মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা শিশুদের লেখাপড়া করবার ব্যবস্থা কি?

Date:

Share post:

ইউনিসেফ বলছে বাংলাদেশে যত রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে তার ৬০% ই শিশু

জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ বলছে, গত ২৫ শে অগাস্টের পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে যত রোহিঙ্গা শরণার্থী এসেছে তার ৬০% ই শিশু।

প্রাণ হাতে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসার আগে এরা দমন পীড়নের যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গেছে, সেখানে বিনোদন, খেলাধুলা, শিক্ষা ইত্যাদির জায়গা কোথায়?

কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ইউনিসেফ অবশ্য ২২৮টি লার্নিং সেন্টার করে ইংরেজি ও বার্মিজ ভাষায় রোহিঙ্গা শিশুদেরকে অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষা দিচ্ছে।

কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের এরকম একটি লার্নিং সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দল বেঁধে তারা গাইছে ‘উই শ্যাল ওভারকাম’।

পাহাড়ের উপরে সারি সারি পলিথিনে ছাওয়া বস্তিঘরের মাঝে এটি একটি অনানুষ্ঠানিক স্কুল।

এরপর তারা জনপ্রিয় সব ইংরেজি ছড়া সমস্বরে আবৃত্তি করল। অতঃপর তারা আবৃত্তি করলো আমার অজানা একটি ভাষায় কয়েকটি ছড়া।

উপস্থিত প্রশিক্ষক জানালেন, এগুলো বার্মিজ ভাষার ছড়া।

এই লার্নিং সেন্টারে, মূলত ইংরেজি, গণিত ও বার্মিজ ভাষা শিক্ষা দেয়া হয় বলে জানালেন সেন্টারটির প্রোগ্রাম অর্গানাইজার হুমায়ুন কবির।

এদেরকে এই বার্মিজ ভাষা শেখানোর জন্য শরণার্থী রোহিঙ্গাদের মধ্যে থেকেই বেছে নেয়া হয়েছে এই ভাষা জানা শিক্ষক।অনেক শিশু এসেছে অন্য পরিবারের সাথে

প্রতিটি শিফটে ৩৫ জন শিশু। ৪ থেকে ৬ বছর বয়েসি এক দল। আরেক দল ৭ থেকে ১৪ বছর বয়েসিদের। প্রতিদিন তিনটি শিফটে মোট একশো পাঁচজন করে শিক্ষার্থীকে পাঠগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে এখানে।

এখানে পড়তে এসে কেমন লাগছে তাদের?

শিশুরা বাংলাতেই বললো, “ভাল লাগছে”।

অর্থাৎ এ কদিনে তারা সবার বোধগম্য বাংলাটাও শিখে গেছে। এতদিন তারা কথা বলত চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের আঞ্চলিক ভাষায়।

ইউনিসেফ কর্মকর্তা ফারিয়া সেলিমের ভাষায়, শরণার্থীর কঠিন জীবনে এই লার্নিং সেন্টারগুলো হচ্ছে শিশুদের ‘ব্রিদিং স্পেস’ বা নিঃশ্বাস নেবার জায়গা।

সব মিলিয়ে ১৯ হাজার শরণার্থী শিশু এই লার্নিং সেন্টারগুলোতে শিক্ষা নেবার সুযোগ পাচ্ছে।

কিন্তু একটি বিরাট সংখ্যক শিশুই তাদের শরণার্থীর দিনগুলোতে কোনরকম কোন শিক্ষা পাচ্ছে না।

ইউনিসেফ অবশ্য বলছে, তারা আগামী ছ’মাসে লার্নিং সেন্টারের সংখ্যা ১৫শতে উন্নীত করতে চায়, যেখানে অন্তত দুই লাখ শিশু এই অনানুষ্ঠানিক প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ পাবে।

আর সেটা হলে হয়তো বেশীরভাগ রোহিঙ্গা শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়ার বিষয়টি হয়তো নিশ্চিত হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...