ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) সাথে বেতন-ভাতা নিয়ে দেশটির ক্রিকেটারদের চলমান বিবাদের সুরাহার দুয়ারে পৌঁছে গেছে। বৈশ্বিক গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিএ) ও সিএ’র মধ্যে অবশেষে সমঝোতা হতে চলেছে।
দু’পক্ষের মধ্যে বনিবনা হচ্ছে না নয় মাসের বেশি হতে চললো। আর এই লম্বা সময়ের মধ্যে এই প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের প্রধান নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি লভ্যাংশ বণ্টন নীতিতে একমত পোষণ করেছে যেখানে তৃণমূলসহ সব ধরনের ক্রিকেট কাঠামোতে আর্থিক নিরাপত্তা থাকবে।
বোর্ডের সাথে খেলোয়াড়দের বিরোধের ঘটনার পর এটাই মধ্যস্থতার সবচেয়ে বড় ‘সুখবর’। এভাবে এগোতে থাকলে শিগগিরই দেশটির ক্রিকেটের জটিলতার অবসান হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সমঝোতার উদ্দেশ্যে সিএ’র প্রধান নির্বাহী জেমস স্যাদারল্যান্ড গতকাল মঙ্গলবার বিকালে মেলবোর্নে এসিএ’র প্রধান নির্বাহী অ্যালিস্টেয়ার নিকলসনের সাথে বসেন। সেই বৈঠকেই লভ্যাংশ বণ্টনের প্রস্তাবে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। আর নতুন এই প্রস্তাবে দুই পক্ষই একমত থাকার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
দুটি টেস্ট খেলার জন্য আগামী ১৮ আগস্ট বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা স্টিভেন স্মিথের দলের। এরপর ২২-২৪ আগস্ট ফতুল্লায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে অজিরা। তারপর শুরু হবে মূল সিরিজ। ২৭-৩১ আগস্ট প্রথম টেস্ট ঢাকায় ও ৪-৮ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় টেস্ট চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। সর্বশেষ অবস্থা যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটারদের সিরিজ বয়কট করার সম্ভাবনা এখন অনেকটাই কমে গেছে।
বাংলাদেশ সফরে না এলে হুমকিতে পড়তে পারে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও। সেটা নিয়েও এখন শঙ্কা নেই। সত্যি, দ্রুতই সমঝোতায় পৌঁছানো খুবই জরুরি। কারণ, এই ঘোলাটে পরিস্থিতিতে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে সিএ’র স্পন্সরদের কপালে। একই সাথে সিএ’র ব্রডকাস্টিং পার্টনার চ্যানেল নাইন ও টেন নেটওয়ার্কও শঙ্কা প্রকাশ করেছে। সিরিজ একবার বাতিল হয়ে গেলে, পরবর্তীতে নতুন স্পন্সর পেতেও বেগ পেতে হবে সংস্থাটিকে।
আগামী ১০ আগস্ট থেকে বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে এক সপ্তাহের কন্ডিশনিং ক্যাম্প করবে অস্ট্রেলিয়া। সিএ ও এসি’এর প্রতিনিধি ‘শিডিউল’ সফরে চলে এসেছে বাংলাদেশে। ফলে, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পক্ষ থেকেও সিরিজ চূড়ান্ত। গত শনিবারও সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন সিরিজ নিয়ে আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন।
জানিয়ে রাখা ভাল, ২০১৫ সালেই দুই টেস্ট খেলতে বাংলাদেশের আসার কথা ছিল দলটির। তবে, নিরাপত্তার ইস্যুতে সেই সিরিজ স্থগিত করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। একই কারণে গত বছরের শুরুতে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি তারা। তবে, ২০১৬ সালে অবস্থার উন্নতি হয়। তিন দফা বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে সিএ-কে সবুজ সংকেত দেন তাদের নিরাপত্তা বিষয়ক পরামর্শক শন ক্যারোল। তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে দল পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিল সিএ। এর মধ্যে দল ঘোষণাও করে দিয়েছে তারা।
সেই স্কোয়াডের সদস্যরা গত সোমবার সিডনিতে নিজেরা এক বৈঠক করেছেন। চলমান সমঝোতার আলোচনার ব্যাপারে তারা এসিএ’র কাছ থেকে জেনেছেন। সেই বৈঠকে অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নারসহ দলের বাকি ক্রিকেটাররা বাংলাদেশ সিরিজের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞার কথা জানান।