ময়মনসিংহ তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হিজবুল আলম জিয়েসের ‘টর্চার সেলের’ সন্ধান মিলেছে; যেখানে সাধারণ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি স্যোশাল মিডিয়ায় নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার জেরে ওই ছাত্রদল নেতার দুই সহযোগী রাফি এবং আব্দুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এদিকে সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার জিয়েসকে প্রধান আসামি এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে তারাকান্দা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার পর গতকাল রাত ৯টার দিকে প্রধান আসামি হিজবুল আলম জিয়েসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ টিপু সুলতান।
তিনি বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা নেওয়া হয়েছে। ঘটনায় সম্পৃক্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। সোমবার রাতে গ্রেপ্তার হওয়া জিয়েসকে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হবে। আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তারাকান্দা উপজেলার বানিহালা ইউনিয়নের মাঝিয়ালী গ্রামের মঞ্জুরুল ইসলামের ছেলে ২৬ বছর বয়সী জিয়েস ২০২১ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে বানিহালা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার রাতে ময়মনসিংহ উত্তর জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তালুকদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জিয়েসকে তার পদ থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
মাঝিয়ালি গ্রামের বাসিন্দারা বলেন, জিয়েস গত ৫ অগাস্টের পর চাঁদাবাজিসহ নানা কর্মকাণ্ডে বেপরোয়া হয়ে পড়েন। চলতি বছরের ৮ অগাস্ট বিকালে বানিহালা ইউনিয়নের মাঝিয়ালি বাজারে চুল কেটে টাকা না দিয়ে উল্টো দোকানি হক মিয়ার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে জিয়েস। টাকা না দেওয়ায় সেলুন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে হক মিয়াকে মারধর করে। এক পর্যায়ে সেলুনে তালাও লাগিয়ে দেয়।
এ সময় হক মিয়ার বড় ভাই লাক মিয়াকেও তার দোকানে গিয়ে জিয়েস ও তার অনুসারীরা মারধর করে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
মাঝিয়ালি গ্রামের লোকজনের ভাষ্য, পরে ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকারের আশ্বাসে পরদিন অর্থাৎ ৯ অগাস্ট বিকালে সেলুন খোলেন হক মিয়া। পরে সন্ধ্যার দিকে তাকে মারধর করে জিয়েস। হক মিয়া বিষয়টি মামুনকে জানালে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও মেরে রক্তাক্ত করা হয়।
মামুন সরকার বলেন, ‘ছাত্রদল তারেক রহমানের আদর্শে গড়া সংগঠন। আর সেই সংগঠনের পদ ব্যবহার করে জিয়েস ৫ অগাস্টের পর থেকে চাঁদাবাজি, তার টর্চার সেলে সাধারণ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন, মাদক সেবন এমন কোন অপরাধ নেই যে করে নাই’।