বন্যাদুর্গত বড়লেখা: কেউ ত্রাণ পায় বার বার আর কেউ পায়নি একবারও!*

Date:

Share post:

হাকালুকি হারপাড়ের বড়লেখায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ তরণে চলছে চরম সমন্বয়হীনতা। বিশেষ করে বে-সরকারি সংস্থা, সংগঠন, ক্তি ও প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগের ত্রাণ বিতরণে যোগাযোগ সুবিধাকেই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এতে ঘুরে ফিরে একই এলাকার দুর্গত লোকজন উপকৃত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দী মানুষজন অতিদরিদ্র হওয়া স্বত্ত্বেও একবারও ত্রাণ পাচ্ছে না। সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে দুর্গত সকলেই কিছু না কিছু খাদ্য ায়তা পেতো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, গত ১৫ জুন থেকে উপর তালিমপুর, বর্নি ও সুজানগর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে থাকে। অব্যাহত ভারি বর্ষণ আর পাি ঢলে এ তিন ইউনিয়নের সমস্ত এলাকা বন্যায় তলিয়ে যায়। পরে নিজবাহাদুরপুর, দক্ষিণভাগ দক্ষিণ, দাসেরবাজার, বড়লেখা সদর, দক্ষিণভাগ উত্তর ও উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে বন্যার বিস্তৃতি ঘটে। ক্রমশঃ বন্যার অবনতিতে উপজেলার শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে থাকেন। এসব দুর্গত মানুষের মাঝে প্রশাসন সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণের উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও সংগঠন দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে এগিয়ে আসে। কিন্তু বে-সরকারি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণে প্রশাসনের কোনো সমন্বয় না থাকায় সবাই প্ একই এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করছেন। এতে হাকালুকি হাওরপাড়ের প্রকৃত অনেক অসহায় পরিবার ত্রাণ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তালিমপুর ইউনিয়নের হাল্লা গ্রামের পারভিন বেগম, জাকির সেন, জুয়েল আহমদ জানান, আমরা গরিব মানুষ, প্রায় দেড় মাস ধরে বাড়ির চারদিকে পানি ঢুকছে। পানির ঢেউয়ে ঘর-দোয়ার বেশির ভাগ ভেঙ্গে গেছে। নৌকা নেই, ত্রাণ আনতে যাব, তাই একবারও আমাদের ভাগ্যে ত্রাণ জুটেনি। সুজানগর ইউনিয়নের রাঙ্গিনগর গ্রামের লোকমান মিয়া জানান, গ্রামের ভেতরের এমন অনেক দুর্গত পরিবার রয়েছে যারা একবারও সরকারি কিংবা বেসরকারি ত্রাণ পায়নি। তবে রাস্তার পাশের অনেক রয়েছেন যারা ২-৩ বার করে , ডাল, আলুসহ বিভিন্ন সাহায্য পেয়েছে। অনেকে নৌকা নিয়ে ত্রাণ দিতে আসেন, তবে ঘুরে ফিরে একই লোক ত্রাণ পাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি জানান, ব্যক্তি উদ্যোগে অনেকেই ত্রাণ দিতে যোগাযোগের সুবিধাজনক স্থানকে প্রাধান্য দেন। তারা রাস্তার পাশের লোকজনকে প্যাকেটজাত ত্রাণ দিয়ে কিছু ছবি ও সেলফি তুলেই ফিরে যান। বেশির ভাগ বে-সরকারি ত্রাণ একই এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। ইউএনও এসএম আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলার ৯ ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সরকার শতভাগ দুর্গতকে সহায়তা দিতে পারবে না। তবে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ শ’ মেট্টিক টন চাল ও ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বে-সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণকারীরা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখছেন না। সমন্বয়ের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের ব্যবস্থা নিলে বেশি মানুষ উপকৃত হতো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদের মরদেহ পাওয়া যায়

সাবেক সেনা প্রধান হারুন অর রশিদ চট্টগ্রামে মারা গেছেন। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের একটি কক্ষে তার...

ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনের অংশীদার হতেন ‘ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা’

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে ছাত্রলীগ পরিচয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের অংশীদার হতেন এমন ‘ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের’ পরিচয় দিয়ে সামাজিক...

গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক শ্রমিক স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামী

গাজীপুরের শ্রীপুরে পোশাক শ্রমিক স্ত্রী মারুফা আক্তারকে (৪৫) হত্যার পর মরদেহ ঘরের মেঝেতে রেখে আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে বাইরে...

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন...