করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এজন্য সবার একটু কষ্ট হলেও মানুষের জীবন বাঁচানোই এখন সবার করণীয় বলে মনে করেন তিনি। গতকাল রোববার সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। যদিও করোনাভাইরাস কিছুটা অর্থনীতিকে স্থবির করেছে। সারা বিশ্ব আজকে প্রায় স্থবির অবস্থা। তার মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কিন্তু অব্যাহত ছিল এবং আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদাও পেয়েছি। এটা আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনাভাইরাস মহামারীর ঢেউটা শুরু হয়, যা স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, এই ধরনের অনেক কর্মসূচি নেওয়ায় এবং সরকার সমস্ত কিছু বন্ধ করে দিয়েছিল বলে অনেকটা বন্ধ করা সম্ভব হয়েছিল। তিনি বলেন, আজকে আবার দেখা যাচ্ছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আমি মনে করি এই দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি জানি একটু কষ্ট হবে, তারপরও। সংসদে আসার আগে মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় মানুষকে সুরক্ষিত করতে কতগুলো নির্দেশনা ঠিক করে সেই ফাইলে স্বাক্ষর করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এসব নির্দেশনা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ হবে। শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি যে এখানে হয়ত আমাদের মানুষের একটু সমস্যা হবে। তারপরও আমি বলব যে জীবনটা অনেক বড়, জীবনটা আগে। মানুষের জীবনটা বাঁচানো, এটাই সকলের করণীয়। তাই এই ভাইরাসের সংক্রমণ যাতে না বাড়ে এবং এর দ্বিতীয় সংক্রমণ যেটা হচ্ছে, এটা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে সারা বিশ্বব্যাপী। আমাদের দেশের মানুষকেও সচেতন থাকতে হবে। ২৯-৩১ মার্চের মধ্যে দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়া এবং এরপর থেকে ক্রমাগত বাড়ছে বলে জানান তিনি। সবাইকে লোকসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই লোক সমাগম বা কোনো বাজারে যাবেন বা কোথাও যাবেন, ঘরে ফিরেই যেন সাথে সাথে একটু গরম পানির ভাপটা নেওয়া। মাস্ক তো পরবেনই কিন্তু ঘরে ফিরেই গরম পানির ভাপটা নিলে ভেতর থেকে উপকার পাওয়া যায়। এবারের করোনাভাইরাসের ধরনটা এমন, যা চট করে বোঝা যায় না যে কতদূর ক্ষতি করল। কিন্তু হঠাৎ খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। সেজন্য সবাইকে একটু সাবধান থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানার অনুরোধ জানাচ্ছি।
আগে বয়স্করা বেশি সংক্রমণের ঝুঁকিতে থাকলেও এবার শিশু এবং তরুণরাও সংক্রমিত হচ্ছে জানিয়ে তাদের সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।