স্থানীয় প্রতিনিধি:–বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র ভাঙন। এ ভাঙনের কবলে সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টও পড়েছে চরম ঝুঁকিতে।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের শৈবাল পয়েন্ট থেকে উত্তরের সমিতিপাড়া পর্যন্ত সৈকতের ভাঙন দেখা দেয় চার বছর ধরে। যেখানে অসংখ্য ঝাউগাছ বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু গত দুই দিনের জোয়ারে সৈকতে পর্যটকের কাছে সবচেয়ে প্রিয় লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত তীব্র ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্য বিরাজ করছে। ফলে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) সকালেও সাগর অস্বাভাবিক উত্তাল হয়ে ওঠে। এর কারণে সৈকতজুড়ে শুরু হয় তীব্র ভাঙন।
সৈকতের লাবণী পয়েন্টের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ তুহিন জানান, চার বছর ধরে লাবণী পয়েন্টের উত্তরে সাগরের ভাঙনে ঝাউগাছ বিলীন হয়ে যায়। লাবণী পয়েন্টের কিছু অংশও ভাঙনের কবলে পড়ে। এটা রক্ষার জন্য জিওব্যাগ দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিনের জোয়ারে লাবণী পয়েন্টে ভাঙন তীব্র হয়ে ওঠে। যার কারণে সৈকতের বালিয়াড়ির বিশাল অংশ বিলীন হয়ে ভাঙন কাছাকাছি চলে এসেছে। যেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের বক্সও প্রায় বিলীনের পথে।
একই পয়েন্টের ব্যবসায়ী সরওয়ার আলম জানান, বালিয়াড়িতে কিটকট (বিচ ছাতা) সারিবদ্ধভাবে যেখানে রাখা হতো, লাবণী পয়েন্টের ওই অংশ বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন চলে গেছে দক্ষিণের সুগন্ধা ও কলাতলী পয়েন্টেও। এসব পয়েন্ট পর্যটকের কাছে জনপ্রিয়।
আগত পর্যটকদের কয়েকজন জানান, কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে নামার প্রধান পথ হচ্ছে লাবণী পয়েন্ট। এ পয়েন্টে নামলেই সামনে ভাঙন, যা পর্যটকের জন্য আতঙ্কেরও বটে।
গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত সি সেইফ সংস্থার লাইফগার্ড কর্মী মোহাম্মদ জহির বলেন, “বিশ্বের দীর্ঘতম এ সৈকতের একমাত্র নিরাপদ গোসলের জায়গা হচ্ছে লাবণী পয়েন্ট। কিন্তু ভাঙনের কারণে পর্যটকরা আসবে কিনা সংশয় রয়েছে।”
ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, সৈকতের তীব্র ভাঙনে পুলিশের কয়েকটি স্থাপনা ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজারের কর্মকর্তা ড. তানজির সাইফ আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে ভাঙন রোধে জিওব্যাগের কাজ চলমান। স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।