ভারতের টেলিভিশনে এ মুহূর্তে চলতি অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটে সিরিজের অনেক বিজ্ঞাপন চলছে। তবে লক্ষণীয় যেটা তাহলো কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই এই সিরিজে, পাঁচটি একদিনের ম্যাচ যা রোববার শেষ হয়েছে। তারপর তিনটি টি২০ ম্যাচ।
নতুন ক্রিকেট মৌসুমে ভারত দেশের মাটিতে মাত্র তিনটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে এবার, যেখানে গত মৌসুমেও তারা খেলেছিল ১৩টি ম্যাচ। টেস্ট ক্রিকেটের ক্ষুধা কি একেবারেই চলে যাচেছ ভারত থেকে?
কলকাতায় ক্রিকেটে লেখক মুদার পাথারিয়া বিবিসিকে বলছিলেন ভারতের ক্রিকেট কর্মকর্তারাও দিন দিন টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
“এখন বড় প্রশ্ন হচ্ছে আপনি কি লঙ্গার ভার্শন ক্রিকেটকে বাঁচিয়ে রাখতে চান কি চাননা? আমার মনে হয় ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের ভেতর এখন সেই স্পৃহা নেই। তারা শুধু এমন ফরম্যাটের ক্রিকেট নিয়ে আগ্রহী যা থেকে পয়সা আসবে।”
তাহলে আগামী ২০ বছর পর কি ইডেন গার্ডেনসে টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেট হবে?
মি পাথারিয়া মনে করেন সেটা সম্ভব যদি টেস্ট ম্যাচ ক্রিকেটে “ওভারের সংখ্যা কমিয়ে আনা যায়। যদি দিন-রাতের টেস্ট ম্যাচ হয়, বলের রং যদি লাল না হয়ে গোলাপি হয় এবং প্রতিটি উইকেট পতনের পর মাঠে তামাশার ব্যবস্থা হয়।”
আসলে আইপিএলের কল্যাণে বা কারণে- যেভাবেই বলা হোক না কেন – ভারতে ক্রিকেটের সাথে এখন ধুম ধাড়াক্কা, আতস বাজি, নাচ-গান, বলিউড তারকা — এসব বিনোদন যোগ হয়েছে।
সাবেক ক্রিকেটার দেভাং গান্ধি কলকাতায় একটি ক্রিকেট ক্লাব চালান। ক্লাবের ট্রেনিং গ্রাউন্ডে তিনি বিবিসিকে বলেন, এমনকী অভিভাবকদেরও কোনো আগ্রহ নেই যে তাদের ছেলেরা টেস্ট ক্রিকেট খেলুক।
“অভিভাবকরাও এখন চান তাদের ছেলেরা যেন টি-২০ ক্রিকেট খেলে আইপিএলে সুযোগ পায়, কারণ হচেছ টাকা। কিন্তু এই বাচ্চারা সব ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলতে প্রস্তুত। সুতরাং অভিভাবকদের পক্ষ থেকে সঠিক পথনির্দেশ খুবই প্রয়োজন।”
আসলেই কি ভারতে টেস্ট ক্রিকেট হুমকিতে পড়েছে? কলকাতায় ক্রিকেট সাংবাদিক গৌতম ভট্টাচার্য বলছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত হলেও সত্যিই ভারতে টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
তিনি বলছেন, টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে এবং টিভিতে দর্শক দিন দিন এতটাই কমছে যে টেলিভিশন ব্রডকাস্টারকে ইদানীং রীতিমত ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
কীভাবে দর্শক ফেরানো সম্ভব? মি ভট্টাচার্য বলছেন- যদি টেস্ট ক্রিকেটে গতি আনা যায়, সময় কমানো যায় এবং ভিরাট কোহলির মত তারকারা যদি টেস্ট ক্রিকেটের পক্ষে কথা বলতে থাকেন, তাহলে হয়তো কিছুটা কাজ হতেও পারে।২০১৪ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলের হারার পর হতভম্ব ব্রাজিলের সমর্থকবৃন্দ
দুঃস্বপ্ন কাটাতে পেরেছে ব্রাজিল?
২০১৪’র ফুটবল বিশ্বকাপে নিজের মাটিতে জার্মানির কাছে ৭ – ১ গোলে হারার সেই দুঃস্বপ্নের ম্যাচটি ব্রাজিলের ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে লজ্জার ঘটনা। অবশ্য হালে চিচি কোচ হিসাবে দায়িত্ব নেয়ার পর ব্রাজিল অনেকটা সামলে উঠেছে। তাদের গত ১৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচের ১১টিতেই জিতেছে তারা। আগামী বছর রাশিয়ায় বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে অনেক কোয়ালিফাই করেছে ব্রাজিল। কিন্তু ২০১৪’র সেই দুঃস্বপ্ন কতটা অতিক্রম করতে পেরেছে ব্রাজিল? ষষ্ঠবারের মত বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন কি তারা দেখতে পারে?
ব্রাজিল জাতীয় দল এবং বার্সেলোনার সাবেক ডিফেন্ডার জুলিয়ানো বেল্লেট্টি যথেষ্ট আশাবাদী।
“আমি মনে করি তারা পারে। ম্যানেজার দলকে বদলে দিয়েছেন। তাদের ভেতর দেশের জন্য আবার একটি বিশ্বকাপ জেতার আশা, তাড়না, উদ্দীপনা তৈরি করেছেন তিনি। নেইমার, পোলিনিও এবং কোটিনিও’র মতো খেলোয়াড়রা তাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছেন যাতে দল আবার একটি বিশ্বকাপ জিততে পারে। আমি মনে করি চিচি একজন অসামান্য ম্যানেজার। কারণ দলে এখন যারা রয়েছেন তারা আগেও ছিলেন। কিন্তু সেই ফুটবলারদের দিয়েই এখন অনেক ভালো ফুটবল খেলাচ্ছেন তিনি।
দুঙ্গা যখন কোচ ছিলেন তখন দলের যারা ছিলেন তারাই এখনও দলে, তাহলে চিচি কিভাবে পরিবর্তন আনতে পারলেন? বিশেষ কি করেছেন তিনি?
“প্রথম কথা, আত্মবিশ্বাস। একজন ফুটবলারের মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস থাকে যে মাঠে নেমে সে নিজের ক্ষমতার সর্বোচ্চ দিতে পারবে। সে যদি দেখে সমর্থকদেরও তাকে নিয়ে আত্মবিশ্বাস আছে। ম্যানেজারের আত্মবিশ্বাস আছে, দলের সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস আছে – তাহলে সে ভালো পারফর্ম করবে। চিচি খেলোয়াড়দের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস জাগিয়ে তুলতে পারেন। ”
সাবেক ব্রাজিলীয় তারকা জুলিয়ানো বেল্লেট্টির এই সাক্ষাৎকারের সাথে শেষ করছি আজকের মাঠে ময়দানে।