রোহিঙ্গা শরণার্থীর চাপে টেকনাফ ও উখিয়ার হাজার হাজার একর বনভূমি সাফ

Date:

Share post:

সামনে শরণার্থীর ঢল। পেছনে পাহাড়ী বনাঞ্চল সাফ করে শরণার্থী শিবির।

মিয়ানর থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা লক্ষ-লক্ষ রোহিঙ্গার জন্য সাময়িক আশ্রয় তৈরি করতে উখিয়া এবং টেকনাফের বনভূমির উপর চাপ তৈরি হয়েছে ে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও এক টুইট বার্তায় সমস্যাটি তুলে ধরেছেন।

িভাগ বলছে, গত একমাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য অস্থায়ী আবাস নির্মাণের জন্য বনভূমির ২০০০ একর জমি বরাদ্দ করা হয়েছে। এসব জায়গায় প্রাকৃতিক ভা গড়ে উঠা বনের পাশাপাশি রোপণ করা গাছও ছিল, যেগুলোর বয়স দুই থেকে পাঁচ বছর।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব ফরেষ্ট্রি এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সের অধ্যাপক ড: দানেশ মিয়া কক্সবাজার অঞ্চলের বনভূমি নিয়ে গবেষণা করেছেন।

তিনি বলছেন, নতুন আসা রোহিঙ্গারা ২৮টি পাহাড়ে তাদের বসতি তৈরি করেছে। পাহাড় কেটে বনভূমিতে বসতি তৈরি করায় প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে।

“বাংলাদেশে এখন টেকনাফ এরিয়াতে কিছু হাতি রয়ে গেছে। এ হাতিগুলোকে রক্ষার জন্য অনেক চেষ্টা সেখানে হয়েছে। এখন রোহিঙ্গারা আসার পরে সে চেষ্টা কাজে লাগছে বলে আমার মনে হয়না,” বলছিলেন অধ্যাপক দানেশ মিয়া।

রোহিঙ্গা বসতি নিয়ে বনভূমির উপর চাপ তৈরি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে সরকারের মনেও া চিন্তা রয়েছে।সরকার বলছে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে থাকতে হলে বঙ্গোপের কাছে একটি চরে তাদের থাকার া করা হবে।

বনভূমির উপর যে চাপ তৈরি হয়েছে সেটিকে ‘সাময়িক ক্ষতি’ হিসেবে বর্ণনা করছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

বন বিভাগের কক্সবাজার দক্ষিণের কর্মকর্তা আলী কবির বলছেন, এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের বন বিভাগের বরাদ্দ করা ২০০০ একর জমিতে একত্রে রাখা হবে।

লক্ষ-লক্ষ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়ার বিষয়টিকে বাংলাদেশ সরকারসহ অনেকেই মানবিক দৃষ্টিতে দেখছে। বন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানবকিতার পাশাপাশি বনভূমির কথা ভুলে গেলে চে না।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দানেশ মিয়া মনে করেন, পরিবেশ এবং বনভূমির কথা চিন্তা করলে রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করতে পারলে বনভূমির উপর চাপ কমবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

অধ্যাপক মিয়া বলেন, “সবাইকে রান্না করে খেতে হচ্ছে। এক লক্ষ লা যদি থাকে, সেই এক লক্ষ চুলার জন্য প্রতিদিন যদি ন্যতম পাঁচ কেজি জ্বালানি ধরি, তাহলে প্রতিদিন পাঁচ লক্ষ কেজি কাঠ পুড়ছে। এগুলো কোন না কোনভাবে আমাদের উখিয়া টেকনাফের জঙ্গল থেকে যাচ্ছে।”

বিকল্প জ্বালানির ব্যবস্থা করা গেলে রোহিঙ্গারা জ্বালানি সংগ্রহের জন্য বনে-জঙ্গলে আসতো না বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বনবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলে উখিয়া ও টেকনাফের জায়গাগুলোতে আবারো বনায়ন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সব পর্যায়ের পদে স্থগিত

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপির দুপক্ষে সংঘর্ষের ঘটনার পরপরই কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সব পর্যায়ের পদে স্থগিতাদেশ...

৪ বাতি-ফ্যান ও এক ফ্রিজ চালিয়ে বিদ্যুৎ বিল ১১ লাখ টাকা!

প্রতি মাসে পাঁচ-ছয়শ টাকার বিদ্যুৎ বিল দিয়ে আসছিলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার খলারটেক গ্রামের ঝালমুড়ি বিক্রেতা আবদুল মান্নান (৫৫)।...

‘ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক নয়’, সাফ জানাল সৌদি আরব

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে...

বিমানের দাম্মামগামী ফ্লাইট মাঝ আকাশ থেকে ফেরত এলো ঢাকায়

যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-দাম্মাম রুটের একটি ফ্লাইট মাঝ আকাশ থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফেরত...