
টেলিভিশনে রান্নার প্রতিযোগিতা করে তারকা বনে যাওয়া নাদিয়া হুসাইন বলেছেন তিনি চান না যে তাঁর সন্তানরা তাকে অনুসরণ করে পারিবারিক আয়োজনে বিয়ে করুক।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নাদিয়া গ্রেট ব্রিটিশ বেক অফ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর সবার নজর কাড়েন।
গুড হাউজকিপিং ম্যাগাজিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে ১৯ বছর বয়সে স্বামী আবদালের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পরই কেবল তিনি তাঁর প্রেমে পড়েন।
তবে নিজের সন্তানদের ব্যাপারে তিনি বলেন যে এখন “সময়ের সঙ্গে এগিয়ে চলা” প্রয়োজন।
নাদিয়া হুসাইনের বয়স এখন ৩২, তিন সন্তানের জননী তিনি। “আমার মনে হয়না তাদের স্বামী বা স্ত্রী খুঁজতে আমাকে দরকার হবে। একাজ তারা আমার চেয়ে ভালো করতে পারবে,” ছেলে-মেয়েদের সম্পর্কে বললেন নাদিয়া।
পারিবারিক ভাবে আয়োজন করা নিজের বিয়ে নিয়ে তিনি বলেন, “এটা বেশ কঠিন – কারণ আপনি একেবারে অপরিচিত একজনকে বিয়ে করছেন”।
নাদিয়া বলেন, “আমাকে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। এরপর আমি শিখেছি আমাকে যত্নশীল হতে হবে, মনে রেখেছি আমরা সবাই মানুষ এবং সবারই দোষত্রুটি রয়েছে”।
“আমাদের ভালো খারাপ – দুই অবস্থার ভেতর দিয়েই যেতে হবে। ভালোবাসা বড় অদ্ভুত … এটি খুব নীরবে আপনার মধ্যে আসে, আর হঠাৎ করেই চোখে-মুখে তা প্রকাশ পায়”।
“আমি আমার স্বামীকে চিনতাম না। এরপর আমাদের দুটো বাচ্চা হয়, আর আমি তাঁর প্রেমে পড়ে যাই,” বলেন নাদিয়া।
বেক অফ প্রতিযোগিতা জেতার পর নাদিয়া হুসাইন খাবার নিয়ে নিজের সিরিজ শুরু করেন, যার নাম ‘দ্যা ক্রনিকল অব নাদিয়া’ – সাথে শুরু করেন টাইমস সংবাদপত্রের জন্যে রেসিপি নিয়ে কলাম লেখা।
চলতি মাসে বিবিসি টেলিভিশনে শুরু হয়েছে তাঁর নতুন শো, ‘নাদিয়াস ব্রিটিশ ফুড অ্যাডভেঞ্চার’।
গত বছর নাদিয়া রেডিও ফোরকে জানিয়েছিলেন যে একজন অপরিচিতকে বিয়ের জন্যে তাকে কখনোই চাপ দেয়া হয়নি।
“আমার পিতা সবসময় আমাদের পছন্দমত বেছে নেয়ার স্বাধীনতা দিয়েছেন। তিনি কখনোই বলেননি তোমাকে বিশেষ একজনকেই বিয়ে করতে হবে। তাঁরা কখনোই আমাকে সেই চাপ দেননি,” বলেছিলেন নাদিয়া।
নাদিয়া জানান, বিয়ের দিনের আগে মাত্র একবারই তিনি আবদালকে দেখেছিলেন – তাদের এনগেজমেন্টের দিনে। তবে ছয় মাস ধরে দু’জন ফোনে কথা বলেছিলেন।
“আমি ঠিকঠাক প্রশ্নগুলোই করেছিলাম,” বলছিলেন নাদিয়া। “এই যেমন আপনার কি আগামী ১০ বছরের কোন পরিকল্পনা আছে, ১০ বছরে আপনি কী কী করতে চান, আপনি কয়টা বাচ্চা পছন্দ, আপনি কি বাবা-মায়ের সাথে থাকবেন, কবে আপনি নিজের বাড়ি কিনবেন? – এই সব আর কি”।
একজন দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশী নাদিয়া হুসাইন গুড হাউজকিপিং ম্যাগাজিনকে বলেন যে তিনি তাঁর সন্তানদের স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠতে দিতে চেয়েছেন।
তিনি বলেন, “১৮ বছর হওয়ার পর তারা আমার সঙ্গে আর থাকবে না। আমাকে নিজের মতো করে চলতে হবে।”
“টুকিটাকি কাজ করার জন্যে আমি তাদের কোন হাতখরচা দিই না। বাসন-কোসন ধোয়ার জন্যে আমি কোন টাকা পেতাম না। তাই তারাও পাবে না।”
আরও পড়তে পারেন:
পাকিস্তানে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি: কিসের আলামত?
সৌদিতে মিসাইল ভূপাতিত: লক্ষ্য মক্কা না তাইফ?
‘অর্থহীন, বীভৎস’ বাংলা নিয়ে কলকাতায় ক্ষোভ
Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-40751331