রোহিঙ্গা শিবিরে বন্য হাতিরা হামলা করছে কেন?

Date:

Share post:

উখিয়ার গুলশানপাহাড় এলাকাটি মূলত বন্য হাতির আবাস বলে পরিচিত

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার একটি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বন্য হাতির হামলায় চার জন নিহত হবার পর বন কর্মকর্তারা বলছেন, ভবিষ্যতে এরকম ঘটনা আরো অনেক বেশি ঘটবার আশঙ্কা রয়েছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের বিবিসি বাংলাকে বলেন, বালুখালির একটি শরণার্থী শিবিরে শুক্রবার রাত দেড়টার একদল বন্য হাতি ঢুকে পড়ে।

এসময় ঘুম থেকে উঠে আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে ছুটাছুটি করতে থাকে রোহিঙ্গা নারী পুরুষরা।

এরই এক পর্যায়ে একজন মহিলা ও চার জন শিশুর মৃত্যু হয়। আহত হয় আরো তিনজন। হতাহতদের সবাই একই পরিবারের সদস্য বলে স্থানীয় সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন।

গত ১৭ই সেপ্টম্বর একই রকম একটি ঘটনায় আরো দুজন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মৃত্যু হয়েছিল।কেন এমন ঘটছে?

জানতে চাইলে টেলিফোনে মি. খায়ের বলেন, “হাতির বিচরণের জায়গা সব মানুষ দখল করে ফেলেছে। তারা এখন কি করবে?”

কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যেতে রামু এবং উখিয়ার মধ্যে দিয়ে যে সড়ক গেছে, তাতে একটু পরপরই রয়েছে বন বিভাগের সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড, ”সাবধান। বন্যহাতি চলাচলের পথ।”

এই বন্য হাতির ইস্যুটি এই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে নতুন নয়। চার মাস আগেও এখানে মধুরছড়া এলাকায় হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে একজন মারা যায়।

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যখন রামুতে একদল উম্মত্ত হাতি এক ব্যবসায়ীকে তাড়া করে পদপিষ্ট করে মারে, তখন বিবিসি বাংলার এই প্রতিবেদককেই ওই থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মোঃ কায় কিসলু বলেছিলেন, ”সম্প্রতি এই এলাকায় সেনানিবাস তৈরি করা-সহ নানা কারণে হাতির চলাচলের পথ সঙ্কীর্ণ হয়ে গেছে।”রামু এবং উখিয়ার মধ্যে দিয়ে যে সড়ক গেছে, তাতে একটু পরপরই রয়েছে বন বিভাগের সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড, ”সাবধান। বন্যহাতি চলাচলের পথ।’বাংলাদেশের কক্সবাজারে এক ব্যবসায়ীকে পদপিষ্ট করে মারল বন্য হাতির দল

এখন দেখা যাচ্ছে হাতি চলাচলের পথকে আরো সংকীর্ণ করে ফেলেছে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলি এবং তাদের কেন্দ্র করে ওই এলাকায় চলা কর্মযজ্ঞ।

উখিয়ায় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে একটি জরিপের বরাত দিয়ে বলেন, কুতুপালং এবং বালুখালি শরণার্থী শিবির যেখানে রয়েছে, সেটাতে মূলত ‘মাকড়শার জালের’ মত বন্য হাতি চলাচলের পথ।

সেই হিসেবে এখানে কোন ক্যাম্প থাকাই উচিত না, বলছিলেন মি. ইসলাম।

এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়ে তিনি জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন।

এই এলাকায় একসময় ঘন জঙ্গল ছিল উল্লেখ করে মি. ইসলাম বলেন এখানে একসময় বহু হাতি ছিল। এখন হাতি অনেক কমে গেছে। তারপরও অনেক আছে।

”তারা তাদের পুরনো চলাচলের পথে রাতের বেলায় মাঝে মাঝেই ফিরে আসে।”

তিনি আশংকা প্রকাশ করেন, ভবিষ্যতে এ ধরণের দুর্ঘটনা ওই এলাকায় আরো অনেক বেড়ে যেতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...