বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে যদি পদ্মা সেতু করত তাহলে দুই যুগেও কাজ শেষ হত না বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

Date:

Share post:

নিউজ ডেস্ক :সোমবার বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “বিশ্ব ব্যাংক যদি সেতুতে অর্থায়ন করত তাহলে তাদের মন মতো কাজ করতে হত।

“ডিজাইন পরিবর্তন, টেকনিক্যাল সমস্যা, এখানে এই সমস্যা সেখানে সেই সমস্যা বলে তাদের মতামত আমাদের উপরে চাপিয়ে দিত। না করলে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য করত। এতে করে অনেক সময় অপচয় হত।

“আমরা এমন ফাইন সিমেন্ট আনছি… আমি হ্যামার আনছি ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে লেটেস্ট, নাম্বার ওয়ান হ্যামার, এটা সে বলত যে এটার দরকার নাই… আমি তো ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, জাইকা, সবার সাথে মিটিং করি।”

বিদেশি এসব সংস্থার প্রকল্পের উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, “তাদের প্রজেক্টও আছে এখানে। কথায় কথায় তাদের সম্মতি নিতে হবে। এটা কেন করলাম, ওটা কেন করলাম…

“এখন ব্রিজটা করা হইছে, নিরাপদ ব্রিজ হইছে, এবং এটা আমাদের যত ডিমান্ড আছে, সবটা ফুলফিল করছে। রেল এবং সেতু।”

পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংক বড় ধরণের শিক্ষা নিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পদ্মা সেতু থেকে বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন প্রত্যাহার করায় তারা কী শিক্ষা নিল? তারা অর্থায়ন না করায় আমাদের স্বপ্নের সেতু দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছে।

“পদ্মাব্রিজের… টাকা উইথড্র করার পরে… হোয়াট লেসন হ্যাভ বিন এসেমিনেটেড ফর দ্যা ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টনার? পদ্মা ব্রিজ হইছে, তারা ফান্ডিং করছে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

“সেটা বড় কথা না। বড় কথা ছিল যে, চ্যালেঞ্জটা সবচেয়ে বড় ছিল যে, টেকনিক্যাল এনগেজমেন্ট, টেকনিশিয়ানদের এনগেজমেন্ট… এখানে অ্যাকোমোডেট করে এরকম একটা চ্যালেঞ্জিং কাজ করা।”

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্পে যে সকল দেশ ও সংস্থা অর্থায়ন করে থাকে তাদেরকে আমরা দাতা দেশ বা সংস্থা বলে থাকি। এটি ঠিক নয়। এসব দেশ ও সংস্থা লোন দেন, দান করেন না। এটি ফেরত যোগ্য।

“তাই তারা দাতা নয় বরং উন্নয়ন সহযোগী। আর্থিক প্রতিষ্ঠান চলে লোন দিয়ে।”

এক সময় খাদ্য ঘাটতির উল্লেখ করে ৬০ শতাংশেরও বেশি খাদ্য আমদানি করতে হত জানিয়ে তিনি বলেন, “এটার জন্য আমাদেরকে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং বিভিন্ন ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (লোন দিত)….

“আমরা দাতা বলি না, কারণ কেউ আমাদের দান করে না, আমরা কারোর থেকে দান নেই না… সে আমাদেরকে লোন দেয়,  আর লোন না দিলে তার ব্যাংক চলবে না, তার প্রতিষ্ঠান চলবে না, কেউ আমাদের এমনে এমনে দেয় না…”

দেশ এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে রুপান্তরিত হবে।

“বর্তমান দেশের মাথাপিছু আয়ের ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের আগেই দেশ কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।

‘বাংলাদেশের ৫০ সাফল্য সম্ভাবনা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নিজের এ  বইটি রচনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং প্রকাশনা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ড. দেলোয়ার হোসেন, এ বি ব্যাংক লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আফজাল বক্তব্য রাখেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Related articles

আবারো এস আলমে আগুন 

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকায় এস আলম গ্রুপের চিনির গুদামের পর এবার তেলের মিলে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিটের...

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার চেষ্টার সময় গুলি বিনিময়

সময় ডেস্ক সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযান চালিয়েছে অন্য একটি জাহাজ। দুই...

শেষ ম্যাচে ভুটানকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

সময় স্পোর্টস ডেস্ক সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল আগেই নিশ্চিত করেছিলো বাংলাদেশের মেয়েরা। ১০ মার্চ ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে মাঠে...

নারী দিবসে নারী কর্মীদের সম্মান জানিয়ে এবারই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করছেন নারী কর্মীরা

সময় ডেস্ক আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পরিচালনা করেছেন নারীরা। রাজধানীর শাহজালাল...