ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ সম্পাদক জামিল আহম্মেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার নামে বিস্ফোরক কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেফতার এড়াতে দালাল চক্রের মাধ্যমে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিল।
গাইবান্দার গবিন্দগঞ্জ থানায় বিস্ফোরণ আইনে তার নামে মামলা রয়েছে। তবে এই যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও ইমিগ্রেশন পুলিশের খাতায় তাকে কালো তালিকার আসামি হিসাবে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছিলনা।
সোমবার (১৯ মে) বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন ভবন থেকে স্পেশাল ব্রান্সের (এসবি) পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা জামিল আহম্মেদ গাইবান্ধার গবিন্দগঞ্জ উপজেলার জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
এদিকে ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল থেকে গত ৮ মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যাসহ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী বিভিন্ন মামলার ১১ আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা। গ্রেফকৃতরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী।
এদিকে নতুন করে গত সপ্তাহে আরো অনেকের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এছাড়া সাবেক ওসি শাহ আলমসহ কয়েকজনকে আটকাতে দেশব্যাপী রেড অ্যালার্ড জারি রয়েছে। এতে সীমান্তে বিজিবি, পুলিশ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থ্যাগুলো নজরদারি আরও বাড়িয়েছে।
সীমান্ত সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনকে রুখে দিতে তৎকালীন আ.লীগ সরকারের নির্দেশে গণহত্যা চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছাত্র, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির তথ্য মতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রান হারায় নিরস্ত্র আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ দেড় হাজারের বেশি। আহত ৩১ হাজারের বেশি। এক পর্যায়ে প্রকট আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় আসামিরা বেনাপোল রুটে পালানোর বেশি চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সীমান্তের বর্ডার গার্ড বিজিবি ও ইমিগ্রেশন পুলিশের সতর্কতায় কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশই বৈধ ও অবৈধ পথে পালিয়েছে।
যশোরের শার্শা উপজেলা যুবদলের আহবাহক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, নিরাপত্তা জোরদারের পরেও দেশের বিভিন্ন রুটে অনেকেই ইতিমধ্যে ভারতে পালিয়েছে। সেখানে বসে তারা ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দুই দেশের সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্টের চেষ্টা করছে। এসব প্রতিহত করতে সবাইকে আরো সজাগ থাকার আহবান এ যুব নেতার।
এদিকে ০৫ আগস্টের পর আ.লীগের সাবেক সংসদ ও কেন্দ্রীয় নেতা যারা এপর্যন্ত ভারতে পালানোর সময় ইমিগ্রনে গ্রেফতার হয়েছে তাদের কাউকে পুলিশ কালো তালিকায় তুলে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। এতে বিভিন্ন কৌশলে বৈধপথে অনেকই ভারতে পালিয়েছে অভিযোগ রয়েছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইব্রাহিম খলিল জানান, জামিল আহম্মেদ নামে ওই পাসপোর্টধারী ইমিগ্রেশনে পাসপোর্ট জমা দিলে তার আচরণ সন্দেহজনক হয়। এসময় তার এলাকায় ফোন দিলে পুলিশ জানায় তার নামে ৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মামলা রয়েছে। পরে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে বেনাপোল পোর্টথানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, কালো তালিকার কোন আসামিরা যাতে পালাতে না ইমিগ্রেশন পুলিশ সতর্ক থেকে কাজ করছে। এরুটে পালানোর সুযোগ নেই দাবি করেন।