স্প্যানিশ ফুটবল লীগ লা লীগা তাদের কয়েকটি ম্যাচ উত্তর আমেরিকার মাঠে আয়োজনের পরিকল্পনা করছে।
বিশ্বে সর্বাধিক জনপ্রিয় ফুটবল টুর্নামেন্ট ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সাথে প্রতিযোগিতার কারণেই তারা এরকম কিছু একটা করার চিন্তাভাবনা করছে। তবে বলা হচ্ছে, এই উদ্যোগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগকে টেক্কা দেওয়ার লক্ষ্যে তাদের গৃহীত একটি মহাপরিকল্পনার সামান্য কিছু অংশ মাত্র।
লা লীগার পরিকল্পনায় বলা হচ্ছে, আগামী ১৫ বছর ধরে তাদের কয়েকটি ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় অনুষ্ঠিত হবে।
বিবিসির সংবাদাতারা বলছেন, ইউরোপে যে পাঁচটি বড়ো ধরনের ফুটবল লীগ আছে তার মধ্যে লা লীগাই প্রথম তাদের কোন ম্যাচ বিদেশের মাটিতে আয়োজন করার উদ্যোগের কথা জানালো।
এজন্যে তারা স্পেনের ফুটবল কর্তৃপক্ষ স্প্যানিশ এফএ-র কাছে অনুমতি চেয়েছে। তাদের এই পরিকল্পনা শেষ পর্যন্ত সবুজ সঙ্কেত পেলে লিওনেল মেসির মতো ফুটবল তারকাকে দেখা যাবে ফ্লোরিডার মাঠে বল নিয়ে দৌড়াতে।
লা লীগা চাইছে আগামী জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি শহরের হার্ড রক স্টেডিয়ামে জিরোনা বনাম বার্সেলোনার ম্যাচটি আয়োজন করতে।
লা লীগার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের টেবাস বলেছেন, এসব বিষয়ে কিছু বড় ধরনের সমঝোতা হয়েছে।
শুরুর দিকে খেলোয়াড়দের ইউনিয়ন এবং সমর্থক গোষ্ঠীগুলো এই পরিকল্পনার তীব্র বিরোধিতা করছিল। তবে লা লীগা কর্তৃপক্ষের সাথে এক সমঝোতার পর ফুটবল ভক্তরা কিছুটা আশ্বস্ত হয়েছে।
সমঝোতায় বলা হয়েছে, এর ফলে জিরোনার সিজন টিকেটধারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
ফ্যানস ইউনাইটেড বলছে, এই উদ্যোগের কারণে স্প্যানিশ ফুটবল এবং লা লীগা এখন যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল ভক্তদের কাছেও পৌঁছে যাবে।
লা লীগায় যেসব টিম খেলে তাদের প্রচুর সমর্থক রয়েছে আমেরিকায়। বলা হচ্ছে যে এর ফলে ভক্তরা এখন প্রতিদিন খুব সহজে তাদের টিমকে অনুসরণ করতে পারবে।
এই পরিকল্পনাটি নিয়ে লা লীগার সাথে স্প্যানিশ ফুটবলারদের যে ইউনিয়ন আছে তাদের আলোচনা হয়েছে। ফুটবলাররা বলেছেন, এই পরিকল্পনার ব্যাপারে তাদের এখনও কিছু কিছু আপত্তি রয়ে গেছে।
তবে এবিষয়ে তারা তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা লা লীগাকে এখনও জানায়নি।
গত কয়েক বছর ধরেই লা লীগার কিছু ম্যাচ উত্তর আমেরিকায় আয়োজনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
“লা লীগাকে আমরা একটি বিশ্ব ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করছি। এবং সেই লক্ষ্যেই আমরা সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি,” বলেন লা লীগার গ্লোবাল কিউনিকেশন কর্মকর্তা ইউরিস এভারস।
শুধু তাই নয়, এই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে লা লীগা সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের অফিস খুলেছে। তার মধ্যে রয়েছে দুবাই, ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ আফ্রিকা, নাইজেরিয়া এবং মেক্সিকো।
গঠন করা হয়েছে লা লীগা গ্লোবাল নেটওয়ার্ক নামে আন্তর্জাতিক একটি গ্রুপ যার জন্যে ৪৪ জন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
“লা লীগার জন্যে তারা নতুন বাজার খুঁজে দেখছে। আমরা যাতে ভিন্ন ভিন্ন বাজার সম্পর্কে ঠিক মতো জানতে পারি, কোথায় কী সুযোগ আছে, কোথায় কী ধরনের হুমকি আছে সেগুলোও সম্পর্কে যাতে আমরা ধারণা পেতে পারি সেজন্যে এই নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে,” বলে মি. এভারস।
লা লীগার এই কর্মকর্তা মনে করেন, তাদের জন্যে সম্ভাবনায় বাজার হচ্ছে হাঙ্গেরি, চিলি, কোস্টারিকা, রাশিয়া, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া।
তিনি বলেন, জিরোনার মতো ক্লাব যদি ভারতের মতো নতুন একটি বাজারের পেছনে বিনিয়োগ করতে চায় তারা লা লীগার কাছে আসতে পারে। তখন সেখানে কী কী ধরনের সুযোগ আছে, স্পন্সরশীপ কেমন হতে পারে এসব বিষয়ে লা লীগা তাদেরকে সাহায্য করতে পারে।