মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বসবাসের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার দাবিতে বিক্ষোভ
মিয়ানমারে সংখ্যালংঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।
বড় বিক্ষোভটি করেছে ইসলামপন্থী সংগঠন হেফাজতে ইসলাম সহ আরো কয়েকটি ইসলামী দল।
দুপুরে জুম্মার নামাজের পর ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সামনে হাজার হাজার মুসলমান বিক্ষোভ দেখায়।
তাদের সাথে সাধারণ মানুষও যোগ দেয়। এদের অনেকেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বসবাসের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে জাতিসংঘ সহ আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপের দাবি জানায় ।
ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীরা।
এদের কণ্ঠে ছিল মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সাং সুচি বিরোধী শ্লোগান।
আশপাশের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে দলে দলে মানুষ মিছিল নিয়ে তাদের সাথে এসে যোগ দেয়।
এদের হাতে ছিল রঙ বেরংয়ের ব্যানার এবং ফেস্টুন।
এক পর্যায়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের রাস্তা মুখরিত হয়ে ওঠে হাজার হাজার মানুষের স্লোগানে।
এদের একদল একটি কফিন নিয়ে স্লোগান দিচ্ছিল, কফিনটির উপর মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর এবং ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সাং সুচির ছবি আঁকা।
এক পর্যায়ে কফিনটিতে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।মিছিলকারীদের হাতে ছিল নানা ধরনের ব্যানার ও ফেস্টুন
বায়তুল মোকারমে জুম্মার নামাজ শুরু হওয়ার বেশ আগে থেকেই মসজিদের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ টুটুল। তার সারা শরীরে সাদা রংয়ের প্রলেপ। তার উপর লাল রঙে মাঝে মাঝে রক্তের ছোপ। হাতে বাংলাদেশের পতাকা। বুকে লেখা, ”মুসলমানদের হত্যা করা বন্ধ কর”।
আরেকজন, শরীফুল আবেদীন রিপন, মোহাম্মদপুর থেকে বায়তুল মোকাররমের সামনে এসেছেন শুধু বিক্ষোভে যোগ দিতে। তার পরনে ফুলপ্যান্ট, খালি পা, খালি গা। শরীরে বিভিন্ন স্থানে লাল রঙ দিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের মতো ক্ষতচিহ্ন আঁকা। হাতে বিরাটাকায় ফেস্টুন, যেখানে ঠাঁই পেয়েছে মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের নানা দুর্দশার ছবি।
এই বিক্ষোভে যারা যোগ দিয়েছেন, তাদের অনেকেই বলছিলেন, তারা চান বাংলাদেশে যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান এসে আশ্রয় নিয়েছে তারা নিজ দেশে ফেরত যাক, কিন্তু তার আগে মিয়ানমারে তাদের বসবাসের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি জানান তারা। এজন্য জাতিসংঘ ওআইসি সহ বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপও তারা কামনা করেন।মোহাম্মদ টুটুলের সারা শরীরে সাদা রংয়ের প্রলেপ। তার উপর লাল রঙে মাঝে মাঝে রক্তের ছোপ।বিক্ষোভে সামিল হয়েছে ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠন
বিক্ষোভে ইসলামপন্থী বিভিন্ন দলের সদস্য ছাড়াও সাধারণ মানুষও এসে যোগ দেন। কেউ এসেছিলেন একাকী, কেউ বা দুতিনজনের ছোট ছোট দলে। এমন একটি ছোট দলের সাথে আমার কথা হয়, যাদের একজন ব্যাংকার, একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র, আরেকজন ব্যবসায়ী।
বিবিসিকে তারা বলছিলেন, তারা নিজ উদ্যোগেই এসেছেন, কোনো রাজনৈতিক বা সংগঠনের হয়ে নয়।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে মসজিদগুলোতেই আজ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।
সকালে ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনেও বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবীদের সংগঠন মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
এসব বিক্ষোভে অং সাং সুচির কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।