বহুল আলোচিত সমালোচিত ক্রিকেটার নাসির-তামিমা বিয়ে আর তাঁর প্রাক্তন স্বামী রাকিবকে নিয়ে কথা বলবো না ভেবেছিলাম।কারণ ডিভোর্সের পর পুনঃবিবাহ সামাজিক এবং ধর্মীয়ভাবে অবশ্যই গ্রহণ যোগ্য একটি বিষয়।
গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করা এই বিয়ে নিয়ে সবাই যার যার চ্যানেল ভাইরাল করা নিয়ে ব্যস্ত।
কিন্তু গতকাল যখন দেখলাম রাকিব-তামিমার মাত্র ৮ বছর বয়সী কন্যা সন্তানকে তাঁর মায়ের বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে নিগেটিভ উত্তর বের করে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে , ভীষণ রাগ হল।
ছোট্ট একটি বাচ্চা বাবা-মায়ের সম্পর্কের জটিলতা বুঝতে পারার কথা নয়।উপরন্তু পিতা নিজে পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা সেই সন্তানকে মায়ের বিপক্ষে কথা বলতে উৎসাহিত করছে । সন্তানটিকে মায়ের বিরুদ্ধে বিষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
বাচ্চাটির মানসিক চাপ এবং ক্ষতি নিয়ে নিজের পিতা-মাতা যখন না ভাবে অন্যদের দোষ দিয়ে কি লাভ !
বাচ্চাটিকে সাংবাদিক যখন প্রশ্ন করছিলেন মা’ তাকে ভালোবাসে কি না, আদর করে কি না বাচ্চাটির তাৎক্ষনিক উত্তর, ” আদর করে”। সত্যি কথাই বলেছে, মা’ তাঁর সন্তানকে আদর না করে পারে না।
মা’ হলেই স্বপ্ন দেখতে পারবে না তা হতে পারে না তবে সন্তানের দায়িত্ব অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। ডিভোর্স হলেও পারস্পরিক সম্মানবোধ থাকাটা জরুরী।
ডিভোর্স অসুখী দাম্পত্যের চেয়ে হাজার গুন শ্রেয় বলে বিশ্বাস করি। উচ্চাভিলাষী তামিমা রাকিবের সহজ সাধারণ জীবনে মানিয়ে নিতে পারেনি বলেই বার বার নতুন পুরুষের সন্ধানে জটিলতা তৈরী করেছে। গ্রীসের অলক সাহার সাথে প্রেম সে কথাই বলে।
এর আগে আমরা মিথিলা-সৃজিতের বিয়ে দেখেছি। কন্যা আইরাকে যে ভাবে মা’ মিথিলা বিয়ের অনুষ্ঠানে সুন্দর জামা পরিয়ে পাশে রেখেছেন তা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে।
আরেক নামকরা উপস্থাপিকা ফারজানা ব্রাউনিয়ার বিয়ের ছবিতে স্বামীর সাথে তিন সন্তানকে নিয়ে ছবি পোস্ট তাঁর মাতৃত্বেরই বহিঃপ্রকাশ।
সন্তানের মা’কে যখন ভালবাসবেন তাঁর ছোট্ট সন্তানদের দায়িত্বও নিতে হবে।একজন মা’ কখনই সন্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না।
তামিমাকে আপনারা গালি দিচ্ছেন নোংরা কথা বলছেন কিন্তু তাঁর সন্তানকে এর মধ্যে কেন টেনে আনা ? তবে তামিমার উচিত ছিল আনন্দঘন মুহূর্তে তাঁর ছোট্ট কন্যাকে পাশে রাখা।ছোট্ট বাচ্চা মায়ের সাঁজ আর নাচ দেখে নিজেও আনন্দ পেতো ঠিকই ।
সন্তানের মাকে বিয়ে করা দোষের কিছু নয় কিন্তু নাসিরের উচিত ছিল উদার মানসিকতায় সেই সন্তানকে কাছে টানা । ভবিষ্যৎ বলে দিবে কে কতোটুকু দায়িত্ব পালনে পারদর্শী।
আপনারা সৃজিত-মিথিলা-তাহসানের থেকে শিখুন তিক্ততা সৃষ্টি না করে কিভাবে সন্তানকে সুখী রাখতে হয়, নিজের দায়িত্ব পালন করা যায় ।
মা-বাবাকে বিচ্ছিন্ন দেখতে সন্তানরা অভ্যস্ত নয়, তাঁদের মেনে নিতে কষ্ট হওয়া স্বাভাবিক। একধরণের শূন্যতা আর অনিশ্চয়তা তাঁদের তাড়িয়ে বেড়ায়।সন্তানের এই নাজুক অবস্থাকে পুঁজি করে ডিভোর্স পরবর্তী জীবনে একে অপরকে পরাজিত করতে সন্তানকে ঢাল হিসেবে ব্যাবহার নয় বরং তাঁদের ভবিষ্যৎ সুন্দর আর সফল জীবনের জন্য সন্তানকে হাসিখুশী আনন্দময় জীবন দেওয়ার চেষ্টা করা আপনার দায়িত্ব।
লেখা
খুদিস্তা নুর-ই-নাহরীন মুন্নি