লীগ টেবিলের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা আবাহনী। একের পর এক চোখ লাগানো পারফর্মেন্সের মাধ্যমে কাড়ছে দর্শকদের নজর। শিরোপার দৌড়ে নিজেদের আরেকটু সুরক্ষিত পর্যায়ে রাখতে দ্বিতীয় পর্বের জন্য তারা উড়িয়ে আনে ওয়েলশ ফুটবলার জোনাথান ডেভিড ব্রাউনকে। এসেই অভিষেক ম্যাচে জোড়া গোল করেন। এক সময়ে ইউরোপে দারুন প্রতিভার মাধ্যমে সাড়া জাগানো এই ফুটবলারকে নিয়ে দলের মানটাই শুধু বাড়ায়নি আকাশী নীলরা যোগ করেছে বাংলাদেশের ক্লাব ফুটবলে তারকাদের মাঝে আরো একটি উজ্জ্বল নাম।
২৬ বছর বয়স্ক জোনাথান ক্লাব ভবনের বারান্দায় হাসি মাখা এক মুখে বলছিলেন বিভিন্ন কথা। তার কাছে বাংলাদেশের মানুষেরা প্রচুর বন্ধুসুলভ এবং এখানকার খাবার তার পছন্দ। যদিও চট্টগ্রামের মশলাদার ঝাঁজালো তরকারি খেয়ে নাকি পেটে ব্যাথা উঠেছিলো একদিন। দর্শক সংখ্যা নিয়ে খানিকটা আক্ষেপ করলেও বললেন, “দর্শক সংখ্যা খানিকটা কম তূলনামূলকভাবে। কিন্তু যারা খেলায় কিংবা ট্রেইনিংয়ে আসেন তারা বেশ ফুটবলপ্রেমি। অনেকেই আমাকে দেখলে ছবি তুলার অনুরোধ করে এবং আবদার করে লীগ জিতিয়ে আনার। এইটাই বুঝিয়ে দেয় সকলে এইখানে খেলাটাকে কতটা ভালোবাসে!”
আলোচনার এক পর্যায়ে আসে তার পুরোনো দিনের কথা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি প্রথম ডাক পেয়ে যান ইংল্যান্ডের অন্যতম সেরা ক্লাব লিভারপুলের যুব একাডেমিতে। কিন্তু ফিফার নিয়মের কারনে তাকে থাকতে হয় ওয়েলসেই কারন একজন ১৬ বছরের নিচের খেলোয়াড় বাড়ির থেকে পনেরো কিলোমিটারের বেশি দূরের ক্লাবে খেলার অনুমুতি পায় না। এই কারনে লিভারপুলের ইচ্ছাতেই তাকে রাখা হয় কার্ডিফ সিটিতে। সেখানে থাকার এক পর্যায়ে এই ফরোয়ার্ড লিভারপুল সহ ম্যাঞ্চেস্টার সিটি ও ইউনাইটেডে আসার সুযোগ পান কিন্তু সিদ্ধান্ত নেন কার্ডিফের মূল দলে যায়গা করে নেওয়ার। সেই আশা পূরন হয় পাশাপাশি খেলেন ওয়েলসের বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে, খেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা গ্যারেথ বেলের সাথেও।
কিন্তু আসতে আসতে প্রতিভা থাকা সত্তেও খানিকটা পিছিয়ে পড়েন। শেষে ব্রিটেন ছেড়ে পাড়ি জমান এশিয়ায়। অস্ট্রেলিয়া ও থাইল্যান্ড ঘুরে এখন এসেছেন বাংলাদেশে। ইউরোপে অন্যতম এক নাম হওয়ার আশা জাগিয়ে এখন দক্ষিন এশিয়ার ক্লাবে খেলেও তার মাঝে নেই কোনো আক্ষেপ। ফুটবলটাকে দেখেন একটা চ্যালেঞ্জিং খেলা হিসেবে তাই বিশ্বের বিভিন্নপ্রান্তে যেয়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে ভালো করাটাকেই নিজের সাফল্য হিসেবে নেন।
বর্তমানে তার সামনে চ্যালেঞ্জ আবাহনীকে লীগ জেতানো। পারফর্মেন্স ও পয়েন্ট টেবিল বলছে শিরোপা জয়ে এক পা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশের আধুনিক ফুটবলের জনকরা। এখন দেখার পালা দ্বিতীয় পাটি দিতে দলের হয়ে কি রকম ভূমিকা রাখেন তিনি।