‘টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখনো অনেক পিছিয়ে’

Date:

Share post:

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশের বোলাররা একেবারেই সুবিধে করতে পারছেন না। প্রথম টেস্টে অনিয়মিত বোলার মমিনুল হক তিনটি উইকেট পেয়েছেন – সেটা ছাড়া স্বীকৃত বোলাররা সবাই দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের রান বন্যা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন – ব্যর্থ হয়েছেন যথেষ্ট সংখ্যক উইকেট নিতেও।

ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশের পেস বোলাররা এবং স্পিনাররাও।

প্রথম টেস্টে যেমন, দ্বিতীয় টেস্টেও তাই।

দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম দিন দক্ষিণ আফ্রিকার দুই ওপেনার ২৪৩ রান তোলেন প্রায় ওওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করে ৫৪ ওভারের মধ্যে।

অথচ ওই একই উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার মর্নে মরকেল, কাগিসো রাবাদা, বা স্পিনার কেশব মহারাজ এরা সবাই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের একের পর এক সাজঘরে ফেরত পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশের বোলাররা তাদের কোন সমস্যায় ফেলতে পারছিলেন বলে মনেই হয় নি।

অথচ এই বাংলাদেশী বোলাররাই সম্প্রতি দেশের উইকেটে বেশ ভালো বল করছিলেন, ম্যাচ জেতাচ্ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় না হয় দলে সাকিব আল হাসান নেই, কিন্তু বাকি বোলারদের কি হলো? তাদের এ অবস্থা কেন?

এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক ও উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান খালেদ মাসুদ পাইলট বলছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার সফরটা এ জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল যে – আমরা সত্যি কোথায় আছি এই সফরে তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে। কিন্তু এবার এটা স্পষ্ট হলো যে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং-বোলিং সব ক্ষেত্রেই আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে আছি, আমাদের আরো অনেক উন্নতি করতে হবে।

“আমাদের পেস-বোলিং অলরাউন্ডার নেই। আমাদের অল-রাউন্ডাররা সবাই স্পিনার-অলরাউন্ডার।”

“আমাদের বোলাররা ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খুবই কম খেলে। আমাদের মনোযোগ ওয়ানডে আর টি২০র দিকে।”

“আমাদের বোলার মুস্তাফিজ ছোট পরিসরের ক্রিকেটে এবং যেসব উইকেটে স্পিন ধরে সেখানে ভালো। কিন্তু বিপক্ষের ব্যা্টসম্যানরা সবাই এখন মুস্তাফিজের বোলিং খব ভালোভাবে বুঝে ফেলেছে। টেস্ট ম্যাচে – যেখানে তাকে ২০-২৫ ওভার বল করতে হয় – সেখানে তার অস্ত্রগুলো কি তা ব্যাটসম্যানরা জেনে গেছে।”দক্ষিণ আফ্রিকা দলে যারা খেলছে না বা বাদ পড়েছে – তেমন বোলাররাও বাংলাদেশ দলের অন্যান্য বোলারদের চেয়ে জোরে বল করে। ঐতিহাসিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পেস বোলারের কোন অভাব নেই। ঘন্টায় ১৩৫-১৪০ মাইল গতির বল তাদের ব্যাটসম্যানদের কাছে স্বাভাবিক।”

“কিন্তু যেমন ভারতের পেস বোলাররা গতির দিক থেকে তেমন বেশি না হলেও তাদের ফার্স্টক্লাস ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা অনেক বেশি, তারা অনেক পরিণত। আমার মনে হয় বাংলাদেশের টেস্টে ভালো করতে হলে চার দিনের ক্রিকেট বা ফার্স্টক্লাস ক্রিকেট আরো বেশি খেলা উচিত।”

বাংলাদেশের ক্রিকেট কাঠামো এখন যেমন তাতে আগামিতে চারদিনের ক্রিকেট আরো বেশি খেলার অবকাঠামো গড়ে উঠবে – এমন আশা কতটা?

খালেদ মাসুদ পাইলট জবাবে বলেন তিনি খুব আশাবাদী নন।

“আমরা খুবই ভাগ্যবান যে তামিম, শাকিব, মুশফিক, বা মাহমুদুল্লাহ মতো কয়েক জন খেলোয়াড় এখন বাংলাদেশের আছে। কিন্ত তারা যখন রিটায়ার করবেন তখন একটা শূন্যতা তৈরি হবে। তাই এখন থেকেই পরিকল্পনা দরকার।

“কিন্তু বাস্তবে এমন হচ্ছে যে বাংলাদেশের ফাস্টংক্লঅস ক্রিকেটে অনেকগুলো চারদিনের ক্রিকেট ম্যাচ হতেই পারে নি কারণ যে মাঠগুলোতে খেলার কথা ছিল সেগুলো সামান্য বৃষ্টিতেই নষ্ট হয়ে যায়। সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে বৃষ্টি হয় জানা থাকলেও মাঠ ঢেকে রাখার কোন ব্যবস্থাই ছিল না।”

তার মতে, এ থরণের দীর্গমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব তিনি সবসময়ই অনুভব করেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...