বুধবার (২৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে ‘মহান বিজয় দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আন্তমন্ত্রণালয় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এমন মন্তব্য করেন।
২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের অনুমতি নিয়ে সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়ে আবেদন কীভাবে করেছে, তা আমাদের পুলিশ কমিশনার জানেন। তারা এত লোক, সারা বাংলাদেশের যারা বিএনপি করে, তাদের সবাইকে ঢাকায় আনবেন, কোথায় তাদের সমাবেশের অনুমতি দিলে ভালো হবে, এত লোক ঢাকায় এলে একটা অন্য ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, এ জন্য তাদের কোথায় সমাবেশ করতে দেবেন, এটা পুলিশ কমিশনার বুঝবেন, সেইভাবে তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।
২৮ অক্টোবর নিয়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আছে। এদিন কি আপনারা প্রবেশ বন্ধ করে দেবেন, জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, “ঢাকার প্রবেশপথ আমরা কেন বন্ধ করব? ব্যবসায়িক, চাকরিসহ বিভিন্ন কাজে লোকজন ঢাকায় আসেন। পদ্মাসেতু হওয়ার কারণে অফিস-আদালত করা লোকজনও ঢাকায় আসেন। কাজেই ঢাকার পথ কেন আমরা বন্ধ করব? ঢাকার পথ আমরা বন্ধ করব না। তারা যদি শান্তিপূর্ণভাবে নির্দিষ্ট স্থানে সমাবেশ করে চলে যায়, আমাদের কিছু করার নেই। আমরা সেখানে কোনো বাধা দেব না”।
সরকারের পতনের দাবিতে ২৮ অক্টেবর সমাবেশ হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার শঙ্কা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, দেখেন, সরকার এমন কিছু না, যে ধাক্কা দিলেই পড়ে যাবে। এটা গণতান্ত্রিক সরকার, কাজেই মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তন হবে। ধাক্কা দিলে সরকার পড়ে যাবে এমন কথা সংবিধানে লেখা নেই।
মহান বিজয় দিবসে নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিবরণ দিতে গিয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, মহান বিজয় দিবসে ঢাকাসহ সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে। সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ সারা দেশে প্রয়োজনীয় স্থানে দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে ফায়ার সার্ভিস টিম থাকবে। সারা দেশে জেলাখানা, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। শহীদ মুক্তিযোদ্ধারে বিদেহি আত্মার মাগফিরাত ও জাতীয় শান্তি-সমৃদ্ধি কামনায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। এ ছাড়াও ট্রাফিক শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সামনে নির্বাচন থাকায় জাতীয় মূল অনুষ্ঠানটি হয়তো প্যারেড স্কোয়ারে হবে না। এটা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে যে সিদ্ধান্তটি এসেছে, সেটি জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি চিন্তা করেন যে, প্যারেড হবে, তাহলে হবে। এটা পরিবর্তন হবে কি না; আমি জানি না। তবে এটির সঠিক ব্যাখ্যা আমাদের কাছে নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পর দেশটির দূতাবাস একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে দূতাবাস বলেছে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এ নিয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমি পরে সুন্দরভাবে পরিষ্কার করে দিয়েছি। তার সঙ্গে চারটি বিষয় নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। ২৮ অক্টোবরে বিরোধী দল বিএনপি যে লাখো মানুষের সমাবেশ করবে, সেটা নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা বলেছি, এটি গণতান্ত্রিক দেশ, এখানে যে কেউ সমাবেশ করতে পারে, যে কেউ তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে পারে, কিন্তু সেটার একটি নির্দিষ্ট সীমারেখা আছে। জনগণের সম্পত্তি, যানবাহন কিংবা বাধাসৃষ্টি না করতে তাদের প্রতি অনুরোধ করব।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, দূর্গাপূজা নিয়ে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত দূর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভবে হচ্ছে, শান্তি বজায় থাকবে বলে প্রত্যাশা করছি। রোহিঙ্গা বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে। তারা বলেছে, কিছু রোহিঙ্গা আমরা নিতে চাই। জবাবে বলেছি, আপনারা যা নিতে চান, তা তো খুবই অল্পসংখ্যক। বেশি করে নিয়ে গেলে আমরাও একটু স্বস্তি পেতাম। তারা বলেছে ছোট ছোট সংখ্যায় আমরা শুরু করতে চাই।