সেরা প্রতিবেদনের পুরস্কার পেলেন ২৬ জন গণমাধ্যম কর্মী। ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ২৭৫টি রিপোর্ট বাছাই করে ২৬|
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন। বক্তব্য দেন ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ও জুরী বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহজাহান সরদার। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল দেশীয় পণ্য ওয়ালটন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ডিআরইউ সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘ধারাবাহিকভাবে আমরা এই প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। এবার আমরা ২৬টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দিচ্ছি। সবার আগে আমাদের প্রয়োজন পারিবারিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া। ডিআরইউকে একটি পরিবার ভাবতে হবে। সেরা প্রতিবেদন পুরস্কার আমিও দুইবার পেয়েছি। এটি আমার পেশার স্বীকৃতি।’
গত বছর ২৩৩টি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে এই রিপোর্টের সংখ্যা ৪২টি বাড়িয়ে ২৭৫ করা হয়েছে। লেখার মানের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে একজন বাদে সবাই উপস্থিত ছিলেন। এবার যারা পুরস্কার পেয়েছেন তাঁরা পুরস্কারের পাশাপাশি ৫০ হাজার চেক এবং সার্টিফিকেট পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপদেষ্টা এইট টি ইমাম বলেন, ‘আগে সংবাদের মাধ্যম ছিল কম। এখন তো অনেক মাধ্যম তৈরি হয়েছে। এখন কোনো সংবাদকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। মুহূর্তের মধ্যে চারিদিক সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যেক সাংবাদিকদের প্রমিত বাংলা ভাষা ব্যবহার করা উচিত।’
পুরস্কার প্রদান প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি একটি চমৎকার প্রয়াস। ক্রমশই এর পরিধি বাড়ছে। এবার ২৭৫টি রিপোর্ট থেকে সেরা প্রতিবেদন বাছাই করা হয়েছে। যারা পুরস্কিত হলেন তারা অন্য সবার থেকে উত্তম। প্রতিভার ভাণ্ডারে প্রবীণদের থেকে নবীনরা শিখছে।’
পুরস্কার পেলেন যাঁরা
প্রিন্ট মিডিয়া ক্যাটাগরিতে শিক্ষা বিষয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে দৈনিক কালের কণ্ঠের শরীফুল আলম সুমন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে দৈনিক সমকালের আবু সালেহ রনি, অবজেকটিভ ইকোনমি বিষয়ে দৈনিক আমাদের সময়ের রুমানা আঁখি, নগরীর সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ে ডেইল স্টারের হেলিমুল আলম, অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের বিকাশ নারায়ণ দত্ত, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে দৈনিক জনকণ্ঠের ওয়াজেদ হিরা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে প্রথম আলোর শরীফুজ্জামান পিন্টু, বৈদেশিক সম্পর্ক (কূটনৈতিক ও জনশক্তি) বিষয়ে ডেইলি স্টারের পরিমল পালমা, ক্রীড়া বিষয়ে দৈনিক যুগান্তরের শিপন হাবীব, স্বাস্থ্য খাত নিয়ে আলোকিত বাংলাদেশের নেছারুদ্দিন আহমেদ, রাজনীতি ও বিচার ব্যবস্থা বিষয়ে ডেইলি স্টারের সাখাওয়াত হোসেন লিটন, কৃষি বিষয়ে নয়াদিগন্তের মেহেদী হাসান, ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি বিষয়ে কালের কণ্ঠের আজিজুল পারভেজ, আর্থিক খাত (ব্যাংক ও পুঁজিবাজার) বিষয়ে আমাদের সময়ের হারুণ অর রশিদ এবং নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ে ভোরের কাগজের এস এম মিজান।
টেলিভিশন রিপোর্টিং ক্যাটাগরিতে অর্থনীতি বিষয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন যমুনা টিভির অপূর্ব আলাউদ্দিন, নগরীর সমস্যা ও সম্ভাবনা বিষয়ে মাছরাঙা টিভির মাযহারুল ইসলাম, অপরাধ ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের রাশেদ নিজাম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে এনটিভির এম এম ইসলাম মহিদুল, ক্রীড়া বিষয়ে মাছরাঙা টিভির ফারিয়া আফসানা, সুশাসন ও দুর্নীতি বিষয়ে মাছরাঙা টিভির বদরুদ্দৌজা বাবু, মানবাধিকার বিষয়ে এনটিভির শফিক শাহীন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদক নির্বাচিত হয়েছেন যমুনা টিভির জি এম ফয়সাল আলম।
অনলাইন রিপোর্টিং ক্যাটাগরিতে মানবাধিকার বিষয়ে বাংলামেইলের (বর্তমানে জাগোনিউজ) শাহেদ শফিক এবং উন্নয়ন ও সম্ভাবনা বিষয়ে পরিবর্তন ডটকমের আবু হানিফ রানা শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদক নির্বাচিত হয়েছেন।
রেডিও রিপোর্টিং ক্যাটারিতে (যেকোনো বিষয়ে বিশ্লেষণধর্মী ও অনুসন্ধানী রিপোর্ট) শ্রেষ্ঠ প্রতিবেদক নির্বাচিত হয়েছেন বিবিসি (রেডিও) আহরার হোসেন।
এর আগে গত ১ অক্টোবর ২০১৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬-এর মধ্যে প্রকাশিত ও প্রচারিত রিপোর্ট অ্যাওয়ার্ডের জন্য জমা দেওয়ার জন্য সদস্যদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করে ডিআরইউ। জুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদার অনুষ্ঠানে জানান, গত ৩০ অক্টোবর বিকেল ৫টার মধ্যে ডিআরইউ কার্যালয়ে মোট ২৭৫টি রিপোর্ট জমা পড়ে। জুরি বোর্ড এসব রিপোর্ট যাচাই-বাছাই করে ২৬ জনের রিপোর্ট নির্বাচিত করেন।