

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...

চিত্র নায়িকা নিপুণ চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তিনি। জানা গেছে,...