শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয় তারপর একের পর এক ইনজুরিতে সংশয়ে থাকা বাংলাদেশ অবশেষে জয় দিয়েই যাত্রা শুরু করলো এশিয়া কাপ টুর্নামেন্টের।
শনিবার দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কাকে ১৩৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে টাইগাররা।
বিদেশের মাটিতে এটাই বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে বড় জয়। এছাড়া শ্রীলঙ্কাকে এতো বড় ব্যবধানে হারানো এটাই প্রথম।
এর মাধ্যমে সেমি ফাইনালে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে এক ধাপ এগিয়ে গেলো মাশরাফি বাহিনী।
সবকটি উইকেট হারিয়ে তিন বল হাতে রেখেই নিজেদের প্রথম ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিমের এক অনবদ্য ইনিংসের ওপর ভর করে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ২৬১ রান।
পরের ইনিংসে মাত্র ৩৫.২ ওভারে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে যায় ১২৪ রানে।
এদিকে কবজিতে ইনজুরি নিয়েই ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তামিম ইকবাল।
চোট নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলেও পরে মুস্তাফিজ আউট হওয়ার পর শেষদিকে হাতে ব্যান্ডেজ নিয়েই মাঠে নেমে পড়েন তিনি।
এক হাতে ব্যাট করে দলকে আগলে রাখার চেষ্টা করেছেন এই টাইগার ক্রিকেটার।
যা মুগ্ধ করেছে গ্যালারির হাজারো দর্শক ও সতীর্থদের।
ব্যাটিংয়ে দুর্বল সংগ্রহে ধুকতে থাকা বাংলাদেশের দলীয় সংগ্রহের অর্ধেকের বেশি এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। হাতে প্লাস্টার নিয়ে তামিম সঙ্গ দেন তাকে।
সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মুশফিক তার ব্যাটে একের পর এক রানের ঝড় তোলেন। দলের জন্য নিয়ে আসেন একটি চ্যালেঞ্জিং স্কোর।
ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটা এসেছে দুবাইয়ের এই মাঠ থেকেই। পরে ১৫০ বলে ১৪৪ রানে বিদায় নেন তিনি।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচের কৃতিত্ব অর্জন করে মুশফিকুর রহিম।
দ্বিতীয় ওভারে কুশল মেন্ডিসকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মোস্তাফিজ। প্রথম বলেই বিদায় নেন লঙ্কান ওপেনার।
পরের ওভারে মাশরাফির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ ওপেনার উপল থারাঙ্গা।
তার পরের ওভারে এলবিডাব্লিউতে মাঠ ছাড়তে হয় ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে।
স্কোরবোর্ডে কোন রান করার আগেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান তিনি।
পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে শ্রীলঙ্কার চতুর্থ উইকেট কুশল পেরেরাকে ১১ রানে এলবিডাব্লিউ করেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
তখন শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল মাত্র ৩৮ রান। এ অবস্থায় ম্যাথিউস-সানাকা জুটি প্রতিরোধ গড়তে চাইলেও সাকিব আল হাসানের ছুড়ে দেয়া বলে রান আউটে দুসাই সানাকাকে ফেরান মিরাজ।
ঠিক এর পরের ওভারেই রুবেলের হাতে ইনিংসের প্রথম বল তুলে দেন মাশরাফি। দ্বিতীয় বলেই অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে ১৬ রানে এলবিডাব্লিউ করেন রুবেল।
এরপর মিরাজের বলে রুবেল ধরেন থিসারা পেরেরার ক্যাচ।
এরপর দিলরুয়ান পেরেরা সঙ্গে জুটি বেধে লাকমল কিছুক্ষণ প্রতিরোধ করলেও বেশিক্ষণ তা টেকেনি। ২০ রানে মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন লাকমল।
এ পর্যায়ে জয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। লক্ষ্য ছিল ব্যবধান কমানো।
মোসাদ্দেক হোসেনের বলে স্ট্যাম্পিং হয়ে লিটন দাসের ক্যাচে ২৯ রানে ফিরে যান দিলরুয়ান পেরেরা।
পরের ওভারে সাকিবের বলে নাজমুল ক্যাচ ধরে ফিরিয়ে দেন আপোনসোকে।
শেষ পর্যন্ত ৩৫.২ ওভারে ১২৪ রানে থেমে যান হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি, মোস্তাফিজ ও মিরাজ। এছাড়া সাকিব, রুবেল এবং মোসাদ্দেক নিয়েছেন একটি করে উইকেট।