একজন আদিবাসী সেনেটর রাজা তৃতীয় চার্লসকে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া তার দেশ নয়। প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজ বলেছেন, দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে রাজার প্রয়োজন নেই। ব্রিটিশ রয়ালটি সোমবার অস্ট্রেলিয়ার সংসদ পরিদর্শন করেছেন।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা আদিবাসীদের জমি ও হাড়গোড় দখল করে নিয়েছে বলে চিৎকার করার পর আদিবাসী স্বতন্ত্র সেনেটর লিডিয়া থর্পকে রাজ দম্পতির সংসদীয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়।
তিনি চিৎকার করে বলেন, “তোমরা আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়েছ। তোমরা আমাদের কাছ থেকে যা চুরি করেছো- আমাদের হাড়গোড়, মাথার খুলি,আমাদের শিশু, আমাদের মানুষ- তাদেরকে ফেরত দাও। তোমরা আমাদের দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছো। আমাদের চুক্তি দাও, আমরা চুক্তি চাই।”
রাজা চার্লস যখন প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি অ্যালবানিজের সাথে চুপচাপ কথা বলছিলেন, তখন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা সেনেটর থর্পকে তার কাছে যেতে বাধা দেন।
“এটা তোমার দেশ নয়। তুমি আমার রাজা নও।” হল থেকে বের করে আনার সময় চিৎকার করে ওঠেন থর্প।
অ্যালবানিজ অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমে দেশটিকে প্রজাতন্ত্রে পরিণত করতে চান। তিনিও রাজাকে বলেছেন, তার ভূমিকা শেষ হওয়ার সময় এসেছে।
বিরোধীদলীয় নেতা পিটার ডাটন, যিনি ব্রিটিশ রাজাকে অস্ট্রেলিয়ার রাজা হিসেবে রাখতে চান, তিনি উল্লেখ করেন, এমনকি প্রজাতন্ত্রের সমর্থকরাও রাজধানী ক্যানবেরায় সংসদ ভবনে চার্লস এবং ক্যামিলার জন্য একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সম্মানিত হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়ার ছয়জন রাজ্য সরকারের নেতা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে ব্রিটেনের সাথে দেশটির সাংবিধানিক সম্পর্কের রাজনৈতিক বিভাজনের বিষয়টি তুলে ধরেন। এই ছয়জনই অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিককে প্রাধান্য দেবেন। তারা প্রত্যেকে বলেছেন, সোমবার তাদের আরও জরুরি কাজ রয়েছে; তবে রাজতন্ত্রবাদীরা একমত হয়েছেন যে, রাজপরিবারকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
১৯৯৯ সালে এক গণভোটে রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথকে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেন অস্ট্রেলিয়ানরা। এই ফলাফল ব্যাপকভাবে একজন রাজার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমর্থনের পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট কীভাবে নির্বাচিত হবে তা নিয়ে মতবিরোধের পরিণতি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আলবানিজ তার বর্তমান তিন বছরের সরকারে থাকাকালীন এই বিষয়ে আরেকটি গণভোটের আয়োজনের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তবে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে তার মধ্য-বামপন্থী লেবার পার্টি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র-ভয়েস অফ আমেরিকা