ঈদের ছুটিতে এবারও বন্ধ থাকবে চট্টগ্রামের সকল পর্যটন স্পট। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে গতবারের ন্যায় এবারও এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। নগরীতে উন্মুক্ত বিনোদন স্পট ও দর্শনীর বিনিময়ে বিনোদন স্পটসহ প্রায় ১৬টি বেশি বিনোদন স্পট আছে। এর বাইরেও অনানুষ্ঠানিক কয়েকটি স্পট আছে, যেগুলো প্রচলিত অর্থে স্পট হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।
বিনোদন স্পটগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো- পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, বাটার ফ্লাই পার্ক, ফয়’স লেক, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, আগ্রাবাদ-জাম্বুরি পার্ক, কর্ণফুলীর শিশু পার্ক, স্বাধীনতা পার্ক, ওয়ার সিমেট্রি, সিআরবির শিরীষতলা, রেলওয়ের কাঠের বাংলো, ডিসি হিল পার্ক, বাটালি হিল, নেভাল টু, কর্ণফুলী সেতু, কাট্টলী সৈকত, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট সড়ক ইত্যাদি।
অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, ছুটির দিন এলেই নগরবাসী পরিবার-পরিজন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। ছুটে যান বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে। উন্মুক্ত ও নিয়ন্ত্রিত- উভয় ধরণের বিনোদন স্পটে ছুটির দিনে লোকে-লোকারণ্য হয়ে যায়। আর ঈদ এলে তো এই অবস্থা আরও বেসামাল হয়। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়বে, এই আশংকায় সম্প্রতি সরকার বিনোদন স্পটসমূহে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে।
ঈদেও সেই নিয়ন্ত্রণ অব্যাহত থাকবে কিনা, জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঈদের সময় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী চট্টগ্রামের সব বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে উন্মুক্ত বিনোদনকেন্দ্রগুলোতেও ভিড় করার সুযোগ নেই। মানুষ যাতে এ ধরনের বিনোদনকেন্দ্রে ভিড় করতে না পারে সেজন্য জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। এদিকে, করোনাকালের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শপিংমল, বাজার, গণপরিবহনসহ প্রায় সবকিছুই খোলা হলেও বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নগরীর বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষগণ।
কাজীর দেউড়ির চট্টগ্রাম শিশু পার্ক ও ফয়’স লেক কনকর্ড গ্রুপ কর্তৃপক্ষ আক্ষেপ ও হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, করোনার মধ্যে গতবছর টানা সাত মাস বন্ধ ছিল সবগুলো বিনোদন স্পট। এবছরও প্রায় দুই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনোদন স্পটগুলো শুধু আর্থিকভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তা নয়, আমাদের সবগুলো রাইডসহ শিশুদের বিনোদনের সব মেশিনারি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন ‘করোনার মধ্যেও জীবন ও জীবিকা দুই চালিয়ে নিতে হবে আমাদের’। দেশে এরই মধ্যে সবকিছুই খোলা হয়েছে। কিন্তু খোলা হচ্ছে না বিনোদন কেন্দ্র। সারাদেশে বিনোদন স্পটে প্রায় পাঁচ লাখের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি করে।
বৈশ্বিক এ মহামারীতে বিনোদন স্পট বন্ধ থাকায় মালিক পক্ষ থেকে শুরু করে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী আর্থিকভাবে বিপদে আছি। করোনার কারণে সরকার সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে প্রায় সব সেক্টরে অনুদান দিলেও পর্যটন খাতে এখনো পর্যন্ত অনুদান দেয়নি। দীর্র্ঘদিন ধরে বিনোদন স্পটগুলো বন্ধ থাকায় আমরা ঋণগ্রস্ত হয়েছি। এছাড়া যেসব স্পটে দর্শনীর বিনিময়ে দর্শনার্থীরা আসেন তাদের কাছ থেকে করোনা ছড়ায় না। কারণ এখানে টিকেট কেটে যারা আসে তারা সবাই একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলে।