শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন।
শনিবার সকালে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে দেশের কৃতি সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা শনিবার সকাল সোয়া ৯টায় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গকারী মহান বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী তাদের স্থানীয় দোসরদের সহায়তায় শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে ধরে নিয়ে যায়।
বুদ্ধিজীবীদের চোখ বেঁধে মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নাখালপাড়া, রাজারবাগ ও শহরের বিভিন্ন স্থানে টর্চার সেলে নিয়ে যায় তারা। পরে রায়েরবাজার ও মিরপুরে নিয়ে গণহারে হত্যা করে তাদের।
এরপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাঁর বাণীতে বলেন, “বস্তুত ২৫ মার্চ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়েই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়। তবে বিজয়ের প্রাক্কালে ১৪ ডিসেম্বর এ হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপ নেয়।
দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নির্মম হত্যাকাণ্ডকে জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে সাহাবুদ্দিন বলেন, “শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ এবং বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে বলে আমি মনে করি।”
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বাণীতে বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধীরা এই পরিকল্পিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়। বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করাই ছিল তাদের মূল উদ্দেশ্য।”
তিনি আরও বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও সুশাসিত বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর।”
তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির যেকোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত এবং নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বানও জানান।