নরেন্দ্র মোদী, গরু নিয়ে ভিডিও বানিয়ে ভারতে গ্রেপ্তার মুসলিম যুবক

Date:

Share post:

ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের পুলিশ এক ুসলিম বককে করেছে নরেন্দ্র মোদী এবং গরু নিয়ে স্কানিমূলক ভিডিও তৈরী করার জন্য।

সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কথায় ভরা ওই ভিডিওটি হোয়াটসঅ্যাপে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল।

সামাজিক মাধ্যমে ধর্মীয় কুৎসা ছড়ানোর অভিযোগে ঝাড়খন্ডের শুধু হাজারিবাগ জেলাতেই চলতি বছর ১১ জন হিন্দু ও মুসলমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হাজারিবাগ জেলার পুলিশ বলছে মুহম্মদ আরিফ নামের এক যুবককে তারা গ্রেপ্তার করেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সম্বন্ধে কটু কথা বলা আর াশ্যে গরু জবাই করার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে।

মি. আরিফ নিজেই একটি ভিডিও বানিয়ে সেটি হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। এই ভিডিয়োটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে পুলিশের নজরে আসে। গ্রেপ্তার হন মোটর মেকানিক মুহম্মদ আরিফ।

জেপি শাসিত ঝাড়খন্ডে গরু জবাই বা গোমাংস খাওয়া নিষিদ্ধ।

ঝাড়খন্ড পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত মহানির্দেশক আর কে মল্লিক বলছিলেন সামাজিক মাধ্যমে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভিডিও পোস্ট ছড়িয়ে দেওয়ার অনেক ঘটনা সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ঘটছে।

“কিছুদিন আগে সেরাইকেলা আর জামশেদপুরে গণপিটুনিতে হত্যার কয়েকটি ঘটনার পরেই নজরে আসে যে সামাজিক মাধ্যমকে কী ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে উস্কানি দিয়ে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। শুধু ঝাড়খন্ডে নয়, পশ্চিমবঙ্গেও এরকম ঘটনা ঘটেছে। তারপর থেকেই সব পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে তাঁরা যেন সামাজিক মাধ্যমের ওপরে কড়া নজর রান।,” বলছিলেন আর কে মল্লিক।

তিনি জানালেন, এই নজরদারির ফলে গোটা রাজ্যেই অনেক লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে – তাদের মধ্যে যেমন হিন্দু আছেন, তেমনই মুসলমানও আছেন। এরকম অপরাধীদের জেলা থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়ার যে আইনী ক্ষমতা রয়েছে, সেটা ব্যবহার করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উস্কানিমূলক পোস্ট, ভিডিও বা ভুয়া ছড়ানোর দায়ে পুলিশী নজরদারী আর গ্রেপ্তার করা শুরু হতেই সাধারণ মানুষ বুঝতে শুরু করেছেন যে এটা অপরাধ।

ইন্টারনেটে ভুয়া বা উস্কানিমূলক খবর নিয়ে গবেষণা করেন এইচ আর ভেঙ্কটেশ রাও। তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম ভুয়া খবর বা উস্কানিমূলক পোস্ট – মন্তব্য – এসব মানুষ আসলে করে কেন?

মি. রাওয়ের কথায়, “যারা এধরণের ভুয়া খবর তৈরী করে, তারা আবেগের বশবর্তী হয়ে এগুলো করে। তারা যা যা বলে, সেগুলো সত্য থেকে বহু যোজন রে। ভারতে মূলত মানুষ রাজনৈতিক আর আদর্শগত উদ্দেশ্য নিয়ে ভুয়া বা উস্কানিমূলক খবর বা ভিডিও তৈরী করে। কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য অর্থের জন্যও এ ধরণের পোস্ট সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো হয়।”

মি. রাও মনে করেন, “এগুলোর বিরুদ্ধে পুলিশী ব্যবস্থা নিয়ে খুব একটা লাভ হবে না। কারণ অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের সমর্থকরা যদি এরকম পোস্ট ছড়ায়, তাদের ধরা হয় না। তবে যদি এসব পোস্ট বা ভুয়া খবরের মাধ্যমে গণপিটুনি, বা হিংসাত্মক ঘটনা ছড়ানো হয় সেক্ষেত্রেই একমাত্র পুলিশী কড়াকড়ি কাজে আসবে।”

এগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে গেলে সত্য আর তথ্য নির্ভর পোস্ট বা ভিডিও সমাজিক মাধ্যমে বেশী করে ছড়িয়ে দিয়েও লাভ নেই।

তারা যে আবেগকে কাজে লাগাচ্ছে, সেই আবেগ দিয়েই এদের বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালাতে হবে বলে মন্তব্য এইচ আর ভেঙ্কটেশ রাওয়ের।

পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা আর অশান্তি শুরু এবং ছড়িয়ে পড়ার পিছনেও ছিল সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্ট।

তারপরে ওই উত্তেজনা ছড়াতেও ব্যবহার করা হয়েছিল সামাজিক মাধ্যমকে। পুলিশ সামাজিক মাধ্যমকে ব্যবহার করে অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Source from: http://www.bbc.com/bengali/news-40734037

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

সাবেক এমপি মমতাজ বেগম গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাঁকে গ্রেপ্তার...

৩টি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের পরবর্তী ৩টি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের নাম জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সোমবার (১২ মে) বিকেলে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের...

আইভীর জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে ডিভিশন মঞ্জুর

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।...

নাটোরে বিএনপি কার্যালয় থেকে দেশি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হাজী কুদ্দুস আকন্দ

নাটোরের সিংড়া উপজেলায় বিএনপির কার্যালয় থেকে দেশি অস্ত্রসহ এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি,...