সুইডেনে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের সুইডিশ দূতাবাসে এক দল লোকের জোর করে ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। পাশাপাশি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে বেশ কিছু মুসলিম দেশ।
গত বুধবার স্টকহোম শহরের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এক ব্যক্তি। তার নাম সালওয়ান মোমিকা এবং সে সুইডেনে বসবাসরত একজন ইরাকি বলে জানানো হয়েছে।
তুরস্ক, ইরাক, ইরান, মিশর ও সৌদি আরবসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ইরাকের একজন ক্ষমতাধর ধর্মীয় নেতা মোকতাদা আল-সদর এর প্রতিবাদ জানানোর ডাক দিলে বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) রাজধানী বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের সামনে একদল লোক জড়ো হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে বেশ কিছু মানুষকে দূতাবাস ভবনটির প্রাঙ্গণে হাঁটতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে থাকা এএফপির একজন ফটোসাংবাদিক বলেছেন, কিছু লোক দূতাবাস ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে ও প্রায় ১৫ মিনিট সেখানে অবস্থান করে। পরে স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী আসার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়।
এদিকে সুইডেনের কর্তৃপক্ষ বলছে, মোমিকাকে দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত আইনের আওতায় মসজিদের বাইরে প্রতিবাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তবে কোরআন পোড়ানোর ঘটনা ঘটার পর পুলিশ বলছে, তারা এখন ঘৃণা উস্কে দেওয়ার দায়ে ঘটনাটির তদন্ত করছে।
তুরস্ক এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে এ ধরনের ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, উদ্ধত পশ্চিমাদের আমরা একসময় শিক্ষা দেবো যে মুসলিমদের অপমান করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়।
মরক্কো ও জর্ডান এ ঘটনার প্রতিবাদে স্টকহোম থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের দেশে ফিরে আসতে বলেছে। মরক্কোর রাবাতে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতকে তলবও করা হয়।
মিশর বলেছে, যখন মুসলিমরা ঈদুল আজহা পালন করছে তখন এই লজ্জাজনক ঘটনা বিশেষভাবে উস্কানিমূলক।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উল্ফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, এ ঘটনা ‘আইনগতভাবে বৈধ হলেও অনুচিত’ ছিল।
সুইডেনে কোরআন পোড়ানোর পরিকল্পনাকে কেন্দ্র করে এর আগে দাঙ্গা হয়েছে।
ন্যাটো সদস্য তুরস্ক এর আগে সুইডেনকে এ জোটের সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেনি। এর একটি কারণ হিসেবে এ ধরনের ঘটনার কথা উল্লেখ করেছে। সূত্র : বিবিসি