মন্ত্রীরা সড়কের উল্টোপথে চললে অন্যরা কী করবে, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশনে বিএসবি ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের আযোজনে ২০১৭ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কাদের।
সড়ক মন্ত্রী বলেন, ‘মন্ত্রী নিয়ম ভঙ্গ করলে মন্ত্রী হয় না। সাধারণ মানুষ রাস্তায় রাইটওয়েতে চলবে আর মন্ত্রী উল্টো পথে চলবে এটা হবে না। সাধারণ মানুষ আইন মানবে, আর মন্ত্রী আইন মানবে না তা হবে না।’
কাদের বলেন, ‘আমি অর্ডিনারি ম্যান। আমার কাজে, আমার কর্মে আমি নিজেকে কখনও এক্সট্রা অর্ডিনারি মনে করি না। আমি মাটির কাছে যাই, আমি মানুষের কাছে যাই। একজন রাজনীতিকের জীবনে মানুষের ভালবাসার চেয়ে বড় অর্জন আর কিছু হতে পারে না। সেটা অর্জন করতে হবে কাজ দিয়ে, আচরণ দিয়ে, যোগ্যতা দিয়ে, মেধা দিয়ে।’
নেতা বা মন্ত্রীদের কোনো অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ গ্রহণ করে পরে তাড়াহুড়ো করার প্রবণতার সমালোচনাও করেন কাদের। বলেন, ‘আমি প্রায় সময় দেখি কোন অনুষ্ঠানে গেলে আলোচকরা বলে থাকেন তিনি অত্যন্ত ব্যস্ত, অনেক কষ্ট করে এসেছেন, তার বেশি সময় নেওয়া যাবে না। এ ধরনের বক্তব্যে আমার আপত্তি আছে। মন্ত্রী যদি ব্যস্তই থাকেন তাহলে তিনি কেন সময় দিলেন? সময় যখন দিয়েছেন তখন আর ব্যস্ত মন্ত্রী বলা যাবে না।’
সড়কে দূর্ঘটনার জন্য বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোকে দায়ী করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যারা গাড়ি চালাই, গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে পেলেই নিজেকে মনে করি পথের রাজা। সামনে কে আছে, পাশে কে আছে তা কেউ দেখি না। চালক যেখানে পথের রাজা, সেখানে দূর্ঘটনা ঘটবেই, যানজট হবেই।’
রাস্তার সৃঙ্খলা বজায় রাখতে ক্যামব্রিয়ান কর্তৃপক্ষের সাহায্য চেয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনার কলেজের ছাত্রদের দিয়ে ভলান্টিয়ার নিয়োগ করতে পারলে আমার মনে হয় ঢাকা শহরের রাস্তায় কিছুটা স্বস্তি ফিরবে। আমি আশা করি আমাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করবেন।’
মেধাবীদের রাজনীতিতে আসার তাগিদ
মেধাবী, সৎ ও যোগ্য লোকদের রাজনীতিতে আসতে হবে বলে মনে করেন কাদের। বলেন, ‘তা নাহলে রাজনীতি অসৎ, খারাপ ও চরিত্রহীনদের হাতে চলে যাবে। এতে দেশের বারটা বাজবে।’
কাদের বলেন, ‘এখন বেপরোয়া ড্রাইভাররা যেমন এক্সিডেন্ট ঘটায়, তেমনি আমাদের দেশের বেপরোয়া রাজনীতিকরাও এক্সিডেন্ট ঘটায়। ড্রাইভারের মতো রাজনীতিকেরাও যদি বেপরোয়া হয়, তাদের মুখের বিষ যখন বিষাক্ত হয়ে যায়, তখন ফরমালিনের মতো বিষ বের হয়। তখন রাজনীতিকদের প্রতি কারো আস্থা থাকে না।
মাদক থেকে দূরে থাকতে তরুণদেরকে অনুরোধ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আজকে তরুণ সমাজের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। সারা দেশে নীরব সুনামির মতো ইয়াবা গ্রাস করে ফেলেছে। কিন্তু ইয়াবাকে না বলতে হবে।’
বিএসবি ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান এম কে বাশারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন রাষ্ট্রপতির সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সিআইডি প্রধান শেখ হেমায়েত হোসেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ নোমান উর রশীদ।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। এসময় কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে ক্রেষ্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান শেষে ক্যামব্রিয়ান কালচারাল একাডেমির পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।
সাধারণ মানুষদের চেয়ে মন্ত্রীদেরকে বেশি আইন মানতে হবে বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
Date:
Share post: