নিউজ ডেস্ক
জেলহত্যা দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনসহ তিন দফা দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন সোহেল তাজ (তানজিম আহমদ)। আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ি গোলচত্বর থেকে পদযাত্রা করে সংসদ ভবনে গিয়ে তিনি এ স্মারকলিপি দেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ জোহরা তাজউদ্দীনের সন্তান। তিনি নিজেকে ‘প্রহরী-৭১’ নামের একটি আন্দোলনের সদস্য দাবি করেন।
সোহেল তাজের দেওয়া দাবিগুলো হলো, ১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা; ৩ নভেম্বরের জেলহত্যা দিবসকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন ও জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সব বেসামরিক-সামরিক সংগঠক, শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনী ও অবদান পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা।
দাবিগুলোর বিষয়ে স্মারকলিপিতে সোহেল তাজ বলেন, ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়। এর মাধ্যমেই বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র (প্রজাতন্ত্র) হিসেবে জন্ম লাভ করে। তাই দিনটিকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা করতে হবে।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। তাঁদের নেতৃত্বে বৈরী শক্তিকে মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। শেষে স্বেচ্ছায় জীবন দিয়ে প্রমাণ করে গেছেন যে তাঁরা বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। তাই ৩ নভেম্বর তাঁদের হত্যার দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করতে হবে।
অন্যদিকে সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে বর্তমান যুবসমাজকে এ দেশের জন্মের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানাতে হবে। কারণ, নতুন ও ভবিষ্যতের প্রজন্মই চালিকা শক্তি। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস সর্বস্তরের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান সোহেল তাজ।
স্পিকারের উদ্দেশে সোহেল তাজ বলেন, ‘যৌক্তিক এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে আপনার মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের কাছে উপস্থাপন করছি। বাংলাদেশের, তথা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ এবং তুলে ধরা নিশ্চিত করতে পারলেই দেশের সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠন করা সম্ভব। আশা করি আপনি (স্পিকার) বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বসহকারে নেবেন এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এর আগে সোহেল তাজ খামারবাড়িরে টিঅ্যান্ডটি মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁর ভাষ্য, বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী পার হয়ে গেলেও বর্তমান যুবসমাজ সুদীর্ঘ ২৩ বছরের স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানে না।
শেষে পদযাত্রা করে সংসদ ভবনের সামনের দিকে যান সোহেল তাজ ও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েক শ সাধারণ মানুষ। তবে সবাইকে সংসদ ভবনের ভেতরে যেতে দেওয়া হয়নি। তাই ফটক থেকে একটি ব্যক্তিগত গাড়িতে করে সোহেল তাজ স্পিকারের কাছে স্মারকলিপি তুলে দিতে যান। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা সংসদ ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন।
গত ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে গিয়েছিলেন সোহেল তাজ। সেখানে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, তাঁকে যদি দলের প্রয়োজন হয়, তাঁর যদি ডাক পড়ে, তিনি সাড়া দেবেন।