ডেস্ক নিউজ: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর অংশ হিসেবেই প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জনের নামের তালিকা অনুমোদন করা হয়েছে। চলতি মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়নে গঠিত কমিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষকে সভাপতি করে গঠিত ১১ সদস্যের কমিটি রোববার এক হাজার ২২২ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা অনুমোদন দেয়।
সভা শেষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, বুদ্ধিজীবী কারা, তার সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে আমাদের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আগামী সভায় এটা লিখিত আকারে উপস্থাপিত হয়ে অনুমোদিত হবে বলে সবাই একমত হয়েছে। কারা শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচিত হবেন তারও আউটলাইন ঠিক হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, ১৯৭২ সালে প্রাথমিকভাবে এক হাজার ৭০ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর একটি তালিকা হয়েছিল। পরে ১৫২ জন শহীদের ডাকটিকেট প্রকাশ করেছে ডাক বিভাগ।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, কমিটি মোট এক হাজার ২২২ জনের তালিকা করেছে। আমরা সেই তালিকার অনুমোদন দিয়েছি। বিভিন্ন আবেদন আমাদের কাছে আছে, ভবিষ্যতে হয়তো আরো আবেদন আসবে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হবে।
বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা ঠিক করার পর যাচাই-বাছাই কোন প্রক্রিয়ায় হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমরা সরাসরি এখান (কমিটি) থেকেই করব, না-কি জেলা-উপজেলাভিত্তিক কমিটির প্রয়োজন হবে, সেগুলো আগামী সভায় নির্ধারণ করা হবে। প্রাথমিকভাবে এক হাজার ২২২ জন বুদ্ধিজীবীর তালিকা অনুমোদন দেয়া হলেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, এক হাজার ২২২ জনের তালিকা এরই মধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোকে আমরা স্বীকৃতিও দিয়েছি। এটাই আমাদের প্রাথমিক তালিকা। এই তালিকা চলমান থাকবে। আমরা আগামী বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্যে তালিকা সংযুক্ত করে শেষ করব।
বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির জানান, ২৫ মার্চ থেকে শুরু করে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়কাল ধরে বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করা হবে। এক মাস পর পরবর্তী সভা হবে।
তিনি আরো বলেন, দেরিতে হলেও এই সরকার শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সময় থেকে বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, ডাক বিভাগ স্ট্যাম্প প্রকাশ করেছে, আরো কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তালিকা হয়েছে। কিছু বেসরকারি উদ্যোগেও গবেষণা হয়েছে, সবগুলো আমাদের সংগ্রহে আনতে হবে। সরকারি তালিকা মন্ত্রণালয়ে আছে, বেসরকারি পর্যায়ে অনেকগুলো কাজ হয়েছে, সেই তালিকাগুলো হাতে পেতে হবে।