নিজের ধর্ষণের কাহিনী শোনালেন ইয়াজিদি নারী

Date:

Share post:

মধ্যপ্রাচ্যের তথাকথিত জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএসের হাত থেকে পালিয়ে আসা এক ইয়াজিদি নারী বিবিসিকে বলেেন ছয় মাস ধরে প্রতিদিন কীভাবে তাকে ধর্ষণ করা হতো

ইসলামিক স্টেট জঙ্গিগোষ্ঠী উত্তর ইরাক থেকে ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের বহু লোককে ধরে নিয়ে গিয়েছিলো ২০১৪ সালে।

যাদের ধরে নিয়ে যায় তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বিশেষ করে অল্পবয়সী নারী। আইএসের জিহাদি যোদ্ধারা নারীদের আটকে রেখে তাদেরকে বহার করে আসছিলো যৌনদাসী হিসেবে।

এদেরই একজন ১৭ বয়সী এখলাস। যখন তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তখন তার বয়স ছিলো ১৪। তাকে রাখা হয়েছিলো মাউন্ট সিঞ্জারে।

ী এখলাস ছিলো এক আইএস যোদ্ধার তত্ত্বাবধানে। তার সাথেই থাকতে হতো তাকে। আইএসের ওই যোদ্ধাটি যেখানে যেখানে যেতো এখলাসকেও তার সাথে সেখানে যেতে হতো।

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এখলাস জানান, ছয় মাস ধরে জিহাদি যোদ্ধারা এই সিঞ্জার পর্বতে তাকে ব্যবহার করেছে যৌন কাজে।

সম্প্রতি তিনি আইএসের জিহাদিদের হাত থেকে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন।

পালিয়ে আসার পর বিবিসিকে তিনি বলেছেন যে তাকে এই ছয়মাসে প্রতিদিন ধর্ষণ করা হয়েছে।

“প্রতিদিন, প্রত্যেকটি দিন আমাকে সে ধর্ষণ করতো। টানা ছয় মাস ধরে। এই দুঃসহ যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্যে আমি আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলাম,” বলেন তিনি।

উত্তর ইরাকে ইয়াজিদি জাতিগোষ্ঠীর উপর হামলা চালিয়ে আই এস যোদ্ধারা যখন নারীদের অপহরণ করে নিয়ে যায় তখন তারা তাদের পুরুষদের হত্যা করে মৃতদেহ পেছনে ফেলে রেখে যায়।

পিতা, স্বামী, ভাই ও সন্তানকে হারিয়ে তারা যখন শোকে ভেঙে পড়েছে তখন তাদেরকে ধর্ষণ করা হয় পালামে।

“আমরা দেড়শো জনের মতো ছিলাম। আমাদের মধ্য থেকে সে আমাকেই বাছাই করে নিলো। লোকটার মাথা ভর্তি ছিলো লম্বা লম্বা চুল। জানোয়ারের মতো দেখতে। খুবই কুৎসিত।”

ধর্ষণকারী ওই জিহাদির বর্ণনা দিতে গিয়ে এখলাস জানান, “তার ীর থেকে সবসময় বোটকা দুর্গন্ধ আসতো।”

তিনি বলেন, “আমি ভয়ে কুঁকড়ে থাকতাম। লোকটার দিকে তাকাতেও পারতাম না।”

তিনি জানান, প্রতিদিনই তিনি সেখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করতেন। সবসময় অপেক্ষা করতেন এমন একটা সুযোগের।

একদিন যখন ধর্ষণকারী জিহাদি যুদ্ধ করতে এক দূরে গেলো সেদিনই তিনি সেই সুযোগটা কাজে লাগালেন। এবং পালিয়ে এলেন আই এসের হাত থেকে।

পরে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় একটি শরণার্থী শিবিরে।

তিনি বলেন, “আপনারা হয়তো অবাক হচ্ছেন যে চোখের পানি না ফেলে আমি কিভাবে আপনাদেরকে এরকম একটি জীবনের বর্ণনা দিচ্ছি! বিশ্বাস করুন আমার চোখের পানি শুকিয়ে গেছে।”

সাংবাদিকদেরকে তিনি যখন তার বন্দী জীবনের বর্ণনা দিচ্ছিলেন তখন হাসছিলেন তিনি। পরিহাসের হাসি।

এখলাসকে এখন নিয়ে আসা হয়েছে জার্মানিতে। সেখানকার একটি মানসিক হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালে থেকে পড়াশোনাও করছেন এখলাস। তার স্বপ্ন বড় হয়ে তিনি একজন বী হবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

একটা চেয়ারের জন্য এতকিছু

সাবেক সংসদ সদস্য,রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন,এই ভদ্রলোক (মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম)...

আলাস্কার উপকূলে ৩ হাজার গাড়িবাহী জাহাজে আগুন

যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার উপকূলে প্রায় ৩ হাজার গাড়ি বহনকারী একটি কার্গো জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৮০০টি ইলেকট্রিক গাড়িসহ...

সন্ধ্যায় জেল থেকে বেরিয়ে রাতে ডাকাতির চেষ্টা, পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ৩

সন্ধ্যায় জেল থেকে বেরিয়ে রাতে পশুর হাটে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বের হওয়া তিন যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ...

কামাল মজুমদার এবার অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার

রাজধানীর বনানী থানার অস্ত্র আইনের এক মামলায় সাবেক শিল্পপ্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানি...